মজুত সংকটের কারণে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকার প্রথম ডোজ দেয়া বন্ধ হচ্ছে ৫ এপ্রিল।
টিকার দ্বিতীয় ডোজ ৮ এপ্রিল থেকে দেয়া শুরু হবে বলে শনিবার জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ এবং ৫ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া লকডাউনে করণীয় নির্ধারণ নিয়ে বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এসব তথ্য নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার খুরশীদ আলম।
তিনি বলেন, ‘টিকাদান কর্মসূচি লকডাউনের মধ্যে বন্ধ রাখতে চায়। ৫ এপ্রিলের পর আর কাউকে টিকার প্রথম ডোজ দেয়া হবে না। চুক্তি অনুযায়ী ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে টিকা পাঠাতে দেরি হওয়ায় মজুতে টান পড়বে। তখন কর্মসূচি ব্যাহত হবে। সেই কারণে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
টিকার প্রথম ডোজ বন্ধের সিদ্ধান্তের কথা জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার খুরশীদ আলম
বাংলাদেশে গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে যে গণটিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে, তাতে ৫০ লাখেরও বেশি মানুষকে টিকা দেয়া হয়েছে। সরকার ভারতের সিরাম থেকে ৩ কোটি ৪০ লাখ ডোজ টিকা কিনেছে। এর মধ্যে ৭০ লাখের দেশে এসে পৌঁছেছে। আর ভারত সরকার উপহার হিসেবে দিয়েছে ২০ লাখ টিকা।
ফেব্রুয়ারিতে যাদের টিকা দেয়া হয়েছে, তাদের দ্বিতীয় ডোজ দেয়া নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয় অন্য দেশে ভারতের টিকা রপ্তানি বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্তে। এ বিষয়ে এখনও ভারত সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশকে কিছু জানায়নি। বিষয়টি গণমাধ্যমের সুবাদে জানতে পারেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার থেকে করোনার টিকা অন্যান্য দেশে রপ্তানি করেনি ভারত। তবে সিরামের লোকাল এজেন্ট বেক্সিমকোর কাছেও কোনো তথ্য নেই।
গত রোববার ব্রিটিশ দৈনিক পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ান-এর অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, সিরাম কর্তৃপক্ষ ব্রাজিল, সৌদি আরব ও মরক্কো সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দিয়েছে, ওই তিন দেশে তাদের টিকার চালান সরবরাহ দেরি হবে। এই তিন দেশ ইতিমধ্যে সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে টিকার প্রথম চালান পেয়েছে এবং দ্বিতীয় চালানের জন্য অপেক্ষা করছে।
সিরামের সঙ্গে করা চুক্তি অনুযায়ী মাসে ৫০ লাখ করে টিকা আসার কথা। তবে জানুয়ারিতে মাসে ৫০ লাখ দেয়ার পর ফেব্রুয়ারিতে আসে ২০ লাখ। মার্চের চালান এখনও আসেনি। ২৩ ফেব্রুয়ারি জানানো হয়েছিল, মার্চে টিকার এ ঘাটতি পূরণ করে দেবে সিরাম। তবে এক মাসের বেশি সময় ধরে টিকার কোনো চালান পায়নি দেশ।
টিকা সংকটের আশঙ্কায় এখন প্রথম ডোজ দেয়া বন্ধের ঘোষণা দিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।