বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পর্যটন এলাকা লকডাউন হতে পারে আজই

  •    
  • ২৯ মার্চ, ২০২১ ০৯:১৯

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজ সোমবারই দেশের কিছু এলাকার জন্য এ ধরনের ঘোষণা আসতে পারে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি—এসব এলাকায় যাওয়া-আসা বন্ধ করা, বিয়েশাদি অনুষ্ঠান, ওয়াজ মাহফিল, পিকনিক এগুলোও বন্ধ করা...।’

করোনাভাইরাস মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ ও সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আজ সোমবার থেকে দেশের সব পর্যটন এলাকা বা স্পটে লকডাউনের ঘোষণা আসতে পারে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র এই তথ্য জানিয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকও এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন।

তিনি জানান, ওই এলাকাগুলোতে লকডাউনের পাশাপাশি জনগণের চলাফেরা নিয়ন্ত্রণে ফের কড়াকড়ি অবস্থানে যাচ্ছে সরকার।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়তে থাকায় আমরা একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। আজ বিকেলে সেখানে একটা প্রোগ্রাম আছে। তারপরই চূড়ান্ত একটা সিদ্ধান্ত আসবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সোমবারই দেশের কিছু এলাকার জন্য এ ধরনের ঘোষণা আসতে পারে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি—এসব এলাকায় যাওয়া-আসা বন্ধ করা, বিয়েশাদি অনুষ্ঠান, ওয়াজ মাহফিল, পিকনিক এগুলোও বন্ধ করা।

‘যেখানে জনসমাগম হয় সেসব অনুষ্ঠানে বিধিনিষেধ আসতে পারে। তার মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের লকডাউন থাকতে পারে।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কিছু প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এগুলো নিয়ে রোববার আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা জারি করবেন।

১৬ মার্চ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার মো. খুরশীদ আলমের সভাপতিত্বে এক জরুরি সভায় এসব পরামর্শসহ ১২টি প্রস্তাব গৃহীত হয়।

পর্যটন এলাকা হিসেবে গত কয়েক বছরে সবচেয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সাজেক। ফাইল ছবি

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন পরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রস্তাবগুলো সভায় আলোচনা করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এ নিয়ে আজও (রোববার) আলোচনা হয়েছে।

‘এসব সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার ক্ষমতা আমাদের হাতে নেই। মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে নির্দেশনা দিলে সেগুলো আমরা বাস্তবায়ন করব।’

এই প্রস্তাবের বিষয়ে অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কিছু বিষয়ে আলোচনা করেছে নিজেদের অভ্যন্তরীণ সভায়। পরে মূল বৈঠক হয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তার মুখ্য সচিবের সঙ্গে। সেখানে বলা হয়েছে, সারা দেশ একবারে লকডাউন এখনই নয়। তবে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করার কথা বলা হয়েছে।’

অবশ্য অধিদপ্তরের করোনাবিষয়ক কারিগরি কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম মনে করেন, লকডাউনে যাওয়ার বাস্তবতা নেই বাংলাদেশে।

এই চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘১২ দফার বিষয়ে আমি জানি না। তবে করোনার ঊর্ধ্বগতি থাকলেও বাংলাদেশের মতো দেশে লকডাউনের প্রয়োজন নেই। সর্বোচ্চ আমরা মকআপ করতে পারি।’

মকআপের ব্যাখ্যায় তিনি বলন, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করে আক্রান্ত ব্যক্তিকে আইসোলেশনের ব্যবস্থা করা।

দ্বিতীয় ঢেউয়ের লক্ষণ

করোনা মোকাবিলায় প্রতিবেশী ভারতসহ বিভিন্ন দেশ লকডাউনে গেলেও বাংলাদেশ সে পথে হাঁটেনি। তবে গত বছরের মার্চে ধাপে ধাপে দুই মাসেরও বেশি সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়।

২০২০ সালের মার্চে করোনা সংক্রমণ দেখা দেয়ার পর তা নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু করে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে।

টানা দুই মাস নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকা, করোনা প্রতিরোধী গণটিকা শুরু হওয়ার পর যখন স্বস্তির আশা করা হচ্ছিল, তখন দুই সপ্তাহ ধরে আবার তা ঊর্ধ্বমুখী।

করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দিতে এখন বেড়েছে লাইন, এসবের মধ্যে তরুণদের সংখ্যাই বেশি। ফাইল ছবি

রোববার ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৪ হাজারের কাছাকাছি। গত ৯ মাসের মধ্যে এটি সবচেয়ে বেশি। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ২৪ ঘণ্টায় ৩৫ জনের মৃত্যুর তথ্য জানানো হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালা অনুযায়ী, পরীক্ষার বিবেচনায় সংক্রমণের হার টানা দুই সপ্তাহ ৫ শতাংশের নিচে নামার পর আবার দুই সপ্তাহ ৫ শতাংশের বেশি হলে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ বলা যায়। বাংলাদেশে এই পরিস্থিতি বিরাজ করলেও আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বিতীয় ঢেউয়ের কথা জানানো হয়নি। যদিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দ্বিতীয় ঢেউয়ের কিছু কিছু লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।

সারা দেশ লকডাউন নয়

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, সারা দেশে একবারে লকডাউনের চিন্তা করছে না সরকার। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কারিগরি কমিটি মনে করছে, লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় এসেছে।

মন্ত্রণালয়ে পাঠানো প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সম্ভব হলে কমপ্লিট লকডাউনে যেতে হবে। সম্ভব না হলে অর্থনৈতিক ভারসাম্য রেখে যেকোনো জনসমাগম বন্ধ করতে হবে।

পর্যটন এলাকা সেন্টমার্টিনেও ছিল করোনার মধ্যেই পর্যটকদের ভিড়। ফাইল ছবি

অধিদপ্তর বলছে, কাঁচাবাজার, গণপরিবহন, শপিং মল, মসজিদ, রাজনৈতিক সমাগম, ভোট অনুষ্ঠান, ওয়াজ মাহফিল, পবিত্র রমজান মাসের ইফতার মাহফিলের মতো অনুষ্ঠান সীমিত করতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ১২ প্রস্তাব

  • সম্ভব হলে কমপ্লিট লকডাউনে যেতে হবে, সম্ভব না হলে ইকোনমিক ব্যালান্স (অর্থনৈতিক ভারসাম্য) রেখে যেকোনো জনসমাগম বন্ধ করতে হবে।
  • কাঁচাবাজার, গণপরিবহন, শপিং মল, মসজিদ, রাজনৈতিক সমাগম, ভোট অনুষ্ঠান, ওয়াজ মাহফিল, পবিত্র রমজান মাসের ইফতার মাহফিলের মতো অনুষ্ঠান সীমিত করতে হবে।
  • শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেগুলো বন্ধ আছে, সেগুলো বন্ধ রাখতে হবে। অন্য কার্যক্রম সীমিত রাখতে হবে।
  • যেকোনো পাবলিক পরীক্ষা (বিসিএস, এসএসসি, এইচএসসি, মাদ্রাসা, দাখিলসহ অন্যান্য) বন্ধ রাখতে হবে।
  • কোভিড পজিটিভ রোগীদের আইসোলেশন জোরদার করাতে হবে।
  • যারা রোগীদের সংস্পর্শে আসবে তাদের কঠোর কোয়ারেন্টিনে রাখতে হবে।
  • বিদেশ থেকে বা প্রবাসী যারা আসবেন তাদের ১৪ দিনের কঠোর কোয়ারেন্টিনে রাখা এবং এ ব্যাপারে সামরিক বাহিনীর সহায়তা নেয়া।
  • আগামী ঈদের ছুটি কমিয়ে আনা।
  • স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে আইন প্রয়োজনে জোরদার করা।
  • বাংলাদেশের পোর্ট অব এন্ট্রিতে জনবল বাড়ানো, মনিটরিং জোরদার করা।
  • সব ধরনের সভা ভার্চুয়ালি করা।
  • পর্যটন এলাকায় চলাচল সীমিত করা।

এ বিভাগের আরো খবর