দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে গণটিকা প্রয়োগের ২৭ দিনে মোট টিকা নিয়েছেন ৩৯ লাখের বেশি মানুষ। এ সময়ে টিকা নিতে মোট নিবন্ধন করেছেন ৫১ লাখের বেশি মানুষ।
সোমবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় টিকা নিয়েছেন ১ লাখ ১৭ হাজার ১৪৮ জন। সব মিলিয়ে টিকা গ্রহীতার সংখ্যা ৩৯ লাখ ৬ হাজার ৫০০। এদের মধ্যে পুরুষ ২৪ লাখ ৯৩ হাজার ২১১ জন এবং নারী ১৪ লাখ ১৩ হাজার ২৮৯ জন।
এদের সঙ্গে যোগ হবে আরও ৫৬৭ জন, যাদের ২৭ ও ২৮ জানুয়ারি পরীক্ষামূলকভাবে টিকা দেয়া হয়।
উদ্বোধনের ১০ দিন পর ৭ ফেব্রুয়ারি শুরু হয় গণটিকা কার্যক্রম। প্রথম দিন ৩১ হাজার মানুষ টিকা নিলেও তিন দিনের মধ্যে টিকা গ্রহীতার সংখ্যা ২৪ ঘণ্টায় ১ লাখ ছাড়িয়ে যায়। মাঝে টিকা গ্রহীতার সংখ্যা ২ লাখও ছাড়ায়। এক দিনে সর্বোচ্চ ২ লাখ ৬২ হাজারের বেশি মানুষকে টিকা দেয়া হয়। তবে গত সপ্তাহ থেকে এ সংখ্যা কমতে শুরু করে।
সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত টিকা নিতে মোট নিবন্ধন করেছেন ৫১ লাখ ৩৬ হাজার ৪৭৪ জন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১১ জনসহ এখন পর্যন্ত যারা টিকা নিয়েছেন তাদের মধ্যে ৮৫৯ জনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তবে মাত্রা খুবই মৃদু। কারও সামান্য জ্বর কিংবা বমি হয়েছে। ঢাকার ৪৭টি এবং ঢাকার বাইরে ৯৫৫টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকা কার্যক্রম চলেছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় জেলাভিত্তিক সবচেয়ে বেশি টিকা দেয়া হয়েছে ঢাকায় ২১ হাজার ৪৭ জনকে। সবচেয়ে কম দেয়া হয়েছে খাগড়াছড়িতে ১৫০ জনকে।
২৪ ঘণ্টায় ঢাকা মহানগরে টিকা নিয়েছেন ২১ হাজার ৪৭ জন। ঢাকা বিভাগে টিকা নিয়েছেন ৩৭ হাজার ৯৬৭ জন। এ সময়ে রাজধানীতে ৭ জনের শরীরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
চট্টগ্রাম বিভাগে টিকা দেয়া হয়েছে ১৯ হাজার ৫৬৮ জনকে; কারও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
রাজশাহী বিভাগে টিকা নিয়েছেন ১২ হাজার ৮০৭ জন। এই বিভাগেও কারও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
খুলনা বিভাগে ১২ হাজার ৫২৯ জনকে টিকা দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে একজনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
বরিশালে টিকা দেয়া হয়েছে চার হাজার ৮০৬ জনকে। এই বিভাগে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার খবর নেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে।
সিলেট বিভাগে টিকা দেয়া হয়েছে তিন হাজার ৯১২ জনকে। এদের মধ্যে তিনজনের শরীরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। ময়মনসিংহ বিভাগে টিকা দেয়া হয় ৫ হাজার ২৬৬ জনকে। তাদের মধ্যে একজনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার খবর পাওয়া গেছে।
রংপুর বিভাগে টিকা নিয়েছেন ১১ হাজার ৮১৩ জন; পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি কারও।
বাংলাদেশ করোনার টিকা এনেছে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে। প্রতিষ্ঠানটি থেকে ৩ কোটি ৪০ লাখ টিকা কেনার চুক্তি হয়েছে। এরই মধ্যে এসেছে ৭০ লাখ টিকা। এর বাইরে ভারত সরকারের উপহার হিসেবে এসেছে ২০ লাখ টিকা।
বিশ্বজুড়ে করোনার টিকা বিতরণে গড়ে ওঠা আন্তর্জাতিক জোট কোভ্যাক্স থেকেও বাংলাদেশ টিকা পাবে। প্রথমে জানানো হয়েছিল, দেশে মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশ হিসেবে পৌনে ৭ কোটি টিকা পাওয়া যাবে। কিন্তু পরে জানানো হয়, জনসংখ্যার ২৭ শতাংশ হিসেবে ৮ কোটির মতো টিকা পাওয়া যাবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালা অনুযায়ী ১৮ বছরের নিচে, অন্তঃসত্ত্বা, ৮০ শতাংশের বেশি মৃত্যু ঝুঁকি আছে- এমন রোগী, অ্যালার্জি, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে টিকা দেয়া হবে না।