করোনাভাইরাসের টিকা নিতে জনগণকে আগ্রহী করতে ডিম, আইসক্রিমসহ বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য দিচ্ছে চীন।
দেশটিতে ষাটোর্ধ্ব কেউ টিকা নিলেই হাতে ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে দুই ডজন করে ডিম।
এবিসি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, মহামারি নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘদিন ধরে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে চীন। এ কারণে বাড়তি সতর্কতায় আগ্রহ হারাচ্ছে মানুষ। তারা নিতে চাইছে না টিকা।
এ মনোভাবের কারণে দেশটিতে শতভাগ নাগরিককে দ্রুততম সময়ে টিকার আওতায় আনার প্রক্রিয়াও দীর্ঘায়িত হচ্ছে।
এ অবস্থায় মানুষকে টিকা নিতে নানাভাবে প্রলুব্ধ করছে দেশটির সরকার। এ তালিকায় সবশেষ সংযোজন হলো টিকা নেয়ার বদলে বিনা মূল্যে ভোগ্যপণ্য প্রদান।
টিকা নিলে কেন্দ্র থেকেই গ্রহীতাদের দেয়া হচ্ছে মুদি দোকানের কুপন, মূল্যছাড়ের রশিদ। এগুলোর মাধ্যমেই পছন্দের দোকান থেকে নিত্যপণ্য, এমনকি পোশাক কেনারও সুযোগ রয়েছে।
টিকাগ্রহীতাদের কিছু দোকানে বাক্সভর্তি সবজি দেয়া হচ্ছে ১ ডলারে। বেইজিংয়ে টিকা নিলেই সঙ্গে সঙ্গে একটি আইসক্রিমের মূল্যে ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে দুটি আইসক্রিম।
একটি রেস্তোরাঁ আবার টিকাগ্রহীতাদের বিনা মূল্যে চিকেন উইংস, ডাম্পলিংসহ হরেক রকম সুস্বাদু খাবার ধরিয়ে দিচ্ছে। অনেক প্রতিষ্ঠান দিচ্ছে নগদ অর্থসহ নানা সুবিধা।
টিকা গ্রহণে এভাবে মানুষের উৎসাহ বাড়াতে গত সপ্তাহে স্থানীয় মুদি দোকানগুলোর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ শুরু করে বেইজিংয়ের দাজিং জেলা প্রশাসন। প্রায় চার কোটি ডলারের কুপন দেয়া হয় দোকানমালিকদের।
কৌশলে কাজও হয়েছে বেশ। এরই মধ্যে জেলাটির ৭৩ শতাংশ বাসিন্দা নিয়েছেন টিকা।
টিকা নেয়ার পরিসংখ্যান
চীনে টিকা কার্যক্রম শুরুর প্রথম দিকে গতি ধীর থাকলেও এখন তা বেড়েছে। শুধু ২৬ মার্চ ৬১ লাখ মানুষ টিকা নেন দেশটিতে।
১৪০ কোটি জনসংখ্যার দেশ চীন জুনের মধ্যে ৪০ শতাংশ অর্থাৎ ৫৬ কোটি মানুষকে টিকার আওতায় আনতে চায়।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম প্রাদুর্ভাব হয় নোভেল করোনাভাইরাসের। পরের কয়েক মাসে সারা পৃথিবীতে ছোঁয়াচে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে।
বৈশ্বিক মহামারির এ পর্যায়ে বিভিন্ন দেশ ফের মৃত্যুপুরীতে রূপ নিলেও এক বছর ধরে কঠোর বিধিনিষেধের মাধ্যমে ভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে রেখেছে চীন।
দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় প্রাণহানি সাড়ে তিন হাজারের কম, আক্রান্ত এক লাখ ৪১ হাজার মানুষ।
অন্যদিকে সারা বিশ্বে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৩০ লাখ ছাড়িয়েছে; আক্রান্ত প্রায় ১৪ কোটি মানুষ।