করোনা সংক্রমণ যেভাবে বেড়ে চলেছে সে তুলনায় হাসপাতাল সুবিধা বাড়ানো সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন।
সরকার কী করেছে, তার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘ঢাকার সব হাসপাতালে বেড বাড়ানোর ব্যবস্থা করছি। আড়াই হাজার শয্যাকে পাঁচ হাজার করা হয়েছে। এর চেয়ে আর বাড়ানো সম্ভব না।
‘প্রতিদিন যদি ৪-৫ হাজার রোগী বাড়ে, তাহলে সারা শহরকে হাসপাতাল বানালেও সামাল দেয়া সম্ভব না।’
মঙ্গলবার বিকেলে মহাখালী মার্কেটে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতাল পরিদর্শনে যান মন্ত্রী। এ সময় তিনি এ কথা বলেন।
এই হাসপাতালটি এক হাজার শয্যার। এখানে ১০০টি আইসিইউ শয্যা এবং ১১২টি এইচডিইউ থাকবে। এটিই হবে করোনা চিকিৎসায় সবচেয়ে বড় হাসপাতাল।
গত বছরের মার্চে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার পর দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দুর্বলতাগুলো সামনে চলে আসে। হাসপাতালে চাহিদার তুলনায় শয্যা সংখ্যায় ঘাটতি, নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র বা আইসিইউ এর স্বল্পতার বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার পর গত এক বছরে সংকট মোকাবিলায় সরকার কী করেছে, সেই প্রশ্নও সামনে আসছে। এ বিষয় নিয়েই প্রশ্ন ছিল মন্ত্রীর কাছে।
স্বাস্থ্যবিধি মানাতে জরবদস্তি নয়
করোনার সংক্রমণ বেড়ে চলার কারণে লকডাউন দেয়ার পরও স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে সাধারণের মধ্যে অনীহা স্পষ্ট হলেও এ ক্ষেত্রে সরকার আইন প্রয়োগ করতে চায় না বলেও জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘বিধিবিধান না মানলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তবে আমরা চাই জনগণ নিজ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুক। আমরা আইন প্রয়োগ করতে চাই না।’
গত বছরের মার্চে দেশে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার পর মানুষের মধ্যে এ নিয়ে উদ্বেগ ছিল স্পষ্ট। স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে এখনকার তুলনায় সে সময় সচেতনতা বেশি ছিল।
গত নভেম্বর থেকে করোনা সংক্রমণ কমে আসতে থাকলে মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি পালনে ঢিলেমি দেখা যায়। দ্বিতীয় ঢেউয়ে করোনা আরও বেশি মানুষকে সংক্রমিত করতে থাকলেও জনগণের উদাসীনতা নিয়ে আলোচনা চলছে।
সরকার জনসমাগম কমাতে ১৮ দফা নির্দেশনা জারির পরেও কাজ না হওয়ার পর সোমবার থেকে এক সপ্তাহের জন্য লকডাউনও শুরু হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে লকডাউন চলছে, সংক্রমণ কমাতে চাইলে লকডাউনের বিধিবিধান মানতে হবে। হাসপাতালে জায়গা নেই এজন্য আমরাই দায়ী।’
সোমবার থেকে দেয়া লকডাউনে জরুরি কাজ ছাড়া জনগণ ঘরের বাইরে যেতে পারবে না বলে জানানো হয়েছিল। এটা স্পষ্ট যে, এই নির্দেশনা মানতে চাইছে না মানুষ।
এ ক্ষেত্রে সরকার কী ব্যবস্থা নেবে- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘জনগণের জন্য লকডাউন জনগণের কল্যাণে লকডাউন। আমরা চাই জনগণ নিজের স্বার্থে নির্দেশনাগুলো মেনে চলুক।’