চুক্তি অনুযায়ী ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে টিকা পাঠানো নিশ্চিত করতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে দক্ষিণ ব্লকের সম্প্রসারিত ভবনের উদ্বোধনে সোমবার ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা জানান।
দেশে গণটিকাদান কর্মসূচির প্রথম ডোজের পর দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেয়া শুরু হবে আগামী ৮ এপ্রিল। নতুন চালান আসতে দেরি হলে মজুতে টান পড়বে। তখন কর্মসূচি চালানো ব্যাহত হবে।
অক্সফোর্ডের করোনার টিকা পেতে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ত্রি-পক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর। ছবি: নিউজবাংলা
এ নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মার্চে টিকার দ্বিতীয় চালান আসার কথা ছিল। তবে আসেনি। টিকার অর্ডার করা চালান আমরা পাইনি। এই বিষয়ে ভারতের সরকারপ্রধান নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আলোচনা হয়েছে।
‘এ ব্যাপারে ভারতকে ব্যবস্থা নিতে বৈঠকে অনুরোধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। যদি (টিকা) পেয়ে যাই তাহলে কর্যক্রম ব্যাহত হবে না। না হলে অন্য সোর্স খুঁজতে হবে। ডব্লিউএইচও এখন টিকা দিতে পারবে না বলে জানিয়েছে।’
ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে চলতি মাসে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার নতুন চালান না এলে টিকাদানে সংকট তৈরি হতে পারে বলে মনে করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
অধিদপ্তর জানিয়েছে, টিকাগ্রহীতাদের দ্বিতীয় ডোজের মজুত থেকে প্রথম ডোজের টিকা দেয়া হচ্ছে।
বিশ্বজুড়ে ন্যায্যতার ভিত্তিতে টিকা বিতরণে গড়ে ওঠা জোট কোভ্যাক্সের টিকা কবে নাগাদ পাওয়া যাবে সেটা নিয়েও নিশ্চিত তথ্য নেই সরকারের কাছে।
এ রকম পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী দাবি করছেন, জুলাইয়ের মধ্যে ২ কোটি মানুষকে টিকার আওতায় আনা হবে।
দেশে সবশেষ টিকার চালান এসেছে ২২ ফেব্রুয়ারি। সিরামের সঙ্গে বেক্সিমকোর মাধ্যমে হওয়া চুক্তিতে প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ টিকা আসার কথা থাকলেও সেদিন দেশে আসে ২০ লাখ ডোজ।
সংকটের কারণ দেখিয়ে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট ৩০ লাখ ডোজ কম পাঠিয়েছে। তবে ২৫ জানুয়ারি প্রথম চালানে পুরো ৫০ লাখ টিকা পাঠায় সিরাম।
ভারত থেকে করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম চালান ২১ জানুয়ারি বাংলাদেশে এসে পৌঁছায়। ছবি: নিউজবাংলা
২২ ফেব্রুয়ারির চালানে টিকা কম আসা নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বলেছিলেন, মার্চে টিকার চালানে আগের ৩০ লাখ পূরণ করে দেবে সিরাম। কিন্তু আগের ঘাটতি তো দূরের কথা, নতুন চালানও আসেনি।
মন্ত্রী সে সময় চুক্তির টিকা সঠিক সময়ে পেতে সিরাম ও স্থানীয় সাপ্লায়ারদের চাপপ্রয়োগের কথা জানান।
ভারতের পত্রপত্রিকায় বলা হয়েছে, দেশটিতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়ে যাওয়ায় দেশের অভ্যন্তরে টিকার চাহিদা বেড়েছে অনেক গুণ।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের অনলাইন সংস্করণে বলা হয়েছে, সিরাম কর্তৃপক্ষ ব্রাজিল, সৌদি আরব ও মরক্কো সরকারকে টিকা দিতে দেরি হবে বলে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে। কারণ হিসেবে ভারতে টিকার চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কথা বলেছে তারা।
এই তিন দেশ এরই মধ্যে সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে টিকার প্রথম চালান পেয়েছে এবং দ্বিতীয় চালানের জন্যে অপেক্ষা করছে। তবে বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও কিছু জানায়নি সিরাম।