বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

টিকার নতুন চালান নিয়ে অনিশ্চয়তা

  •    
  • ২১ মার্চ, ২০২১ ২৩:০৪

প্রথম ডোজের টিকার পর দ্বিতীয় ডোজ দেয়া শুরু হতে যাচ্ছে ৮ এপ্রিল থেকে। টিকার নতুন চালান আসতে দেরি হলে মজুদে টান পড়বে। টিকা কর্মসূচি চালানো নিয়ে সংকট তৈরি হতে পারে।

ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে চলতি মাসে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার নতুন চালান আসা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। যদিও সরকার বলছে, ২৬ মার্চের পর টিকা আসতে পারে। তবে বিষয়টি নিয়ে শঙ্কা কাটেনি।

এদিকে প্রথম ডোজের টিকার পর দ্বিতীয় ডোজ দেয়া শুরু হতে যাচ্ছে ৮ এপ্রিল থেকে। টিকার চালান আসতে দেরি হলে মজুদে টান পড়বে। তখন নতুন টিকা প্রদান ও দ্বিতীয় ডোজের টিকা প্রদান একই সঙ্গে চালানো নিয়ে সংকট তৈরি হতে পারে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, টিকা গ্রহিতাদের দ্বিতীয় ডোজের মজুত থেকে প্রথম ডোজের টিকাদান চলছে।

বিশ্বজুড়ে ন্যায্যাতার ভিত্তিতে টিকা বিতরণে গড়ে ওঠা জোট কোভ্যাক্সের টিকা কবে নাগাদ পাওয়া যাবে সেটা নিয়েও নিশ্চিত তথ্য নেই সরকারের কাছে। এরকম পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন, জুলাইয়ের মধ্যে ২ কোটি মানুষকে টিকার আওতায় আনা হবে।

দেশে সবশেষ টিকার চালান আসে ২২ ফেব্রুয়ারি। সিরামের সঙ্গে বেক্সিমকোর মাধ্যমে হওয়া চুক্তি অনুসারে প্রতিমাসে ৫০ লাখ টিকা আসার কথা থাকলেও সেদিন দেশের ভাণ্ডারে যুক্ত হয় মাত্র ২০ লাখ ডোজ টিকা। টিকা সংকটের কারণ দেখিয়ে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট ৩০ লাখ টিকা কম পাঠায়। তবে ২৫ জানুয়ারি প্রথম চালানে ৫০ লাখ টিকা পাঠায় সিরাম।

২২ ফেব্রুয়ারির চালানে টিকা কম আসা নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ২৩ ফেব্রুয়ারি বলেছিলেন, পরের চালানে মার্চে টিকার এ ঘাটতি পূরণ করে দেবে সিরাম।

মন্ত্রী আরো বলেছিলেন, ‘এই মাসে আমাদের পাওয়ার কথা ছিল ৫০ লাখ। কিন্তু পেয়েছি ২০ লাখ। অর্থাৎ এখানে একটু ঘাটতি হয়ে গেল। এ বিষয়ে আমরা সিরমের ওপর চাপ প্রয়োগ করেছি। এখানে যারা সাপ্লায়ার আছে, তাদের ওপর আমরা চাপ প্রয়োগ করেছি যে, এটা যেন তারা তাড়াতাড়ি মেকআপ করেন।’

ভারতসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে সিরামের ওপর টিকার জন্য চাপ দেয়া হচ্ছে জানিয়ে জাহিদ মালেক আরও বলেন, ‘তারা আগামী মার্চে চালান বাড়িয়ে দেবে বলেছে। এ মাসে যা দিয়েছে, আগামী মাসে আরো বাড়িয়ে দেবে। কত বাড়িয়ে দেবে সেটা আমাদেরকে কনফার্ম করলে আমরা আপনাদেরকে জানিয়ে দিতে পারব।’

কিন্তু বাড়িয়ে দেয়া তো দূর, টিকা আসার বিষয়টিও এখন অনিশ্চিত। ভারতের পত্রপত্রিকায় বলা হয়েছে, দেশটিতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়ে যাওয়ায় দেশের অভ্যন্তরে টিকার চাহিদা বহুগুণে বেড়ে গেছে।

এয়ার ইন্ডিয়ার বিশেষ ফ্লাইটে ২২ ফেব্রুয়ারি টিকার দ্বিতীয় চালান শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। ছবি: নিউজবাংলা

রোববার ব্রিটিশ দৈনিক প্রত্রিকা দ্য গার্ডিয়ান-এর অনলাইন সংস্করণেপ্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে, সিরাম কর্তৃপক্ষ ব্রাজিল, সৌদি আরব ও মরক্কো সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দিয়েছে, ওই তিন দেশে তাদের টিকার চালান সরবরাহ দেরি হবে। এর কারণ হিসেবে ভারতের ভেতরেই টিকার চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কথা বলেছে তারা। এই তিন দেশ ইতিমধ্যে সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে টিকার প্রথম চালান পেয়েছে এবং দ্বিতীয় চালানের জন্যে অপেক্ষা করছে।

বাংলাদেশে আগামী ৮ এপ্রিল থেকে টিকা গ্রহিতাদের দ্বিতীয় ডোজ শুরুর কথা। কিন্তু চলমান সংকটের উত্তরণ না হলে ব্যাহত হতে পারে এই টিকাদান কর্মসূচি।

স্বাস্থ্যসচিব আবদুল মান্নান বলেন, ‘ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী কোভিশিল্ড টিকা আসছে দেশে। এখান থেকে তিন কোটি টিকা আসবে। ধারাবাহিকভাবেই আসছিল। তবে মার্চ মাসে আসতে একটু দেরিও হতে পারে। ২৬ মার্চ আসবে এমন আশা ব্যক্ত করি।’

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের দিন টিকা আসতে পারে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘সে দিনই হয়তো এই টিকা আসতে পারে। যদি সেদিন না আসে, তাহলে হয়তো বা এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহের দিকে আসতে পারে।’

টিকা আসা নিয়ে কোনো তথ্য নেই সিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তিকারী প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মার কাছে। বেক্সিমকো ফার্মার চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) রাব্বুর রেজা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘টিকা কবে আসবে এ বিষয়ে এই মুহূর্তে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। তথ্য পেলেই এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পারব।’

ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে ৩ কোটি ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা কিনতে গত বছর নভেম্বরে চুক্তি করে বাংলাদেশ। চুক্তির আওতায় দুই চালানে ৭০ লাখ ডোজ ইতোমধ্যে বাংলাদেশ হাতে পেয়েছে। ভারত সরকারের উপহারের ২০ লাখ ডোজ মিলে ৯০ লাখ ডোজ টিকা আসে দেশে।

রোবাবার পর্যন্ত ৪৮ লাখের বেশি মানুষকে প্রথম ডোজের টিকা দেয়া হয়েছে। দুই ডোজ হিসাবে ৯০ লাখ ডোজ টিকা দেয়া যায় ৪৫ লাখ মানুষকে। সেক্ষেত্রে এটা স্পষ্ট যে, টিকাগ্রহিতার দ্বিতীয় ডোজের মজুত ভেঙেই প্রথম ডোজের টিকা অব্যাহত আছে। সেক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়ে টিকা না এলে টিকা কর্মসূচি ব্যহত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।

এ বিভাগের আরো খবর