ছয় দিনে দেশে করোনাভাইরাসের টিকা গ্রহীতার সংখ্যা ৯ লাখ ছাড়াল। তবে এই সংখ্যাটি দুই দিন ধরে নিম্নমুখী।
গণটিকার ষষ্ঠ দিনে তথা রোববার সারা দেশে টিকা নিয়েছেন ১ লাখ ৬৯ হাজার ৩৫৩ জন মানুষ। যদিও আগের দিন টিকা নিয়েছিলেন ১ লাখ ৯৪ হাজারের বেশি।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি গণটিকা প্রয়োগ শুরু হলে, টানা চার দিন ধরে বাড়তে থাকে গ্রহীতার সংখ্যা। বৃহস্পতিবার ২ লাখ ৪ হাজারের বেশি মানুষ টিকা নেয়।
এরপর থেকে টানা দুই দিন কমল সংখ্যা। বৃহস্পতিবারের তুলনায় শনিবার ১০ হাজার কম এবং তার পর দিন আরও ২৫ হাজার কম মানুষ নিলেন টিকা।
ছয় দিনে মোট টিকা নিলেন ৯ লাখ ৬ হাজার ৩৩ জন। এই সংখ্যার সঙ্গে যোগ হবে আরও ৫৬৭ জন, যাদের গত ২৭ ও ২৮ জানুয়ারি টিকা দেয়া হয়েছিল।
টিকা প্রয়োগ শুরু হওয়ার আগে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে নানা আলোচনা থাকলেও এই ছয় দিনে প্রতিক্রিয়া হয়েছে ৪২৬ জনের শরীরে। তাও খুবই সামান্য।
গত ২৪ ঘণ্টায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে ৩২ জনের শরীরে।
বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো তালিকায় বলা হয়, রোববার ঢাকার ৪৬টি এবং ঢাকার বাইরে ৯৫৫টি টিকাদান কেন্দ্রে চলছে এই কার্যক্রম, যেগুলোর প্রতিটিই স্বাস্থ্যকেন্দ্র।
ষষ্ঠ দিন জেলাওয়ারি সবচেয়ে বেশি টিকা দেয়া হয়েছে ঢাকায়। আর সবচেয়ে কম দেয়া হয়েছে খাগড়াছড়িতে।
ঢাকা মহানগরে টিকা নিয়েছেন ২২ হাজার ৯৮২ জন। আর খাগড়াছড়িতে নিয়েছেন ১৯০ জন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রথম দিন সবচেয়ে বেশি টিকা দেয়া হয়েছে ঢাকা বিভাগে।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি টিকা নিয়েছেন ঢাকা মহানগরের বাসিন্দারা। রাজধানীতে টিকা প্রয়োগের পরিমাণ ২২ হাজার ৯৮২ জন।
ঢাকা বিভাগে টিকা নিয়েছেন ৪৫ হাজার ৯১৪ জন।
এদের মধ্যে ১৪ জনের শরীরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এদের ১১ জনই রাজধানী ঢাকার।
চট্টগ্রাম বিভাগে টিকা দেয়া হয়েছে ৩৯ হাজার ৭০৩ জনকে। এদের মধ্যে ৬ জনের শরীরে দেখা দিয়েছে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, যারা সবাই কক্সবাজার জেলার।
রাজশাহী বিভাগে টিকা নিয়েছেন ১৮ হাজার ৯৬৫ জন। এদের মধ্যে দু্ই জনের শরীরে দেখা দিয়েছে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
খুলনা বিভাগে ১৯ হাজার ৮০২ জনকে টিকা দেয়া হয়। এই বিভাগেও দুই জনের মধ্যে দেখা দিয়েছে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
বরিশাল বিভাগে টিকা দেয়া হয়েছে ৯ হাজার ১৯৮ জনকে। এই বিভাগেও দুই জনের মধ্যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
সিলেট বিভাগে টিকা দেয়া হয়েছে ১৩ হাজার ১৯৬ জনকে। এদের মধ্যে কারও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
ময়মনসিংহ বিভাগে টিকা দেয়া হয় ৭ হাজার ৩৫৭ জনকে। এই বিভাগেও কারও মধ্যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
রংপুর বিভাগে টিকা নিয়েছেন ১৫ হাজার ২১৮ জন। এই বিভাগে ছয় জনের মধ্যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
গত ২৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টিকাদান উদ্বোধন করার পর ২৬ জন ও পরদিন যে ৫৪১ জনকে টিকা দেয়া হয়, তাদের মধ্যেও তেমন কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
গণটিকায় বিপুলসংখ্যক মানুষকে প্রয়োগ করলে পরিস্থিতি কী হয়, সেদিকে দৃষ্টি ছিল মানুষের।
ভারত থেকে এই টিকা আসার পর থেকেই বিএনপি এর কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দাবি করেন, এই টিকা দিলে মানুষ মারা যাবে। তিনি এমনও বলেন, সরকার টিকা দিয়ে বিএনপিকে মেরে ফেলতে চায়।
তবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান পরে দাবি করেছেন, বিএনপি টিকা নেবে না-এমন কথা বলেনি। সময় এলেই তারা টিকা নেবে।