বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

করোনা বায়ুবাহিত, আবদ্ধ জায়গায় সংক্রমণ বেশি: গবেষণা

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ১৭ এপ্রিল, ২০২১ ০০:৪৯

চিকিৎসাবিষয়ক আন্তর্জাতিক প্রভাবশালী সাময়িকী দ্য ল্যানসেটে বৃহস্পতিবার গবেষণা নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণার নেতৃত্ব দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অফ অক্সফোর্ডের প্রাইমারি কেয়ার হেলথ সায়েন্সেস বিভাগের অধ্যাপক ট্রিস গ্রিনহালজ।

কোভিড ১৯ এর জন্য দায়ী সার্স কোভ ২ প্রধানত বাতাসের মাধ্যমে ছড়াচ্ছে বলে উঠে এসেছে এক গবেষণায়। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার ছয় বিশেষজ্ঞ এই গবেষণার ভিত্তিতে বলছেন, করোনাভাইরাস বায়ুবাহিত হওয়ার কারণেই প্রচলিত প্রতিরোধ ব্যবস্থাগুলো মানুষকে রক্ষা করতে পারছে না।

চিকিৎসাবিষয়ক প্রভাবশালী আন্তর্জাতিক সাময়িকী দ্য ল্যানসেটে বৃহস্পতিবার গবেষণা নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছে। গবেষক দলটির নেতৃত্ব দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অফ অক্সফোর্ডের প্রাইমারি কেয়ার হেলথ সায়েন্সেস বিভাগের অধ্যাপক ট্রিস গ্রিনহালজ।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম কোভিড ১৯ সংক্রমণ ধরা পরে। এর কয়েক মাসের মধ্যে মহামারি ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে। বাংলাদেশেও কোভিড ১৯ সংক্রমণ প্রথম শনাক্ত হয়ে গত বছরের ৮ মার্চ।

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা শুরু থেকেই বলছে, করোনাভাইরাস মূলত সংক্রমিত ব্যক্তির হাঁচি, কাশির মাধ্যমে নিকটজনের কাছে ছড়ায়। এজন্য, হাঁচি-কাশি আক্রান্তদের কাছ থেকে অন্তত ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখা, সাবান দিয়ে বারবার হাত ধোয়া, আক্রান্তদের চিহ্নিত করে আইসোলেশনসহ বেশকিছু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর জোর দিচ্ছে সংস্থাটি। এছাড়া, কোভিড ১৯ সংক্রমণের মাত্রা কমাতে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে লকডাউনের কৌশলও নেয়া হচ্ছে।

তবে ট্রিস গ্রিনহালজের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার ছয় বিশেষজ্ঞ অবিলম্বে করোনাভাইরাস মোকাবিলার প্রচলিত পদ্ধতি ঢেলে সাজাতে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন

গবেষক দলের সদস্য যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ কলোরাডো বোল্ডারের ডিপার্টমেন্ট অফ কেমেস্ট্রি অ্যান্ড বায়োকেমেস্ট্রির অধ্যাপক হোসে লুইস জিমেনেজ বলেন, ‘বাতাসের মাধ্যমেও করোনাভাইরাস ছড়ানোর প্রমাণ আমাদের চমকে দিয়েছে। আমরা আরও প্রমাণ পেয়েছি, বড় ড্রপলেটের মাধ্যমে সংক্রমণ বলতে গেলে একদম নেই। ’

তিনি বলেন, ‘বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা এবং অন্য জনস্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের উচিত নতুন বৈজ্ঞানিক প্রমাণকে গ্রহণ করা, আর সেটা ঘটলে বাতাসের মাধ্যমে ভাইরাস সংক্রমণ কমিয়ে আনার উপায়ের দিকে সবাই মনোযোগ দিতে পারবে।’

গবেষক দলটি তাদের দাবির সপক্ষে ১০টি সুনির্দিষ্ট প্রমাণ উপস্থাপন করেছে। এর মধ্যে প্রথমেই রয়েছে গত বছরের মার্চে ওয়াশিংটনের একটি চার্চে ভয়ঙ্কর সংক্রমণের ঘটনা, যেখানে একজনের থেকেই ৫৩ জন সংক্রমিত হয়েছিলেন। ওই ঘটনায় দীর্ঘ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সংক্রমিত মূল ব্যক্তির কাছাকাছি না থেকেও বাকিরা কোভিড ১৯ সংক্রমিত হয়েছিলেন। সেখানে বদ্ধ পরিবেশে বাতাসের মাধ্যমে করোনা ছড়িয়েছিল বলে ল্যানসেটে প্রকাশিত গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে।

ট্রিস গ্রিনহালজের দলটি বলছে, উন্মুক্ত পরিবেশের চেয়ে আবদ্ধ জায়গায় করোনাভাইরাস ছড়ানোর মাত্রা অনেক বেশি। আবদ্ধ জায়গায় বাতাস চলাচলের সুযোগ বাড়ানোর মাধ্যমে এই সংক্রমণ অনেকটা কমিয়ে আনা সম্ভব।

গবেষণা নিবন্ধে বলা হয়েছে, কোভিডের যত সংক্রমণ, তার প্রায় ৪০ শতাংশই ঘটছে উপসর্গহীন আক্রান্তদের মাধ্যমে। এই উপসর্গবিহীন আক্রান্তদের হাঁচি-কাশি নেই, এটাও ভাইরাসের বায়ুবাহী সংক্রমণের বিষয়টিকে সমর্থন করে।

গবেষণা প্রতিবেদনে হোটেলে পাশাপাশি কক্ষে অবস্থানকারী ব্যক্তিদের সংক্রমিত হওয়ার উদাহরণ দেয়া হয়েছে, যারা কখনওই একে অপরের মুখোমুখি হননি বা সংস্পর্শে আসেননি।

এর পাশাপাশি গবেষক দল বলছে, তারা ড্রপলেটের মাধ্যমে ভাইরাস ছড়ানোর সামান্য কিছু প্রমাণ পেয়েছেন, গবেষণার বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এভাবে কোভিড ১৯ সংক্রমণের প্রমাণ মেলেনি।

গবেষক দলের প্রধান ট্রিস গ্রিনহালজ বলেন, ‘আমরা তরলের গতিশীলতা এবং সক্রিয় ভাইরাসের বিচ্ছিন্নতার মতো অত্যন্ত জটিল বিষয় সংক্রান্ত নথিপত্রের ব্যাখ্যা করতে সক্ষম হয়েছি। কিছু ক্ষেত্রে আমাদের দুর্বলতা থাকলেও সামগ্রিকভাবে বায়ুবাহিত সংক্রমণের প্রচুর ও শক্ত প্রমাণ পাওয়া গেছে।’

বায়ুবাহিত এই সংক্রমণ থেকে মানুষকে রক্ষার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আর দেরি করা ঠিক হবে না বলেও মন্তব্য করেন গ্রিনহালজ।

এ বিভাগের আরো খবর