বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সবচেয়ে বেশি রোগীর জেলায় নেই করোনা পরীক্ষার ল্যাব

  •    
  • ১৫ এপ্রিল, ২০২১ ০৮:৪০

এ জেলায় করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ১৩ হাজার ৯৫৪টির বেশি নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকা ও সিলেটে পাঠানো হয়। এর মধ্যে পজিটিভ এসেছে ২ হাজার ১৮৫টি এবং ১৩০ জনের দ্বিতীয় দফা টেস্টেও পজিটিভ এসেছে।

জেলা বিবেচনায় সারা দেশে সবচেয়ে বেশি শনাক্ত করোনা রোগী রয়েছে মৌলভীবাজারে। অথচ প্রবাসী-অধ্যুষিত এই জেলায় নমুনা পরীক্ষার কোনো ল্যাব নেই। এ কারণে ঢাকা কিংবা সিলেটে নমুনা পাঠানো হয়। ফল পেতে সময় লাগে। আর এ কারণে সংক্রমণ বেড়েই চলেছে।

এ জেলায় সংক্রমণের হার চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৫ শতাংশ। মার্চের ২০ দিনে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২২ দশমিক ২ শতাংশে। চলতি মাসেও সংক্রমণের হার বেড়েই চলেছে।

রোগী শনাক্তের গুরুত্ব বিবেচনা করে গত বছর মৌলভীবাজারের ২৫০ শয্যার হাসপাতালে পিসিআর ল্যাব স্থাপনের জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী বরাবর চাহিদাপত্র (ডিও লেটার) দিয়েছিলেন মৌলভীবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। আজও স্থাপন করা হয়নি ল্যাব।

শহরের বাসিন্দা সৈয়দ উমেদ আলী নিউজবাংলাকে জানান, করোনার অতিমারিকালে অনেকেই বিদেশ থেকে দেশে ফিরে এসেছেন। তারা কোয়ারেন্টিন পালন না করে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন। এতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে।

মৌলভীবাজার প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আব্দুল হামিদ মাহবুব বলেন, শিগগিরই জেলায় পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা দরকার। কারণ, যারা নমুনা দিচ্ছেন, তাদের রিপোর্ট পেতে কয়েক দিন লেগে যায়। পিসিআর ল্যাব থাকলে দ্রুত রিপোর্ট জানা যেত। তাতে আক্রান্ত লোকজন সতর্ক চলাফেরা করতেন। সংক্রমণও কম হতো।

এ পর্যন্ত জেলায় সরকারি হিসাবমতে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আরও বেশ কয়েকজন এ জেলার বাইরে চিকিৎসা নিয়ে গিয়ে মারা গেছেন।

পরীক্ষার ল্যাব না থাকায় নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকা ও সিলেটে পাঠাতে হয়। সেখান থেকে ফলাফল আসতে পাঁচ থেকে সাত দিন লেগে যায়। দূরের ল্যাবে নমুনা পাঠানোর কারণে বিভিন্ন সময় নষ্ট হয়েছে ৬২৫টি নমুনা।

জেলায় ২১ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত ৪১৪টি নমুনা পরীক্ষায় পজিটিভ এসেছে ৯২টি, ২২ দশমিক ২ শতাংশ। এদিকে ১০ এপ্রিলে ৯৬টিতে ২৫টি, ২৫ শতাংশ। ১১ এপ্রিল ৫২টিতে ১৩টি, ২৫ শতাংশ। ১২ এপ্রিল ৬১টিতে ১৪টি, ২৩ শতাংশ। ১৩ এপ্রিল ১১৭টি পরীক্ষায় ২৩টি পজিটিভ এসেছে, শনাক্তের হার ২৩।

সিভিল সার্জন চৌধুরী জালাল উদ্দিন মোর্শেদ নিউজবাংলাকে জানান, করোনার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ১৩ হাজার ৯৫৪টির বেশি নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকা ও সিলেটে পাঠানো হয়। এর মধ্যে পজিটিভ এসেছে ২ হাজার ১৮৫টি এবং ১৩০ জনের দ্বিতীয় দফা টেস্টেও পজিটিভ এসেছেন।

এ জেলায় করোনা টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন প্রায় ৭৯ হাজার মানুষ। এর মধ্যে প্রথম ডোজ টিকার নিয়েছেন ৬৫ হাজার ৬৩৬ জন। দ্বিতীয় ধাপে টিকা নিয়েছেন ৯ হাজার ১৯৪ জন। জেলায় মোট টিকা এসেছে ১১ হাজার ৪৮৮ ভায়াল। মজুত আছে ৩ হাজার ৯৭৩ ভায়াল। প্রতি ভায়ালে ১০ জনকে টিকা দেয়া যায়।

জেলায় করোনা রোগীর চিকিৎসার জন্য জেলা সদর হাসপাতালসহ ছয়টি উপজেলা হাসপাতালে ১৪১টি বেড বরাদ্দ রয়েছে। এর মধ্যে ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে ৫টি আইসিইউ বেড ও ৫০টি সাধারণ বেড আছে। এ ছাড়া রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩০টি, কুলাউড়ায় ৫টি, জুড়ীতে ১৮টি, বড়লেখায় ৫টি, কমলগঞ্জে ২০টি ও শ্রীমঙ্গলে ৮টি বেড রয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালের আইসোলেশনে ৬ জন রোগী চিকিৎসাধীন।

সিভিল সার্জন চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ জানান, পিসিআর ল্যাব স্থাপনের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে সাবেক সিভিল সার্জন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বন ও পরিবেশমন্ত্রীর ডিও লেটার পাঠিয়েছিলেন। তবে এখনও সিদ্ধান্ত আসেনি। সদর হাসপাতালে যক্ষ্মা রোগ পরীক্ষার যে জিন এক্সপার্ট মেশিন রয়েছে, তা দিয়ে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে ২৫০ শয্যার হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক পার্থ সারথী দত্ত কানুনগো জানান, সদর হাসপাতালে এই মুহূর্তে অ্যান্টিজেন টেস্ট চালু আছে। কয়েকটি উপসর্গ থাকলেই এ ধরনের পরীক্ষা করা হয়। পজিটিভ থাকলে জানানো হয়। আর অনেক ক্ষেত্রে নেগেটিভ রিপোর্টগুলো অধিক নিশ্চয়তার জন্য আরটিপিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়।

তিনি আরও বলেন, যক্ষ্মা রোগ নির্ণয়ের জন্য জিন এক্সপার্ট মেশিন এখন প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও রয়েছে। তবে সেটাতে পরীক্ষা করতে হলে আলাদা করে ট্রেনিং করাতে হবে। এ জন্য আলাদা দামি কিটও প্রয়োজন। তা ছাড়া সারা দিনে আটটির বেশি টেস্ট করা সম্ভব নয়।

এ বিভাগের আরো খবর