ব্রিটিশ-সুইডিশ কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকা ফার্মাসিউটিক্যালের উৎপাদিত করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকার নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। অ্যাস্ট্রাজেনেকার পরিবর্তে এখন থেকে টিকাটির নাম হবে ‘ভ্যাক্সজেভ্রিয়া’।
ইউরোপিয়ান মেডিসিন্স এজেন্সির (ইএমএ) তথ্য উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে টিকাটির নতুন নাম ঘোষণা করে সুইডেনের মেডিসিন এজেন্সি ‘লাকেমেডেলসভেরকেট’।
নাম পরিবর্তন হলেও টিকাটিতে কোনো পরিবর্তন আসছে না। অবশ্য নাম পরিবর্তন বেশ গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে ভাবছে সুইডিস মেডিসিন এজেন্সি। কেননা এর ফলে লেবেলিং ও মোড়কে পরিবর্তনসহ টিকাটির অন্যান্য বাহ্যিক পরিবর্তন আসবে।
অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার নাম পরিবর্তনে জন্য কোম্পানির পক্ষ থেকে আগেই আবেদন করা হয়েছিল। সে প্রেক্ষিতে গত ২৫ মার্চ ‘ভ্যাক্সজেভ্রিয়া’ নামে অনুমোদন দেয় ইএমএ।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভাবিত টিকাটি উৎপাদন করছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। ফার্মাসিউটিক্যাল ও বায়োটেকনোলজি কোম্পানিটি ব্রিটিশ ও সুইডেনভিত্তিক। প্রতিষ্ঠানটি ছাড়াও তাদের অনুমোদনক্রমে টিকাটি ভারতসহ বিশ্বের কয়েকটি দেশে উৎপাদিত হচ্ছে।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় টিকা উৎপাদক প্রতিষ্ঠান ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা উৎপাদন করছে ‘কোভিশিল্ড’ নামে। পাকিস্তান ছাড়া উপমহাদেশের সবগুলো দেশে এই টিকার প্রয়োগ চলছে। সিরাম থেকে তিন কোটি ডোজ কোভিশিল্ড টিকা কিনেছে বাংলাদেশ।
নাম পরিবর্তনের বিষয়ে ইমএমএ থেকে সবুজ সংকেত পাওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে কয়েকবার বৈঠকে বসে অ্যাস্ট্রাজেনেকা।
নাম পরিবর্তন নিয়ে সবুজ সংকেতের পরপরই বেলজিয়ামসহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা বয়স্কদের ক্ষেত্রে না প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়। সেই সঙ্গে এই টিকার কার্যকারিতা নিয়ে আরও বেশি তথ্য-উপাত্তের জন্য অপেক্ষায় থাকার কথা জানায় দেশগুলো।
চলতি মাসের শুরুর দিকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিয়ে আরও একটি দুঃসংবাদ আসে। টিকা নেয়ার পর কারও কারও ক্ষেত্রে রক্ত জমাটের মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা জানায় ইউরোপের কয়েকটি দেশ। এই শঙ্কায় নরওয়ে, ডেনমার্ক, ইতালিসহ কয়েকটি দেশ এই টিকা প্রয়োগ স্থগিত ঘোষণা করে।
অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দাবি ছিল টিকার সঙ্গে রক্ত জমাট বাঁধার কোনো সম্পর্ক নেই। তবে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার সঙ্গে রক্ত জমাট বাঁধার সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পাওয়ার দাবি করে ইউরোপের একদল বিজ্ঞানী। তাদের গবেষণায় রক্ত জমাট বাঁধার কারণও চিহ্নিত করা হয়।
রক্ত জমাটের শঙ্কায় এই টিকার প্রয়োগ সম্প্রতি সীমিত করেছে কানাডা ও জার্মানিও। ৫৫ বছর বয়সের কম বয়সীদের ক্ষেত্রে এই টিকা প্রয়োগ নিষিদ্ধ করেছে দেশ দুটি।