করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা নিতে আগ্রহীদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। টিকার জন্য ‘সুরক্ষা’ ওয়েবসাইটে নিবন্ধিতদের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১০ লাখ।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের এক অনুষ্ঠানে ‘সুরক্ষা’ ওয়েসবাইটে টিকা পেতে নিবন্ধিতদের সংখ্যা তুলে ধরেন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। জানান, বুধবার রাত ১২টা পর্যন্ত নিবন্ধিত হয়েছেন ১০ লাখ ২৯ হাজার ৪৫৭ জন।
প্রতিমন্ত্রী জানান, নিবন্ধনকারীদের মধ্যে ৪ লাখ ৩৮ হাজার ৯৬৯ জন নারী ও ৫ লাখ ৯০ হাজার ৪৭৮ জন পুরুষ। এর মধ্যে সামনের সারির যোদ্ধা ৫ লাখ ৯৪ হাজার ৮৩৪ জন, আর সাধারণ মানুষ ৪ লাখ ৩৩ হাজার ৬২১ জন।
প্রথম ডোজ টিকা নেয়ার জন্য ৯ লাখ ১৪ হাজার ৬৭৬ জনকে এসএমএস পাঠানো হয়ে গেছে। এর মধ্যে গত চার দিনে (বুধবার পর্যন্ত) ৩ লাখের অধিক মানুষকে টিকাদান সম্পন্ন হয়েছে।
দেশে গত রোববার গণটিকা প্রয়োগের প্রথম দিন ৩১ হাজার মানুষ টিকা নিলেও প্রতিদিনই বাড়ছে টিকা নেয়াদের সংখ্যা। দ্বিতীয় দিন নেন ৪৬ হাজারের বেশি মানুষ। টিকা নেয়ার সংখ্যা ১ লাখ ১০ হাজার ছাড়ায় মঙ্গলবার।
চতুর্থ দিন বুধবার টিকাগ্রহীতার সংখ্যা ১ লাখ ৫৮ হাজার ছাড়ায়। বৃহস্পতিবারও টিকা কেন্দ্রগুলোতে দেখা গেছে ভিড়।
সারা দেশে করোনার টিকাদানের জন্য স্থাপন করা হয়েছে ১ হাজারের বেশি কেন্দ্র। এসবে কাজ করছেন আড়াই হাজার স্বাস্থ্যকর্মী।
সুরক্ষা অ্যাপ ছাড়াও টিকা পেতে আগ্রহীদের নিবন্ধন প্রক্রিয়ার আরও উপায় নির্ধারণ করেছে সরকার। কেন্দ্রেও নিবন্ধন করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ ছাড়া স্বাস্থ্যকর্মীদের বাড়ি বাড়ি পাঠিয়ে আগ্রহীদের নিবন্ধনভুক্ত করারও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
সুরক্ষা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে টিকা নিতে আগ্রহীদের যে নিবন্ধন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হয়েছে, অন্য কোনো সংস্থা দিয়ে তা করালে শতাধিক কোটি টাকা খরচ হতো বলে দাবি পলকের।
প্রযুক্তি খাতে উন্নয়নের ফলে দেশেই উন্নতমানের ওয়েবসাইট নির্মাণ করা গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘টিকাদানকারীদের ডাটা এখন সংরক্ষণ করা হচ্ছে, কেউ তথ্য চাইলে চুরি করতে পারবে না- এ বিষয়টিও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পেরেছি।’
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের চার জেলার মাঠ পর্যায়ের পেপারলেস কার্যক্রম শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘কাগজমুক্ত অফিস, ক্যাশলেস লেনদেন অফিস করতে চাই। এই পরিকল্পনা আমরা করে রেখেছি।
‘আমরা যে সুরক্ষা অ্যাপ তৈরি করেছি সেটা বাইরের দেশে করতে গেলে অনেক টাকা লাগতো। তবে আমরা বিনা মূল্যে করে দিয়েছি।’
অনুষ্ঠানে ই-এমআইএস কার্যক্রমের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনার ওপর একটি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করা হয়। চার জেলার মাঠ পর্যায়ের উপপরিচালক ও তৃণমূল পর্যায়ের সেবা প্রদানকারীরা ই-এমআইএস কার্যক্রমের ওপর অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাহান আরা বানুর সভাপতিত্বের অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত সচিব ও পরিচালক মো. রেজাউল করিম, ডাটা ফর ইমপ্যাক্টের সিনিয়র স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার মুহম্মদ হুমায়ুন কবির, সেভ দ্য চিলড্রেনের কান্ট্রি ডিরেক্টর মি. ভ্যান ম্যানেন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আলী নুর।