বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

করোনার ধাক্কায় বিপর্যস্ত বছর

  •    
  • ২৩ ডিসেম্বর, ২০২০ ০৮:২৭

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, দেশে গত নয় মাসে করোনা শনাক্তের সংখ্যা প্রায় পাঁচ লাখে দাঁড়িয়েছে। এক দিনে এই ভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্তের সর্বোচ্চ সংখ্যা ছিল ২ জুলাই, ওই দিনে ৪ হাজার ১৯ জন শনাক্ত হন। করোনায় এরই মধ্যে মৃতের সংখ্যা সাত হাজার ছাড়িয়েছে।

চীনের উহান শহরে করোনাভাইরাস সংক্রমণের খবর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ পায় গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে। এর কয়েক মাসের মধ্যে মহামারি ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বব্যাপী।

বাংলাদেশে চলতি বছরের ৮ মার্চ প্রথম তিন জন রোগী শনাক্তের ঘোষণা দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে উদ্বেগ। সংক্রমণ প্রতিরোধে ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে বন্ধ করে দেয়া হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত। বন্ধ হয়ে যায় সব ধরনের গণপরিবহন। সাধারণ ছুটি সাত দফা বাড়িয়ে তিন মাস পর ৩০ মে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালু করা হয় সরকারি-বেসরকারি অফিস।

তবে এই তিন মাস কর্মহীন ছিল প্রায় দুই কোটি দিনমজুর, অসংখ্য মানুষ চাকরি হারায়, স্থবির হয়ে পড়ে দেশের অর্থনীতি। কাজ না থাকায় ঢাকা ছাড়তে বাধ্য হয় রাজধানীর অর্ধেক মানুষ। ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত সীমিত পরিসরে অফিস-আদালত খুললেও তখনও বন্ধ থাকে সব ধরনের গণপরিবহন। তবে ১৫ জুনের পর থেকে করোনা সংক্রমণের মধ্যেই স্বাভাবিক হতে শুরু করে রাজধানীর জীবনযাত্রা।

১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এই ছুটি পাঁচ দফা দাড়িয়ে আগামী ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত করা হয়েছে।

সাধারণ ছুটির মধ্যে করোনা সংক্রমণ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনা গেলেও মে মাসের মাঝামাঝি থেকে সংক্রমণ ফের বাড়তে থাকে। ওই মাসের শেষের দিক থেকে রোগী শনাক্তের হার ২০ শতাংশের উপরে চলে যায়। আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত সেটি ২০ শতাংশের উপরে ছিল। এরপর থেকে হার কমতে থাকে। তবে নভেম্বর মাসজুড়ে সংক্রমণের হার ফের ঊর্ধ্বমুখী ছিল। ডিসেম্বরে এই হারে কিছুটা লাগাম পড়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, দেশে গত নয় মাসে করোনা শনাক্তের সংখ্যা প্রায় পাঁচ লাখে দাঁড়িয়েছে। এক দিনে এই ভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্তের সর্বোচ্চ সংখ্যা ছিল ২ জুলাই। ওই দিনে ৪ হাজার ১৯ জন শনাক্ত হন। করোনায় এরই মধ্যে মৃতের সংখ্যা সাত হাজার ছাড়িয়েছে।

প্রথম রোগী শনাক্ত

দেশে করোনাভাইরাসে প্রথম তিন জন শনাক্ত হন ৮ মার্চ। ওই দিন সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বর্তমান অতিরিক্ত মহাপরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। এ তিন জনের মধ্যে দুই জন ইতালি থেকে এসেছিলেন। তিন জনের মধ্যে দুই জন পুরুষ ও এক জন নারী। এই ভাইরাসে দেশে প্রথম মৃত্যুর খবর আসে ১৬ এপ্রিল। করোনা আক্রান্ত ৭০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি ছিলেন এক জন পুরুষ।

হাসপাতালে সুরক্ষা উপকরণ সংকট

করোনাভাইরাস আতঙ্কের মধ্যে চিকিৎসা সেবা নিয়ে প্রথম দিকে তৈরি হয় ব্যাপক সমন্বয়হীনতা। কিছুদিন যেতে না যেতেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে হাসপাতালে চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা উপকরণের সংকট দেখা দেয়। অনেক হাসপাতালে এই সংকটের কারণে বন্ধ হয়ে যায় চিকিৎসা সেবা।

অন্যান্য রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসাপ্রাপ্তির সুযোগও সংকুচিত হয়ে আসে। তবে পরে ধীরে ধীরে উন্নতি হয় পরিস্থিতির।

মহামারির মধ্যে করোনা পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট দেয়াসহ নানা অভিযোগে ৭ জুলাই সিলগালা করা হয় রিজেন্ট হাসপাতাল দুটি শাখাসহ রিজেন্ট গ্রুপের প্রধান কার্যালয়। প্রতারণার অভিযোগে ১৬ জুলাই গ্রেপ্তার করা হয় রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিমকে।

একই অভিযোগে জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরী ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আরিফুল হক চৌধুরী গ্রেপ্তার করা হয়।

জেকেজি হেলথ কেয়ার থেকে ২৭ হাজার রোগীকে করোনা টেস্টের রিপোর্ট দেয়া হয়েছিল। এর মধ্যে ১৫ হাজার ৪৬০ জনের ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করা হয়। অন্যদিকে নকল ও নিম্নমানের মাস্ক সরবরাহের কারণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জেএমআই হাসপাতাল রিক্যুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাককে ১৯ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বেড়েছে মানসিক চাপ

করোনায় বিশ্বব্যাপী বেড়েছে মানসিক সমস্যা। বাংলাদেশও এই সংকটের বাইরে নয়। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলছেন, ‘করোনার কারণে অনেকেই চাকরি হারিয়েছেন। অনেকের আয় কমে আসছে। অনেকে নিজের ব্যবসা হারিয়ে হতাশায় ভুগছেন। এ কারণে বিষণ্নতা ও মানসিক চাপ তৈরি হচ্ছে। তবে রোগী বাড়লেও চিকিৎসার বাইরে থাকছেন অনেকে।’

যুব সমাজের ওপর করোনার প্রভাব নিয়ে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডি জরিপ অংশ নেয়া ৮০ শতাংশ যুবক বলেছেন, তাদের আয় কমে গেছে। আর ৯৬ শতাংশ যুবক বলেছেন, তারা বিভিন্ন ধরনের মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। এর মধ্যে ৫৯ ভাগ জানান, তাদের মানসিক চাপ প্রকট। গ্রামের তুলনায় শহরের যুবকরা বেশি চাপে আছেন।

সৈকতের কাছাকাছি ডলফিন, তুরাগে শুশুক

লকডাউনে মানুষ ঘরের ভেতরে আটকে থাকলেও চাপমুক্ত ছিল পরিবেশ। এ সময়ে কক্সবাজার সৈকতের কাছে দেখা মিলছে ডলফিন-বিরল কচ্ছপের। বুড়িগঙ্গার পানি বেশ কিছুটা স্বচ্ছতা পেয়েছে, তুরাগে উঁকি দিচ্ছে শুশুক। রাজধানীর বাতাস ছিল অনেকটাই নির্মল, কম ছিল তাপমাত্রা।

এ বিভাগের আরো খবর