দেশব্যাপী এক হাজার পাঁচটি কেন্দ্রে একযোগে গণটিকাদান শুরু হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রোববার সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা।
বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা একটি মহান কাজ করতে চাচ্ছি। গত বছরের ৮ মার্চ করোনা ভাইরাসের দেখা দেয়। শুরুতে তেমন প্রস্তুতি না থাকলে আস্তে আস্তে সব ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করেছি।
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করোনা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে। করোনা শনাক্তের হার ২ শতাংশে নেমে আসছে।’
টিকা নিয়ে গুজবের বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘টিকা নিয়ে যেন কোনো গুজব না হয়। আমরা এর আগে যেসব মানুষকে টিকা দিয়েছি, তারা সবাই সুস্থ আছেন।
‘সারা বছর টিকা কার্যক্রম চলবে। প্রথমে কেনা টিকা দিয়ে চলবে এই কাজ। এরপর কোভ্যাক্স থেকে আসা টিকা মানুষকে দেওয়া হবে।’
টিকা নেয়ার কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আজ আমি নিজে টিকা নিব। এ ছাড়া আরও অনেক মন্ত্রী, এমপি টিকা নিবেন। আমরা চাই টিকা নিয়ে আর যেন সমালোচনা না হয়।’
মন্ত্রী রাজধানীর মহাখালীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে করোনার টিকা নেবেন।
দেশব্যাপী করোনা টিকাদান কর্মসূচির প্রথম দিনে ঢাকার ৫০টি হাসপাতালে ৫০টি কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। ২০৪টি দল ঢাকার টিকাদান পরিচালনা করছে।
এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন জেলার ৯৫৫টি হাসপাতালে টিকাদান কর্মসূচির প্রথম দিনে টিকা দেয়া হচ্ছে। এতে ২ হাজার ১৯৬টি দল কাজ করছে।
গত ২৭ জানুয়ারি ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে কার্যক্রম উদ্বোধনের পর দুই দিনে টিকা দেয়া হয়েছে মোট ৫৭৭ জনকে। এদের কারও মধ্যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার তথ্য আসেনি।
নার্স রুনু ভেরোনিকা ডি কস্তাকে প্রয়োগের ১০ দিন পর রোববার সকালে সারা দেশে একযোগে শুরু হয় গণটিকা।
প্রয়োগের জন্য সরকারের হাতে আছে ৭০ লাখ টিকা। এর মধ্যে ৫০ লাখ টিকা বাংলাদেশ কিনেছে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে। আর ২০ লাখ উপহার হিসেবে দিয়েছে দেশটি।
১০ লাখ টিকা এখনো কেন্দ্রীয়ভাবে সরকারের হাতে রাখা হয়েছে জরুরি অবস্থায় ব্যবহারের জন্য। প্রথমে ৬০ লাখ টিকা দেয়ার পরিকল্পনা থাকলেও এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছে অধিদপ্তর। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৩৫ লাখ টিকা প্রথমে দেয়া হবে।
বিশিষ্টজনদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে টিকা নেবেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল টিকা নেবেন সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান টিকা নেবেন মহাখালীর গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে। একই হাসপাতালে টিকা নেবেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনও টিকা নেবেন প্রথম দিন।