করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দেশে গণটিকাদান কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে ডোজ নিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) টিকা নেন তিনি। একই সময় টিকা নেন নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম।
কিছুক্ষণ পর একই কেন্দ্রে টিকা নেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এবং নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
এদিকে সকাল ১০টায় রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে টিকা নিয়েছেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম ও তার স্ত্রী।
এ ছাড়া দুপুরে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান করোনার টিকা নেবেন বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
প্রথম দিনের মতো সোমবারও সকাল সাড়ে ৮টায় শুরু হয় টিকাদান কর্মসূচি। চলবে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত। প্রতিদিন সাড়ে তিন লাখ টিকা দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও রোববার সারা দেশে ৩১ হাজারের কিছু বেশি মানুষ টিকা নেন।
টিকা নিয়ে জনগণের মধ্যে ভয় দূর করতে প্রথম দিনের মতো আজও মন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ রাষ্ট্রের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি টিকা নিচ্ছেন।
রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে টিকা নেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম। ছবি: নিউজবাংলা
দেশে করোনার টিকা দেয়া শুরু হয় ২৭ জানুয়ারি। ১০ দিন পর রোববার সারা দেশের এক হাজার পাঁচটি কেন্দ্রে একযোগে টিকা দেয়া শুরু হয়। টিকা নেন প্রধান বিচারপতি, আট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, সংসদ সদস্যসহ জনপ্রতিনিধিরা।
সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের থেকে জানানো হয়, সারা দেশে ৩১ হাজার ১৬০ জন টিকা নিয়েছেন। এর মধ্যে ২১ জনের শরীরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, টিকা দেয়ার পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণে সবাইকে ৩০ মিনিট হাসপাতালে রাখা হয়। এর ভিত্তিতেই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৭ জানুয়ারি টিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধনের দিন ২৬ জন এবং পরদিন যে ৫৪১ জনকে টিকা দেয়া হয়, তাদের মধ্যেও তেমন কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
গণটিকাদান কর্মসূচির প্রথম দিনের মতো সোমবারও ঢাকার ৫০টি হাসপাতালে ৫০টি কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। এসব কেন্দ্রে ২০৪ জন টিকা দিচ্ছেন।
এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন জেলার ৯৫৫টি হাসপাতালে টিকাদান কর্মসূচির প্রথম দিনে টিকা দেয়া হয়। এতে দুই হাজার ১৯৬ জন কাজ করেন।
এদিকে প্রয়োগের জন্য এখন পর্যন্ত সরকারের কাছে রয়েছে ৭০ লাখ টিকা। এর মধ্যে ৫০ লাখ টিকা বাংলাদেশ কিনেছে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে। আর ২০ লাখ টিকার ডোজ উপহার হিসেবে দিয়েছে দেশটি।
১০ লাখ টিকা এখনও কেন্দ্রীয়ভাবে সরকারের কাছে রাখা হয়েছে জরুরি ব্যবহারের জন্য। প্রথমে ৬০ লাখ টিকা দেয়ার পরিকল্পনা থাকলেও এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এখন প্রথমে ৩৫ লাখ টিকা দেয়া হবে।
টিকা নিতে নিবন্ধনের পরিকল্পনাতেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। অনলাইনে নিবন্ধন ছাড়া টিকা নয়- এমন সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে এখন স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলছেন, কেন্দ্রে গিয়েও টিকার নিবন্ধন করা যাবে। আবার স্বাস্থ্যকর্মীরাও যাবেন বাড়ি বাড়ি।