বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারির মধ্যেই প্রাণঘাতী ভাইরাস ইবোলায় তিন জনের মৃত্যুর পর আনুষ্ঠানিকভাবে মহামারি পরিস্থিতি ঘোষণা করেছে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গিনি।
রোববার বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
দেশটিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি আলফ্রেড জর্জ কিজারবো এএফপিকে বলেছেন, ‘আমরা পুরোপুরি সতর্ক রয়েছি। মহামারি সামাল দিতে পর্যাপ্ত টিকার জন্য উৎপাদনকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।’
এর আগে একই দিন গিনির ন্যাশনাল হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সির প্রধান সাকোবা কেইটা জানিয়েছিলেন, জানুয়ারির শেষ দিকে অসুস্থ হয়ে পড়েন এক নার্স। মারা যাওয়ার পর ১ ফেব্রুয়ারি তাকে সমাহিত করা হয়।
তিনি বলেন, ‘সৎকারে অংশ নেয়াদের আট জনের মধ্যে ইবোলার উপসর্গ দেখা দেয়। এদের মধ্যে তিন জন মারা গেছেন। চার জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এক জন পালিয়ে যাওয়ার পর তাকে ধরে এনে রাজধানী ক্রোনাকির হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
সাকোবা কেইটার মতে, এই মুহূর্তে আবারও ইবোলা মহামারির ঝুঁকিতে রয়েছে গিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী রেমি লামাহ বলেন, ‘২০১৩-২০১৬ সাল পর্যন্ত চলা মহামারির পর নতুন করে ইবোলায় মৃত্যুর ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন।’
ওই সময় তিন বছরে গিনিতে ইবোলা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ১১ হাজার ৩০০ মানুষের মৃত্যু ঘটেছিল।
মহামারি ঠেকাতে টিকার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার সহায়তা নেয়ার জন্য যোগাযোগ করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
রোববার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম ঘেব্রেয়েসেস এক টুইট বার্তায় জানান, গিনিতে নতুন করে ইবোলা শনাক্ত হওয়ার ব্যাপারে তারা জানেন। সংস্থাটির আঞ্চলিক কার্যালয় পরিস্থিতি সামাল দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও জানান তিনি।
ইবোলা নিয়ে সতর্ক অবস্থায় থাকার কথা জানিয়েছে লাইবেরিয়া এবং ডেমোক্যাটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গোও।
১৯৭৬ সালে কঙ্গোতে প্রথমবারের মতো ইবোলা শনাক্ত হয়। ২০১৪-২০১৬ সাল পর্যন্ত ভাইরাসটি পশ্চিম আফ্রিকায় ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ে।
২০১৯ সালে ইবোলার টিকার অনুমোদন দেয় যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুহার প্রায় ৯০ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রের সংক্রামক ব্যাধি নিয়ে কাজ করা সংস্থা সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল ও প্রিভেনশনের হিসাব অনুযায়ী বিশ্বে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ১১ হাজার ৩২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, গিনিতে ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে ১৪ হাজার ৮৯৫ জনের। এ ভাইরাসে দেশটিতে প্রাণ হারিয়েছেন ৮৪ জন।