বাংলাদেশকে করোনার টিকা দিতে রাজি হয়েছে রাশিয়া। তবে উৎপাদনক্ষমতা কম হওয়ায় তারা রপ্তানি না করে প্রযুক্তি দেয়ার প্রস্তাব করেছে। বলেছে, বাংলাদেশ যেন এই টিকা বানিয়ে নেয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন শুক্রবার নিউজবাংলাকে এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘এখন আমরা রাশিয়ার কাছে টিকা চেয়েছি। দ্রুত সাড়াও পেয়েছি। কিন্তু তাদের প্রডাকশন ক্যাপাসিটি কম থাকায় তারা আমাদের সহউৎপাদক হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে।
‘তারা বলেছে, আমরা তোমাদের মেশিনারিজ দেব, প্রযুক্তি দেব। তোমরা তোমাদের দেশে বানিয়ে নাও। এখন সেসব নিয়ে আলোচনা চলছে।’
বাংলাদেশ ওষুধ রপ্তানিকারক দেশ হলেও টিকা উৎপাদন হয় না এখানে। যদিও সম্প্রতি বেশ কিছু কোম্পানি নিজেদের সক্ষমতা বাড়িয়েছে।
গত ১৮ ডিসেম্বরে ঔষধ প্রশাসনের মহাপরিচালক মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে দেশে টিকা উৎপাদনের বিষয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘বিশ্বের যে সব দেশ করোনাভাইরাসের টিকা তৈরি করেছে, তাদের কাছ থেকে টেকনোলজি এনে দেশেই উৎপাদন করা হবে। এ বিষয়ে কয়েকটি দেশের কোম্পানির সঙ্গে কথা চলছে।’
বাংলাদেশের সক্ষমতার অভাব নেই দাবি করে মাহবুবুর বলেন, ‘দেশের বেশ কয়েকটি বেসরকারি ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানির করোনা টিকা তৈরির সক্ষমতা আছে। টেকনোলজি ট্রান্সফার করা হলে দেশেই টিকা উৎপাদনের কাজ শুরু হবে।’
টিকা স্বল্পতায় বাংলাদেশ
বাংলাদেশ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কিনতে চুক্তি করেছে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে। ৩ কোটি ৪০ লাখ টিকার মধ্যে ৭০ লাখ দেয়ার পর আর টিকা দিতে পারছে না তারা, যদিও দেয়ার কথা ছিল মাসে ৫০ লাখ করে। এর বাইরে ভারত সরকার দুই ধাপে আরও ৩২ লাখ টিকা দিয়েছে উপহার হিসেবে।
টিকা স্বল্পতার কারণে প্রথম ডোজে যাদেরকে টিকা দেয়া হয়েছে তাদের সবাইকে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া যাবে কি না তা নিয়েই আছে অনিশ্চয়তা।
কারণ, ৬০ লাখেরও বেশি মানুষকে প্রথম ডোজ দেয়ার পর হাতে ৪২ লাখ টিকা নিয়ে শুরু হয়েছে দ্বিতীয় ডোজ। আর এখনও প্রথম ডোজ দেয়া হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে টিকার জন্য চীন ও রাশিয়ার দ্বারস্থ হয়েছে বাংলাদেশ।
চীনের সিনোভ্যাক টিকা পাকিস্তান, তুরস্ক, আর্জেন্টিনাসহ বিভিন্ন দেশ নিয়েছে। তবে খুব বেশি দেশ এই টিকা নেয়নি।
সবার আগে টিকা উৎপাদনের ঘোষণা দিয়েছিল রাশিয়া। তাদের স্পুৎনিক ফাইভ টিকার কার্যকারিতা নিয়ে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা প্রশ্ন তুলেছে। যদিও রাশিয়া ছাড়াও দুই একটি দেশে এই টিকা পাঠানো হয়েছে।
সিরাম ইনস্টিটিউট টিকা দিতে না পারার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভারতের নিজস্ব চাহিদা ও আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদার সিরিয়াল অনেক। তাই তাদের সরবরাহ ব্যবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে। তারা নানা জায়গায় কমিটমেন্ট করেছে. কিন্তু দিতে পারছে না।
‘অন্যদিকে এক সময় চীন আমাদের টিকা দিতে অনেক তদবির করেছিল। আমরা তখন বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদনের কথা বলেছিলাম। এবার আমরা যখন নিজেরা টিকা চাইলাম, তখন তাদের সাড়া নেই।’