করোনার নতুন স্ট্রেইন দক্ষিণ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্টে সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। এটা রোগীকে দ্রুতই দুর্বল করে দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য শারফুদ্দিন আহমেদ।
সোমবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
মার্চ থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আরও বেশি মানুষকে সংক্রমিত করছে। প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল, ইউকে স্ট্রেইন ছড়িয়েছে দেশে। পরে জানা যায়, দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেশি ছড়িয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট। এখন পর্যন্ত করোনার যেসব টিকা আবিষ্কৃত হয়েছে, তার মধ্যে বেশিরভাগই এই স্ট্রেইন প্রতিরোধ করতে পারে না।
আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট কত বেশি সংক্রমিত করে, তা তুলে ধরে অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এটা একজন থেকে তিনজন, তিনজন থেকে পাঁচ জন, পাঁচজন থেকে ২৫ জন এভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় আমাদের আরও সচেতন হতে হবে।’
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কী কী করা উচিত, সেটিও জানান শারফুদ্দিন আহমেদ। বলেন, ‘দিনে অন্তত তিনবার গরম পানির ভাপ নিতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে ও ইমিউনিটি বজায় থাকবে।
‘ভিটামিন সি ও ডি খেতে হবে। সবুজ ও হলুদ ফল খেতে হবে। রুমে এসির ব্যবহার না করাই ভালো এবং রুমের জানালা খোলা রাখতে হবে। লোক সমাগম করা যাবে না। অনেক লোক সমাগম হয়, আপাতত এ রকম অনুষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে।’
অহেতুক সরকারের সমালোচনা না করে সবাইকে সহযোগিতা করার আহ্বানও জানান উপাচার্য। বলেন, ‘করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত সাত হাজার চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১৪০ জন মারা গেছেন। তারপরও দেশের চিকিৎসক সমাজ রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদান অব্যাহত রেখেছেন।’
বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল করোনা মোকাবিলাকে প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করেছে উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, কেবিন ব্লকে কেবিনের শয্যা সংখ্যা ২০০ তে উন্নীত করা হয়েছে, আরও বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আইসিইউ বেড বৃদ্ধি করে ২০টি উন্নীত করা হয়েছে, ১০টি আইসিইউ বেড স্থাপন করা হচ্ছে। বেতার ভবনে ১০০ শয্যার নতুন করোনা ইউনিট চালু করা হয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে ৫০টি শয্যা চালু রয়েছে এবং আরও ৫০টি শয্যা চালুর কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
টিকা প্রয়োগের সর্বশেষ জানিয়ে তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের কনভেনশন সেন্টারে প্রথম ডোজের টিকা নিয়েছেন ৫২ হাজার ৭০৬ জন এবং দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিয়েছেন ৫ হাজার ৮৭২ জন।