টিকা করোনাভাইরাসের আজীবনের প্রতিরোধী হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ফার্মাকোলজিক্যাল সোসাইটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাক্তার সায়েদুর রহমান।
বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) কনফারেন্স রুমে শনিবার আয়োজিত ‘কভিড-১৯ ভ্যাকসিন ব্যবস্থাপনা’ নিয়ে আয়োজিত এক সংলাপে এ কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় সায়েদুর রহমান বলেন, ‘কোভিড ভ্যাকসিন আজীবন প্রতিরোধ নিশ্চিত করবে না। টিকা আবিষ্কারে নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। নিজেরা ভ্যাকসিন উৎপাদন করা যায় কি না সেটা এখনই ভাবতে হবে। তা না হলে ভ্যাকসিন নিশ্চিত করতে সরকারে বাজেটের বড় অংশ চলে যাবে এই খাতে।’
বিশ্বের অনেক দেশে করোনাভাইরাসের টিকা প্রয়োগ শুরু হয়েছে। বেশির ভাগ দেশেই দেয়া হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজার ও জার্মানভিত্তিক বায়ো-এনটেক উদ্ভাবিত। এ ছাড়া প্রয়োগের পর্যায়ে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের আরেক ওষুধ প্রতিষ্ঠান মডার্নার টিকা। করোনা প্রতিরোধে কার্যকর টিকা এনেছে রাশিয়া, চীনও।
কিন্তু বাংলাদেশ আস্থা রাখছে অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত টিকার ওপর। ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে আপাতত এই টিকার তিন কোটি ডোজ দেশে আনার সব প্রস্তুতি এর মধ্যে সম্পন্ন করেছে সরকার। এবার শুধু টিকা আসার পালা।
করোভাইরাসের টিকা ব্যবস্থাপনা বিষয়ে আলোচনায় বিশেষজ্ঞরা। ছবি: নিউজবাংলা
সায়েদুর রহমানের মতে, করোনার টিকা বর্তমানে বৈশ্বিক পণ্যে পরিণত হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে টিকা বণ্টন ব্যবস্থাপনা।
তিনি বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে উঠেছে ভ্যাকসিন ব্যবস্থাপনার বিষয়টি। বিষয়গুলো নিয়ে নানা প্রশ্ন, কৌতুহল, সংশয় বড় হয়ে উঠছে। ভ্যাকসিন কারা পাবে তা বিজ্ঞানভিত্তিক উপায়ে নিশ্চিত করতে হবে। সুষ্ঠু বণ্টন করতে হবে, যাতে বিষয়টি মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়।’
সরকার সবার জন্য টিকা নিশ্চিত করতে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
টিকা পেতে সবাইকে অনলাইনে নিবন্ধিত হতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রথম অবস্থায় দেড় কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়া হবে। ভ্যাকসিন পেতে অনলাইনে মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হবে। এটার জন্য সফটওয়্যার উন্নয়নে কাজ করছে।’
সেব্রিনা জানান, প্রথম মাসে ২৫ লাখ মানুষের টিকা দেয়া হবে, তাদের অনলাইন নিবন্ধন প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত করতে কাজ চলছে।
টিকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখতে যাদের টিকা দেয়া হবে তাদেরকে গভীর পর্যবেক্ষণে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউট চেয়ারম্যান সৈয়দ আব্দুল হামিদ। সেই সঙ্গে বিকল্প উৎস থেকে টিকা সংগ্রহের মত দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিতি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এবিএম খোরশেদ আলম, বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বিএমএর সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা রশিদ-ই-মাহবুব, মহাপরিচালক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক অধ্যাপক ডা এম এ ফয়েজ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ডাক্তার এম ইকবাল আর্সলান।