বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

টিকা নেয়ার পর কেমন আছেন তারা

  •    
  • ২৮ জানুয়ারি, ২০২১ ২১:৫৪

দেশে টিকা গ্রহীতাদের শারীরিক অবস্থা কেমন আছে- তা জানতে সাত দিন পাঁচ শ্রেণি-পেশার পাঁচ জনকে পর্যবেক্ষণে রাখবে নিউজবাংলা।

বিশ্বজুড়েই করোনার টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে জনমনে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। টিকা নেয়ার পর প্রতিবেশী দেশ ভারতে ৪৪৭ জনের নানা ধরনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। মৃত্যুও হয়েছে এক জনের।

বাংলাদেশে বুধ ও বৃহস্পতিবার দুই দিনে ৫৭৭ জন টিকা দিলেও কোনো ধরনের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার খবর পাওয়া যায়নি।

দেশে টিকা গ্রহীতাদের শারীরিক অবস্থা কেমন আছে- তা জানতে সাত দিন পাঁচ শ্রেণি-পেশার পাঁচ জনকে পর্যবেক্ষণে রাখবে নিউজবাংলা।

তারা হলেন- সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের ডায়ালাইসিস ইউনিটের ইনচার্জ ও সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তা, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ফরহাদ উদ্দিন হাসান চৌধুরী, ট্রাফিক পুলিশের মতিঝিল বিভাগের কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম এবং এনটিভি অনলাইনের সাংবাদিক মাসুদ রায়হান পলাশ।

টিকা নেয়ার পর কেমন আছেন জানতে বৃহস্পতিবার বিকেলে যোগাযোগ করা হয় তাদের সঙ্গে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে টিকা নেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী খালিদ।

কেমন আছেন জানতে চাইলে নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘টিকা নিয়ে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়নি। আমি সুস্থ ও স্বাভাবিক আছি। যখন টিকা নিয়েছি তখনও স্বাভাবিক ছিলাম। আট-দশটা টিকা নেয়ার মতো করোনাভাইরাসের টিকা স্বাভাবিকভাবে নিয়েছি।’

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে টিকা দেয়া শুরু হলে নানা গুজব রটে। এমনকি নানা অপপ্রচার ছিল। সেই অপপ্রচার রুখতে দেশের একটা দায়িত্বশীল পদে থেকে টিকা নিয়েছি। আমার বয়স ৬৫। এর আগে অন্য কোনো টিকা নেয়ার কারণে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়নি। আমার বর্তমানে কোনো জটিল রোগও নাই।’

দেশে প্রথম করোনার টিকা নিয়েছেন রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের ডায়ালাইসিস ইউনিটের ইনচার্জ ও সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তা।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গতকাল (বুধবার) আমি টিকা নিয়েছি। এরইমধ্যে ২৪ ঘণ্টা হয়ে গেছে। আমার শরীরে কোনো ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়নি। আমি একদমই সুস্থ রয়েছি। স্বাভাবিক রয়েছি। কোনো ধরনের সমস্যা অনুভাব করছি না।’

টিকা প্রয়োগের স্থানে কোনো ব্যথা আছে কিনা জানতে চাইলে রুনু ভেরোনিকা কস্তা বলেন, ‘তেমন কোনো ব্যথা নেই। তবে রাতে একটু মাথা ব্যথা ছিল। সেটা ১০ থেকে ১৫ মিনিট ছিল। পরে ঠিক হয়ে গেছে।’

অন্য কোনো জটিল রোগ রয়েছে কিনা জানতে চাইলে ৩৮ বয়সী এই নার্স বলেন, ‘না।’

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মীদের মধ্যে করোনাভাইরাসের প্রথম টিকা নিয়েছেন ডা. ফরহাদ উদ্দিন হাসান চৌধুরী।

কেমন আছেন জানতে চাইলে নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘টিকা নিয়ে কোনো খারাপ কিছু হয়নি। আমি স্বাভাবিক আছি। আগামীকাল গ্রামের বাড়ি যাচ্ছি। সবকিছুই স্বাভাবিকভাবে চলছে। যেখানে টিকা দেয়া হয়েছে সেই স্থানেও কোনো ধরনের ব্যথা নেই। অন্যান্য টিকা গ্রহণের মতো করোনার টিকা একই।’

তার প্রেসার, ডায়াবেটিসের মতো কোনো জটিল রোগ নেই বলে জানান ৩৬ বছর বয়সী এই চিকিৎসক।

পুলিশ সদস্যদের মধ্যে প্রথম টিকা নিয়েছেন ট্রাফিক পুলিশের মতিঝিল বিভাগের কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমি কাল (বুধবার) টিকা নিয়ে ৩০ মিনিট পর্যবেক্ষণে ছিলাম। এরপর থেকে বাসায়ই রয়েছি। তেমন কোনো সমস্যা দেখা দেয়নি। রাতে একটু মাথা ব্যথা ছিল, কিছুক্ষণ পর স্বাভাবিক হয়েছে।

‘টিকা নিলে জ্বর আসতে পারে বা ব্যথা হতে পারে। তবে আমার ক্ষেত্রে এমন কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়নি। আমি আগে যেমন ছিলাম এখনও তেমন রয়েছি। কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।’

টিকা নেয়ার জন্য ট্রাফিক বিভাগ ছুটি দিয়েছে জানিয়ে ৩১ বছর বয়সী দিদারুল বলেন, ‘আমার দেহে কোনো জটিল রোগ নেই। পুলিশ বাহিনীর প্রতিনিধিত্ব করতে আমি নিজের ইচ্ছায় এই টিকা নিয়েছি।’

গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে প্রথম টিকা নিয়েছেন এনটিভি অনলাইনের সাংবাদিক ৩১ বছর বয়সী মাসুদ রায়হান পলাশ।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়নি। সুস্থ রয়েছি। গতকাল টিকা নেয়ার আগে যেমন ছিলাম, এখনও তেমনই রয়েছি। টিকা প্রয়োগের স্থানে কোনো দাগ দেখা দেয়নি, ব্যথাও তেমন হয়নি। রাতে মাথাটা একটু ভার ছিল, সেটাও ঘুমানোর পরে ঠিক হয়ে গেছে।

‘ছোটবেলায় যে টিকা নিয়েছি, সেই টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছিল। যে কারণে এখনও দাগ রয়েছে।’

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নানা কোম্পানির টিকা প্রয়োগ শুরু হলেও বাংলাদেশ অপেক্ষা করেছে অক্সফোর্ড উদ্ভাবিত টিকার জন্য। এই অঞ্চলে এটা তৈরি করছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান সিরাম ইনস্টিটিউট। এই প্রতিষ্ঠান থেকে তিন কোটি টিকা কিনছে সরকার।

গত ২১ জানুয়ারি সিরামের ২০ লাখ টিকা বাংলাদেশ ভারত থেকে উপহার হিসেবে পেয়েছে। এর চার দিন পর আসে বাংলাদেশের কেনা টিকার ৫০ লাখ ডোজ।

করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বুধবার টিকাদান কর্মসূচি উদ্বোধন করেন। প্রথম দিন ২৬ জনকে টিকা দেয়া হয়। দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার ঢাকার পাঁচটি হাসপাতালে আরও ৫৪১ জনকে করোনাভাইরাসের টিকা দেয়া হয়েছে।

টিকা নেয়া কারও মধ্যে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘এ পর্যন্ত যারা টিকা নিয়েছেন তারা সুস্থ-স্বাভাবিক রয়েছেন। কারো শরীরেই কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যে টিকা দিচ্ছি এই টিকা খুব ভালো টিকা। বিভিন্ন দেশে যে টিকা তৈরি হয়েছে তার থেকে এই টিকার মান ভালো। এই টিকা অক্সফোর্ডের তৈরি অন্যান্য টিকার থেকে নিরাপদ।’

এ বিভাগের আরো খবর