করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা পেতে আগ্রহীদের বয়সসীমা আরও কমিয়েছে সরকার। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী টিকা নিতে পারবেন ৪০ বছর বয়সীরাও।
এত দিন টিকা নিতে সর্বনিম্ন ৫৫ বছর বয়সীদের নিবন্ধনের সুযোগ ছিল। ধীরে ধীরে তরুণ জনগোষ্ঠীকে টিকার আওতায় নিয়ে আসতে বয়সসীমা আরও ১৫ বছর কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
তিনি বলেন, টিকা নিয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ৪০ বছর বয়স থেকে নিবন্ধন করা যাবে, আগে ৫৫ বছর বয়স ছিল। ধীরে ধীরে তরুণ জনগোষ্ঠীকে টিকার আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
টিকা নিবন্ধনপ্রক্রিয়া আরও সহজ করায়ও উদ্যোগী হয়েছে সরকার। সচিব জানান, সাধারণ মানুষের যাতে করোনা টিকা নিতে নিবন্ধন করতে জটিলতায় পড়তে না হয়, এ জন্য এক পেজে সব তথ্য দিয়ে নিবন্ধন করা যায় কি না, এ বিষয়ে ভেবে দেখতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগকে।
টিকা প্রয়োগ শুরু হলেও মাস্ক পরাসহ করোনা প্রতিরোধে অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি অবশ্যই মেনে চলার ব্যাপারে মন্ত্রিপরিষদে আলোচনা হয়েছে বলে জানালেন খন্দকার আনোয়ারুল।
টিকা নেয়া হলেও মাস্ক পরা ছেড়ে দেয়া যাবে না, মাস্কের সঙ্গে কম্প্রোমাইজ করা যাবে না।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, যারা নিবন্ধন করতে পারেনি, তারা যদি জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে টিকাদান কেন্দ্রে আসে, তাহলে তাদের নিবন্ধনে সহযোগিতা করে টিকা দেয়া হবে। এমনকি নিবন্ধনের সঙ্গে সঙ্গে টিকা নিতে পারবেন তিনি।
দেশে প্রথম টিকাদান শুরু হয় ২৭ জানুয়ারি। এর ১০ দিন পর রোববার গণটিকাদান শুরু হয়েছে। এদিন দুপুর পর্যন্ত টিকা পেতে নিবন্ধন হয়েছে প্রায় চার লাখ।
গণটিকাদান কর্মসূচির প্রথম দিনে ঢাকার ৫০টি হাসপাতালে ৫০টি কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। মোট ২০৪টি দল ঢাকার টিকাদান পরিচালনা করছে। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন জেলার ৯৫৫টি হাসপাতালে টিকাদান কর্মসূচির প্রথম দিনে টিকা দেয়া হয়। এতে ২ হাজার ১৯৬টি দল কাজ করছে।
প্রথম দিন সারা দেশে টিকা নিয়েছে ৩১ হাজারের বেশি ১৬০ জন। এর মধ্যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে মাত্র ২১ জনের ক্ষেত্রে।
সোমবার দেশজুড়ে টিকাদান কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন। এদিন রাষ্ট্রের ভিআইপিদের মধ্যে টিকা নিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম।
গণটিকা প্রদান শুরুর সময় সরকারের হাতে ছিল ৭০ লাখ ডোজ টিকা। এর মধ্যে ৫০ লাখ ডোজ বাংলাদেশ কিনেছে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে। আর ২০ লাখ উপহার হিসেবে দিয়েছে দেশটি। ১০ লাখ টিকা কেন্দ্রীয়ভাবে সরকারের হাতে রাখা হয়েছে জরুরি অবস্থায় ব্যবহারের জন্য।
টিকা নিতে নিবন্ধনের পরিকল্পনাতেও পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে জানালেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। অনলাইনে নিবন্ধন ছাড়া টিকা নয়- এমন সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে মন্ত্রী বলছেন, টিকাদান কেন্দ্রে গিয়ে হাতে হাতেও করা যাবে নিবন্ধন। আবার স্বাস্থ্যকর্মীরাও যাবেন বাড়ি বাড়ি।