নাগরিকদের মধ্যে করোনাভাইরাসের টিকা বণ্টন প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছে সরকার। এর অংশ হিসেবে ২৬ জানুয়ারি শুরু হচ্ছে অনলাইনে নিবন্ধন।
সোমবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে টিকা বিষয়ে সবশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরার সময় এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার খোরশীদ আলম।
তিনি বলেন, ‘ভ্যাকসিন পেতে অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধন ছাড়া কোনো ব্যক্তিকে টিকা দেয়া হবে না। জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে অনলাইন নিবন্ধন সম্পাদন করতে হবে। নিবন্ধন করতে সর্বোচ্চ পাঁচ মিনিট সময় লাগবে।’
অনলাইন নিবন্ধন কার্যক্রম ২৬ জানুয়ারি শুরু হলেও কবে নাগাদ শেষ হবে এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য জানাতে পারেনি অধিদপ্তর।
আবুল বাশার জানান, জনগণ সরাসরি মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে পারবে। ইউনিয়ন পর্যায়ে এ নিয়ে কাজ করা হবে। নিবন্ধনের সঙ্গে এনআইডি নম্বর প্রয়োজন হবে। এক্ষেত্রে বিধবা বা বয়স্কভাতা পান এমন তালিকাও সংগ্রহ করে দেখা হবে।
করোনার টিকা আনার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে সবশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার খোরশীদ আলম।
‘এক্ষেত্রে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর বাদ পড়ার কোনো শঙ্কা নেই। তবে এটা ঠিক যে, যদি কেউ নিবন্ধন না করে, তাকে টিকা দেয়া হবে না। কারণ আমরা নিবন্ধন তালিকার বাহিরে কেউকেই টিকা দিতে পারব না। টিকা দেয়ার আগে নিবন্ধন করা জন্য সারা দেশে ব্যাপক প্রচার চালানো হবে।’
এ ক্ষেত্রে শিক্ষাবঞ্চিতরা কি নিবন্ধন জটিলতায় পড়বে না?
এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘নিরক্ষরদের জন্যও আমাদের ব্যবস্থা থাকবে। তারা ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে নিবন্ধন করতে পারবে। গ্রাম পর্যায়ে এখন ডিজিটাল সেবা কার্যক্রম চলে গেছে। এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদ আমাদের সহযোগিতা করতে পারবে।’
বিশ্বের অনেক দেশে এরই মধ্যে টিকা দেয়া শুরু হয়েছে। বেশিরভাগ দেশই দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজার ও জার্মানির অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত টিকা। এ ছাড়া রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মডার্না, রাশিয়ার স্পুতনিক ও চীনের সিনোভ্যাক্স টিকা।
তবে বাংলাদেশ আস্থা রাখছে অক্সফোর্ডের টিকার ওপরই। এই টিকা ভারতীয় উপমহাদেশে উৎপাদন করবে সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া। তাদের কাছ থেকে তিন কোটি টিকা কিনবে বাংলাদেশ।
এই টিকার ৫০ লাখ ডোজের প্রথম চালানটি দ্রুতই দেশ পৌঁছাবে বলে জানান আবুল বাশার।
‘২১ থেকে ২৫ জানুয়ারির মধ্যে যেকোনো সময় করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন দেশে পৌঁছাবে। টিকা আসার পর দুই দিন ওয়ার হাউজে রাখা হবে। এরপর আমরা তালিকা দিলে সেই অনুযায়ী বণ্টন করা হবে।’
প্রথম ধাপের টিকার ৫০ লাখ ডোজ ৫০ লাখ মানুষকে দেয়া হবে। টিকা সরবরাহ ও বিতরণ এবং সংরক্ষণ নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত করা হবে।