বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভারতে ‘ডবল মিউট্যান্ট’ করোনাভাইরাসের হানা!

  •    
  • ২৪ মার্চ, ২০২১ ১৯:৩৭

ভাইরাসবিজ্ঞানী ড. শাহিদ জামিল বলছেন, ‘ডবল মিউটেশন’-এর অর্থ হলো একই ভাইরাসে এক সঙ্গে দুই ধরনের বিবর্তন সংঘটিত হওয়া। ভাইরাসের বাইরের আমিষ আবরণটিতে ডবল মিউটেশন হলে তা আরও সংক্রামক হয়ে ওঠে। কারণ এর মাধ্যমে মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে সহজে ফাঁকি দিতে পারে ভাইরাসটি।

কোভিড নাইনটিনের তুলনায় ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের ৭৭১টি এবং একটি ‘ডবল মিউট্যান্ট’ করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে ভারতে। ১৮টি রাজ্য থেকে সংগৃহীত নমুনায় মিলেছে বিবর্তনের মাধ্যমে রূপ বদলানো এই ভাইরাসগুলো।

বিবিসি জানিয়েছে, ১০ হাজার ৭৮৭টি নমুনার মধ্যে ৭৩৬টি ছিল যুক্তরাজ্যে প্রাপ্ত নতুন বৈশিষ্ট্যের করোনা, ৩৪টি ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার এবং একটি ব্রাজিলের।

নতুন করে করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে ভারত সরকার। যদিও মহামারির বিস্তার বাড়তে থাকার সঙ্গে নতুন ভাইরাসের সংক্রমণ সম্পর্কিত কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত নন গবেষকেরা।

বুধবার ভারতে ৪৭ হাজার ২৬২ জন মানুষের দেহে নতুন করে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে, প্রাণ গেছে ২৭৫ জনের; চলতি বছর যা সর্বোচ্চ।

ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১০টি জাতীয় গবেষণাগার কর্তৃপক্ষ মিলে গঠন করেছে ইন্ডিয়ান সার্স-সিওভি-টু কনসোর্টিয়াম অন জিনোমিক্স (আইএনএসএসিওজি)। এই আইএনএসএসিওজি সংগৃহীত নমুনা থেকে কয়েক শ জিনোম সিকোয়েন্স করেছে করোনাভাইরাসের।

কোনো প্রাণিদেহের সামগ্রিক জেনেটিক কোড একটি সুনির্দিষ্ট ছকে আনার লক্ষ্যে যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও বিশ্লেষণ করা হয়, বিজ্ঞানের ভাষায় সেটিই জিনোম সিকোয়েন্স। ভাইরাসের জেনেটিক কোড এক ধরনের বিবরণী হিসেবে কাজ করে, যার মাধ্যমে ভাইরাস সংক্রমণের গতিপ্রকৃতি নির্ণয় করা সম্ভব।

ভাইরাসের রূপ বিবর্তন সাধারণ ঘটনা। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা খুব একটা লক্ষ্যণীয় নয় কিংবা গুরুতর রোগ সৃষ্টি ও সংক্রমণের ধরনে পরিবর্তনের কারণ হয়ে দাঁড়ায় না। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে রূপ পরিবর্তনের মাধ্যমে তা আরও সংক্রামক, এমনকি প্রাণঘাতীও হয়ে উঠতে পারে। যেমনটি দেখা গেছে যুক্তরাজ্য ও দক্ষিণ আফ্রিকায় বিবর্তিত ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের করোনাভাইরাসের মধ্যে।

এর ওপর ভারতে যোগ হয়েছে ‘ডবল মিউটেশন’-এর করোনাভাইরাস।

ভাইরাসবিজ্ঞানী ড. শাহিদ জামিল জানিয়েছেন, ‘ডবল মিউটেশন’-এর অর্থ হলো একই ভাইরাসে এক সঙ্গে দুই ধরনের বিবর্তন সংঘটিত হওয়া।

তিনি বলেন, ‘ভাইরাসের বাইরের আমিষের আবরণটিতে ডবল মিউটেশন হলে তা আরও সংক্রামক হয়ে ওঠে। কারণ এর মাধ্যমে মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে সহজে ফাঁকি দিতে পারে ভাইরাসটি।’

ভাইরাসের বাইরের এই আমিষের আবরণকে বিজ্ঞানীরা বলছেন ‘স্পাইক প্রোটিন’, যার মাধ্যমে ভাইরাসটি মানবদেহের কোষে প্রবেশ করতে পারে।

আইএনএসএসিওজি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্র থেকে সংগৃহীত নমুনা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত ডিসেম্বরের তুলনায় এখন বেশির ভাগ নমুনায় ই৪৮৪কিউ আর এল৪৫২আর মিউটেশন বেশি।

ড. শাহিদ জামিলের শঙ্কা, একটি ভাইরাসের মধ্যেই ই৪৮৪কিউ আর এল৪৫২আর মিউটেশনের ফলে সম্ভবত ভারতে করোনাভাইরাসের একটি পৃথক প্রজাতি তৈরি হতে যাচ্ছে।

কিন্তু এই রূপ বিবর্তনকে হঠাৎ করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণ হিসেবে মানতে নারাজ ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। দাবি, ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের কয়েক শ এবং একটি ‘ডবল মিউট্যান্ট’ করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব শনাক্ত হলেও এগুলো খুবই বিরল ঘটনা। তাই কিছু রাজ্যে মহামারি পরিস্থিতির অবনতি হলেও এর সঙ্গে ভাইরাসের রূপ বিবর্তনকে এখনই মেলানো যাচ্ছে না।

গত ফেব্রুয়ারি মাসে ভারতে করোনাভাইরাসের ৭ হাজার ৫৬৯টি ভিন্ন ধরনের অস্তিত্ব শনাক্তের দাবি করে হায়াদ্রাবাদভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর সেলুলার অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলজি (সিসিএমবি)।

বিশ্বের পঞ্চম দেশ হিসেবে নোভেল করোনাভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স শুরু করে ভারত।

মহামারির এক বছরে দেশটিতে করোনায় প্রাণ গেছে ১ লাখ ৬০ হাজারের বেশি মানুষের, আক্রান্ত ১ কোটি ১৭ লাখের বেশি। চলতি মাসে নতুন করে সংক্রমণ বৃদ্ধির মুখে বিভিন্ন রাজ্যে কারফিউ, আংশিক লকডাউনসহ নেয়া হচ্ছে নানা পদক্ষেপ।

এ বিভাগের আরো খবর