করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সরকার ১৪ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। এর মধ্যে অতি জরুরি ছাড়া যারা ঘর থেকে বের হবেন, তাদের নিতে হবে পুলিশের মুভমেন্ট পাস।
টিকা নেয়ার জন্য মুভমেন্ট পাসের প্রয়োজন হবে না। টিকা কার্ড নিয়ে এসএমএস পাওয়া নির্ধারিত কেন্দ্রে যেতে পারবেন টিকা গ্রহণকারীরা। তবে বুধবার বাংলা নববর্ষে সরকারি ছুটি থাকায় টিকাদান বন্ধ রয়েছে।
কঠোর বিধিনিষেধ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, টিকা কার্ড দেখিয়ে টিকা গ্রহণের জন্য যাতায়াত করা যাবে। স্বাস্থ্যসেবা, করোনার টিকাদান ও গ্রহণকারীর যানবাহন এ নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে।
মুভমেন্ট পাস কাদের নিতে হবে, এ বিষয়ে পুলিশের আইজিপি বেনজীর আহমেদ সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘কিছু অত্যাবশ্যকীয় কাজে মানুষজনের বের হওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। কাঁচাবাজারে যেতে হতে পারে, ওষুধ আনতে বের হতে পারেন, টিকার ডেট আছে, তা নিতে বের হতে পারেন।
‘এসব কাজে বের হলে ওয়েবসাইট থেকে মুভমেন্ট পাস নিতে হবে। এমনকি অ্যাম্বুলেন্সে রোগী যাওয়ার প্রয়োজন হলেও মুভমেন্ট পাস লাগবে।’
গুরুতর অসুস্থ রোগীর ক্ষেত্রে পাস গ্রহণে সময় ব্যয় করার সুযোগ না-ও থাকতে পারে– এমন পরিস্থিতিতে কী হবে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘মুভমেন্ট পাস গ্রহণ করার জন্য অল্প সময়ের প্রয়োজন হবে। এটা থাকলে কোথাও পুলিশ আটকালে পাসটি দেখিয়ে সহজেই তার গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন।
‘পাসটি ভেরিফাই করতে ৩০ সেকেন্ডের মতো সময় ব্যয় হবে। আর একই সঙ্গে অনেক মানুষ ওয়েবসাইটে ক্লিক করায় এই মুহূর্তে পাস নিতে কিছুটা সময় লাগছে। সমস্যাটি দ্রুত সমাধানে কাজ চলছে।’
টিকাদানের বিষয়ে বিএসএমএমইউ টিকাদান কেন্দ্রের সমন্বয়কারী ডা. খোরশেদ আলম নিউজবাংলাকে বলেন, সরকারি ছুটির দিন টিকাদান কেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে আগের নিয়মে চলবে টিকাদান। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে আগেই জাননো হয়েছে, রমজান ও লকডাউনে চলবে টিকাদান। টিকা কার্ড দেখিয়ে টিকা নেয়া যাবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মহাপরিচালক আবুল বাশার খুরশীদ আলম জানান, এক সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে টিকা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে চায় সরকার।
তিনি বলেন, ‘রমজান ও লকডাউনের মধ্যেই আমরা টিকা কার্যক্রম চালাব। টিকাগ্রহীতাদের অবশ্যই টিকা কার্ড সঙ্গে নিয়ে আসতে হবে। টিকা কার্ড দেখালে তারা রিকশা কিংবা ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করতে পারবেন।’
১৩ দফা বিধিনিষেধ ঘোষণার পর তা কার্যকর করার জন্য সরকারের উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা বলেন, করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধ করাতে যে বিধিনিষেধ ঘোষণা করা হয়েছে, সেখানেই কীভাবে বাস্তবায়ন হবে তার ইঙ্গিত রয়েছে।
তিনি জানান, জেলা ও মাঠ প্রশাসন এবং পুলিশ এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করবে। স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক তার পক্ষে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয় ক্ষমতা প্রদান করবেন। মূলত জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা হবে।
তা ছাড়া এই নির্দেশনা কঠোরভাবে বাস্তবায়নের জন্য মাঠে থাকবে পুলিশও। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগও পুরো বিষয়টা তদারকি করছে।
তবে বাইরে বের হওয়ার জন্য যে মুভমেন্ট পাস তা নিয়ে অনেকের মধ্যে রয়েছে ধোঁয়াশা।