বরিশাল নগরীর ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সিঅ্যান্ডবি কোয়ার্টারের জালাল সরদার ও রুমানা বেগমের আট মাসের ছেলে মোহাম্মদ বায়জীদ। জন্ম থেকেই তার মাথা দেহের তুলনায় অস্বাভাবিক বড়। বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরেও ছেলের চিকিৎসা করাতে না পেরে হতাশ দিনমজুর জালাল।
তিনি জানান, গত ৪ জুন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জন্ম হয় বায়জীদের। তখন থেকেই তার মাথার আকৃতি পুরো শরীরের চার ভাগের তিন ভাগ। এভাবেই বড় হতে থাকে সে।
শের-ই-বাংলা মেডিক্যালের শিশু বিভাগের প্রধান উত্তম কুমার সাহা জানান, চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এই রোগের নাম হাইড্রোসেফালাস। মস্তিষ্কের ভেতর স্বাভাবিকভাবে নির্দিষ্ট পরিমাণ তরল তৈরি হয়, যাকে বলে সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড। এর মধ্যে বেশির ভাগই নির্দিষ্ট পথে প্রবাহিত হয়ে রক্তে মিশে যায় ও বাকিটুকু মস্তিকের কাজে লাগে।
উত্তম বলেন, ‘কোনো কারণে বাড়তি তরল প্রবাহিত না হতে পারলে তা জমতে থাকে। বেড়ে যায় মাথার আকার। অনেক শিশুর মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায় এই ত্রুটি দেখা দেয়। বায়জীদের ক্ষেত্রে তা-ই হয়েছে।’
এই চিকিৎসক জানান, মাথায় অস্ত্রোপচার করে এর চিকিৎসা করতে হয়। তবে তা রাজধানীর নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে করতে হবে। সে জন্য বায়জীদকে ওই হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। এই চিকিৎসায় ২ লাখ টাকার মতো খরচ হতে পারে।
জালাল জানান, বায়জীদের চিকিৎসায় এরই মধ্যে প্রায় দেড় লাখ টাকা খরচ হয়েছে। করোনার কারণে বন্ধ হয়ে গেছে ফুটপাতে থাকা শিঙাড়া বিক্রির ব্যবসা। এরপর দিনমজুরির কাজ করে এখন কোনো রকমে সংসার চালান। ছেলের চিকিৎসা চালানোর মতো টাকা নেই তার।
জালাল ও রুমানার দশ বছর ও চার বছরের আরও দুই সন্তান আছে। রুমানা বলেন, বড় দুজনের খরচ ও ছোট ছেলের চিকিৎসা- সব মিলিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।
এমন অবস্থায় বায়জীদের মায়ের আকুতি, ‘আমাদের যদি সহযোগিতা করা হয় তাহলে আমাদের বাচ্চার চিকিৎসা ঠিকভাবে করাতে পারতাম।’