অধিকাংশ দেশ যখন ফাইজার ও মডার্নার টিকা নিতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে তখন আর্জেন্টিনার অবস্থান স্রোতের বিপরীতে। রাশিয়ার উদ্ভাবিত স্পুতনিক ভি টিকা নিচ্ছে লাতিন আমেরিকার দেশটি।
রয়টার্স লিখেছে, আর্জেন্টিনা সরকারের অনুমোদনের পর বৃহস্পতিবার বুয়েন্স আয়ার্সে পৌঁছায় প্রায় ৩ লাখ স্পুতনিক ভি টিকার ডোজ।
স্থানীয় টেলিভিশনগুলোতে বলা হয়েছে, আর্জেন্টিনা এয়ারলাইনসের একটি বিশেষ ফ্লাইটে করে মস্কো টিকাগুলো বুয়েন্স আয়ার্সের উপকণ্ঠে এজেইতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়।আরও পড়ুন: চীনের টিকা নিচ্ছে তুরস্ক
চলমান করোনা মহামারিতে সবার আগে টিকা উদ্ভাবনের ঘোষণা দেয় রাশিয়া। কিন্তু তাদের স্পুতনিক ভি টিকাটি নিয়ে প্রশ্ন তোলে পশ্চিমা বিশ্ব। তাদের দাবি, পর্যাপ্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই টিকাটি ছাড়া হয়েছে।
এসব অভিযোগ জোরালোভাবে প্রত্যাখান করেছে রাশিয়া। ইউরোপের দেশগুলোর সমালোচনা করে মস্কো বলেছে, টিকার লোভনীয় বাজার থেকে প্রতিদ্বন্দ্বীদের হটাতেই এসব অভিযোগ তুলছে তারা।
সবার আগে আসলেও স্পুতনিক ভি নিয়ে দেশগুলোর আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। বরং পরে আসা ফাইজার ও মডার্নার টিকার প্রতিই সবার ঝোঁক।
ফাইজারের টিকা দিতে শুরু করেছে অনেক দেশ। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মেক্সিকো, চিলি ও কোস্টারিকাসহ অনেক দেশে এই টিকা প্রদান শুরু হয়েছে। শুরু হয়েছে মডার্নার টিকা সরবরাহও।আরও পড়ুন: ১৫ জানুয়ারির পর আসবে টিকা, আশা মন্ত্রীর
এ ছাড়া এখন পর্যন্ত বাজারে না আসলেও অক্সফোর্ডের টিকার ব্যাপারে আগ্রহী অনেক দেশ। এই তালিকায় আছে বাংলাদেশও। এই টিকার তিন কোটি ডোজ আনতে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি করে রেখেছে বাংলাদেশের ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মা।
রাশিয়ার টিকা প্রসঙ্গে আর্জেন্টিনা সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই টিকা নিয়ে কোনো ধরনের দ্বন্দ্বে না জড়িয়ে জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষার প্রতিই বেশি মনোযোগ দিতে দিচ্ছে তারা।
বড় দিনের আগে আর্জেন্টিনায় ‘স্পুতনিক ভি’ এর চালান পাঠানো নিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে টিকাটি উদ্ভাবনে বিনিয়োগ করা রাশিয়ার ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড (আরডিআইএফ)।
তাতে বলা হয়েছে, অতি সম্প্রতি একটি ট্রায়ালে দেখা গেছে, টিকাটি করোনা রোধে ৯১.৪ শতাংশ কার্যকর। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ কার্যকারিতার প্রমাণও পাওয়া গেছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে রাশিয়ার টিকাটির প্রতি ডোজের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ ডলার, বাংলাদেশি মূদ্রায় প্রায় ৮৫০ টাকা।