করোনাভাইরাস প্রতিরোধী অক্সফোর্ডের টিকার ৫০ লাখ ডোজের প্রথম চালানটি ২১ থেকে ২৫ জানুয়ারির মধ্যেই দেশে পৌঁছাবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
সোমবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে ভ্যাকসিন বিষয়ে সবশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার খোরশীদ আলম।
তিনি বলেন, ‘২১ থেকে ২৫ জানুয়ারির মধ্যে যেকোনো সময় করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন দেশে পৌঁছাবে। টিকা আসার পর দুই দিন ওয়ার হাউসে রাখা হবে। এরপর আমরা তালিকা দিলে সেই অনুযায়ী বণ্টন করা হবে।’
আবুল বাশার জানান, প্রথম ধাপের টিকার ৫০ লাখ ডোজ ৫০ লাখ মানুষকে দেয়া হবে। টিকা সরবরাহ ও বিতরণ এবং সংরক্ষণ নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত করা হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বলেন, ‘১৮ বছরের নিচে এবং গর্ভবতী মাকে ভ্যাকসিন দেয়া হবে না। এ ছাড়া সকলের জন্য ভ্যাকসিন নিশ্চিতে কাজ করছে সরকার।’
ভ্যাকসিন বিষয়ে সবশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার খোরশীদ আলম
বিশ্বের অনেক দেশে এরই মধ্যে টিকা দেয়া শুরু হয়েছে। বেশির ভাগ দেশই দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজার ও জার্মানির অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত টিকা। এ ছাড়া রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মডার্না, রাশিয়ার স্পুতনিক ও চীনের সিনোভ্যাক্স টিকা।
তবে বাংলাদেশ আস্থা রাখছে অক্সফোর্ডের টিকার ওপরই। এই টিকা ভারতীয় উপমহাদেশে উৎপাদন করবে সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া। তাদের কাছ থেকে তিন কোটি টিকা কিনবে বাংলাদেশ।
এ জন্য ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয় গত ৫ নভেম্বর, ১৩ ডিসেম্বর হয় ক্রয় চুক্তি। চুক্তির পক্ষ তিনটি- বাংলাদেশ সরকার, সিরাম ও বেক্সিমকো।
সবকিছু যখন ঠিকঠাক মতো এগুচ্ছিল তখন চলতি মাসের শুরুতে টিকা পাওয়া নিয়ে হঠাৎ অনিশ্চয়তার কথা জানান সিরাম ইনস্টিটিউটের সিইও আদর পুনাওয়ালা।
বেসরকারি মার্কেটে টিকা বিক্রিতে সরকার তাদের মানা করেছে জানিয়ে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমরা এই মুহূর্তে কেবল ভারত সরকারই টিকা দিতে পারব, সবাইকে টিকা দিতে পারব না।’
এই মন্তব্য বজ্রাঘাতের মতো আসে ঢাকায়। কারণ, বিষয়টি নিয়ে কিছুই জানা ছিল না সিরামের সঙ্গে চুক্তি করা বাংলাদেশ সরকার ও বেক্সিমকো ফার্মার।
এ নিয়ে জল ঘোলা হওয়ার আগেই আলোচনার মাধ্যমে টিকা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে সরকার।আরও পড়ুন: সিরামের এখন উল্টো সুর
টিকা কিনতে সিরাম ইনস্টিটিউটটের অ্যাকাউন্টে অগ্রিম গত ৬ জানুয়ারি ৬০০ কোটি টাকাও জমা দিয়েছে বেক্সিমকো।
অক্সফোর্ডের টিকা আনা ও প্রয়োগের অনুমোদন ইতিমধ্যে দিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ সরকারের ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এখন কেবল টিকা হাতে পাওয়ার অপেক্ষা।