ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরশনে (ডিএসসিসি) রাজধানীর তিনটি হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা প্রয়োগের প্রশিক্ষণ চলছে।
সোমবার সকাল থেকে ডিএসসিসির মেয়র হানিফ মিলনায়তনে এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়।
এতে অংশ নেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও মুগদা জেনারেল হাসপাতালের ৮৫ জন চিকিৎসক ও নার্স।
প্রশিক্ষণ চলাকালে দুপুরে ডিএসসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. শরীফ আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আগামী ২৭ জানুয়ারি টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন ঘোষণা করবেন প্রধানমন্ত্রী। তারই প্রেক্ষিতে পরের দিন থেকে বাংলাদেশের পাঁচটি হাসপাতালে ভ্যাকসিনের কার্যক্রম প্রথম পর্যায়ে শুরু হবে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মধ্যে পড়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।
‘যেহেতু হাসপাতালগুলোতে ২৮ জানুয়ারি থেকে এই ভ্যাকসিন কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে, সেই লক্ষ্যেই আমরা এই তিনটি হাসপাতালের চিকিৎসক এবং সেবিকাদের একটা প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকে এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুরু হলো। পর্যায়ক্রমে আমাদের আরও টিমকে এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের আওতায় আনব। আপনারা জানেন এই ভ্যাকসিনটা দুইটা ডোজে দেওয়া হবে। পয়েন্ট ফাইভ মিলিলিটার একটা ডোজ। আট সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে। এটা মূলত মাংসপেশিতে দেওয়ার মতো একটা ভ্যাকসিন।
‘সব ভ্যাকসিনের একটি ছোট-খাটো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে। এটা সবার জন্য না; কারো কারো হতে পারে। তাই যদি হয়, সে বিষয়ে আমাদের পরবর্তী ব্যবস্থাপনা কী হবে, সে বিষয়েও আমরা আজকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছি।’
শরীফ আহমেদ বলেন, ‘আপনাদের মাধ্যমে এটা জানাতে চাই, আপনারা উদ্বুদ্ধ করেন জনসাধারণকে যাতে করে সবাই এই ভ্যাকসিন পর্যায়ক্রমে নিতে পারে এবং কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিরোধ যুদ্ধে যেন আমরা জয়ী হতে পারি। কোভিড-১৯ ম্যানেজমেন্টে বাংলাদেশ উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। আশা করছি ভ্যাকসিন প্রয়োগের ক্ষেত্রেও আমরা নজির স্থাপন করব।
‘এই ভ্যাকসিনের বিরুদ্ধে যদি কোনো রিউমার (গুজব) হয়ে থাকে এগুলো প্রিভেন্ট করার দায়িত্ব আপনাদের, আমাদের সবার।’
এদিকে টিকা কার্যক্রমে সিটি করপোরেশনের ভূমিকা কী, কারা প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন, এক দিনের প্রশিক্ষণ পর্যাপ্ত কি না, এমন সব প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রশিক্ষণের জন্য আমরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহায়তায় মাস্টার ট্রেইনার করে নিয়ে এসেছি। যারা মাস্টার ট্রেইনার হিসেবে আসছেন প্রশিক্ষক হিসেবে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন, তারাই আজকে মূলত প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। এটা বড় কোনো জটিল বিষয় না। এই বিষয়ে এক দিনের প্রশিক্ষণই আমি মনে করি গুড এনাফ।
‘এর মাধ্যমেই তাদের প্রশিক্ষিত করা হবে। কারণ আপনারা জানেন এই ভ্যাকসিনটা মাংসপেশিতে দেওয়ার। এটা জটিল কোনো প্রক্রিয়া না। ইতিমধ্যে ইপিআই ভ্যাকসিন দিয়ে বিশ্বে আমরা নজির স্থাপন করেছি। আমাদের ডাক্তারদের, আমাদের সেবিকাদের, আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীদের এ বিষয়ে যথেষ্ট জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা আছে। আশা করব এর মাধ্যমে আমরা সফলকাম হব।’
এ কর্মকর্তা জানান, তিনটি হাসপাতালে ৮৫ জনকে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। পরবর্তী সময়ে এই কার্যক্রম চলমান থাকবে। কারণ এই পাঁচটি হাসপাতালে পরে আরও অনেকগুলো দল গঠন করা হবে। সেই দলগুলোকে পর্যায়ক্রমে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে।