বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

করোনায় জর্জরিত স্বাস্থ্য প্রশাসন

  •    
  • ৩ এপ্রিল, ২০২১ ১৪:৫১

গত ২০ মার্চ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. খুরশীদ আলম, লাইন ডিরেক্টর মিজানুর রহমানসহ পাঁচ থেকে সাতজন কর্মকর্তা-কর্মচারী এ ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হন। এর ১২ দিন পর আক্রান্ত হন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। একই দিন আক্রান্ত হন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান। অতিরিক্ত সচিব (বিশ্বস্বাস্থ্য অনুবিভাগ) কাজী জেবুন্নেছা বেগমেরও করোনা ধরা পড়েছে।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দায়িত্ব পালন করা স্বাস্থ্য প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ছয়জন শীর্ষ কর্মকর্তা এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে সচিবসহ অন্তত তিনজন করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা নিয়েও আক্রান্ত হয়েছেন।

স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের আক্রান্তের খবর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে।

গত ২০ মার্চ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. খুরশীদ আলম, লাইন ডিরেক্টর মিজানুর রহমানসহ পাঁচ থেকে সাতজন কর্মকর্তা-কর্মচারী এ ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হন।

এর ১২ দিন পর আক্রান্ত হয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। টিকা নেয়ার ৬৩ দিন পর তার শরীরে ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়েছে।

একই দিন করোনা আক্রান্ত হয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান রাজধানীর শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

তিনি এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো আক্রান্ত হলেন সারা বিশ্ব স্থবির করে দেয়া ভাইরাসটিতে। গত বছর জুন মাসের দিকে তিনি আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হন।

গত বছরের ১৩ জুন করোনা আক্রান্ত হয়ে তার স্ত্রী কামরুন নাহার মারা যান।আবদুল মান্নানও আক্রান্ত হয়েছেন টিকা নেয়ার পরে। গত ২৮ জানুয়ারি প্রথম ডোজের করোনা টিকা নিয়েছিলেন।একই দিন সংক্রমণ ধরা পড়ে তার একান্ত সচিব নেওয়াজ হোসেন চৌধুরী। তিনি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব হিসেবে কাজ করেন।

সচিব ও তার একান্ত সচিব আক্রান্ত হওয়ার এক দিন আগে একই মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্বস্বাস্থ্য অনুবিভাগ) কাজী জেবুন্নেছা বেগম করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর আসে। তিনি বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এমন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অনলাইনে বাসা থেকে যুক্ত হচ্ছেন।করোনা আবার ছড়িয়ে পড়ার কারণে জনসমাগম সীমিত করতে সরকার ঘোষিত ১৮ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নে স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্য বিভাগের সচিব, মহাপরিচালকসহ সকল স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, কর্মচারী কোনো ধরনের ছুটি ভোগ না করে নিয়মিত স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত থাকেন।তবে এভাবে যদি স্বাস্থ্য প্রশাসনে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকে তাহলে স্বাস্থ্য প্রশাসনের কাজে প্রভাব ফেলবে।

করোনাবিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্যরা বলছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) পরামর্শ অনুযায়ী কোনো প্রতিষ্ঠানের কারও শরীরে করোনা শনাক্ত হলে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে আলাদা করে দিতে হবে। করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে এসেছেন বা আক্রান্ত সন্দেহ করা হচ্ছে, এমন কারও সংস্পর্শে এসেছেন, এমন ব্যক্তিদের সবাইকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখতে হবে। এ ছাড়া কার্যালয়ের প্রত্যেক ব্যক্তিকে করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষার আওতায় আনতে হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে অতিরিক্ত সচিব শাহ আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় করোনা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে আসছে। করোনা নিয়ন্ত্রণে ও সামাজিক দূরুত্ব নিশ্চিতে সরকার ১৮ দফা নির্দেশনা দিয়েছে। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী ৫০ শতাংশ জনবল নিয়ে আগামী রোববার অফিস করা হবে।

করোনার মধ্যে অফিস করবেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাসের মধ্যে আমরা এক বছর অফিস করছি।’

গত বছরের মার্চে করোনা সংক্রমণ ধরার পড়ার পর জুলাই পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকে। আশঙ্কা থাকলেও শীতে সংক্রমণ ক্রমাগত কমতে থাকে। জানুয়ারির শেষ থেকে মার্চের শুরু পর্যন্ত সংক্রমণ পরীক্ষার বিপরীতে ৫ শতাংশের নিচে নেমে আসে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালা অনুযায়ী টানা দুই সপ্তাহ সংক্রমণ ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ধরা যায়।

তবে মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে সংক্রমণ আবার বাড়তে থাকে। পরীক্ষার বিপরীতে ৫ শতাংশ ছাড়িয়ে শুক্রবার উঠেছে ২৩ শতাংশ। আর করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় লকডাউনের কথাও জানিয়েছে সরকার। যদিও গত বছর সরকার এই পথে হাঁটেনি।

গত বছর করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির ২৫ জুনে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ৪৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী বর্তমানে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংবাদ দেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

সেই সময়ে বিবৃতিতে বলা হয়ছিল, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর জনসংযোগ কর্মকর্তা গত ২৭ মে থেকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। তার পূর্বে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর একান্ত সচিব করোনায় আক্রান্ত থাকাকালে আরেক দফা ১৪ দিনের হোম আইসোলেশনে থাকতে হয়েছিল স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে। তারপর স্বাস্থ্য শিক্ষা সচিব আলী নূর সপরিবারে করোনায় আক্রান্ত, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আব্দুল মান্নানের স্ত্রী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদও করোনায় আক্রান্ত হন।

যেহেতু আক্রান্ত জনসংযোগ কর্মকর্তা, সচিব, একান্ত সচিব, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সন্নিকটেই অবস্থান করেন। সুতরাং স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে ১ জুন থেকে বাসায় হোম আইসোলেশনে থাকতে হয়েছে। ’

এ বিভাগের আরো খবর