বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বণ্টন দুর্বল হলে টিকা যাবে ধনীদের হাতে

  •    
  • ২০ ডিসেম্বর, ২০২০ ১৯:৪২

অল্প সময়ের মধ্যে উদ্ভাবন করায় করোনা টিকার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অণুজীব বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল। এসব টিকা নিয়ে কেউ অসুস্থ হয়ে যায় কি না সেদিকে লক্ষ্য রাখার আহ্বান তার।

যথাযথভাবে বণ্টন ব্যবস্থাপনা এখনই গড়ে না তুললে করোনাভাইরাসের টিকা দেশে আসলে তা ধনীদের হাতে চলে যেতে পারে বলে শঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।

রোববার বিকাল তিনটায় এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত টিকা বিষয়ক ভার্চুয়াল সংলাপে এসব কথা বলেন তারা। দাবি তোলেন ন্যায্যতার ভিত্তিতে ও সাশ্রয়ী দামে সবার জন্য মানসম্পন্ন টিকা নিশ্চিতের।

বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারি কমার এখন পর্যন্ত জোরালো কোনো লক্ষ্যণ নেই। মৃতের সংখ্যা ১৭ লাখ ছুঁইছুঁই। পরিস্থিতির উন্নতি নেই বাংলাদেশেও। শনাক্ত ছাড়িয়েছে পাঁচ লাখ, মৃত্যু ছাড়িয়েছে সাত হাজার।

করোনা থেকে মুক্তি পেতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইসরায়েলসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটা দেশে টিকা দেয়া শুরু হয়েছে।

জানুয়ারির দিকে টিকা প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে ভারত। একই সময়ে টিকা দেয়া শুরু হতে পারে বাংলাদেশেও।

ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত করোনার টিকা আনার ব্যাপারে চুক্তি করেছে বেক্সিমকো ফার্মা। এ ছাড়া গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিন্স অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন্সের (গ্যাভি) মাধ্যমে আসবে ছয় কোটির বেশি টিকা।

এর মধ্যে বেক্সিমকোর টিকা যে কোনো সময় চলে আসতে পারে বলে জানালেন সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করা ব্র্যাকের সাবেক ভাইস চেয়ার ও নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক আহমদ মোশতাক রাজা চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তিন কোটি ডোজ টিকা কিনতে বেক্সিমকো এবং ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছে সেটার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। যেকোনো দিন এই ভ্যাকসিন আসতে পারে।’

মুশতাক রাজার মতে, টিকা সংক্ষরণ ও বিতরণ ব্যবস্থা ও ধারণ ক্ষমতা নিয়ে অনেক শঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া সরকার কেন্দ্রীয়ভাবে টিকা মজুদ নিয়ে যে চিন্তা করছে তারও সঠিক পরিকল্পনা থাকা দরকার। অবশ্য সবার টিকার প্রয়োজন কি না সে প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।

করোনা টিকার বিতরণের সঠিক ব্যবস্থাপনার তাগিদ দিয়ে ডা. অধ্যাপক রশিদ মাহবুব বলেন, ‘টিকা নিয়ে বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে। ক্ষমতাবানরা প্রথমে টিকা নিশ্চিত করতে চাইবেন। এক্ষেত্রে গরিব ও দরিদ্র মানুষ ভ্যাকসিন থেকে বঞ্চিত হতে পারে।’

সবার টিকার দরকার আছে কি না সে প্রশ্ন আনলেন এই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞও। বলেন, ‘প্রশ্ন হলো সবার কি টিকা দরকার? এটা আমাদের জানতে হবে। অ্যান্টিবডি টেস্টের মাধ্যামে এটা নিশ্চিত করা যায়। এই টেস্ট আগে নিশ্চিত করতে হবে। সরকার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না পারলে ভ্যাকসিন আসবে অবৈধ পথে।’

অল্প সময়ের মধ্যে উদ্ভাবন করায় করোনা টিকার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অণুজীব বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল। এসব টিকা নিয়ে কেউ অসুস্থ হয়ে যায় কি না সেদিকে লক্ষ্য রাখার আহ্বান তার।

তিনি বলেন, ‘ভ্যাকসিনের মান যাচায়ে মাত্র ১০ মাস সময় যথেষ্ট নয়, তাই আগামীতে যে ভ্যাকসিন আসবে সেটা অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ জন্য ভ্যাকসিন গ্রহণ করার পর কেউ অসুস্থ হয় কি না সেদিকে লক্ষ্য রাখতে পারবে। এমনকি এই ভ্যাকসিন নিয়ে কেউ অসুস্থ হলে মামলা করতে পারবেন।’

করোনার টিকা পেতে যাতে সমস্যা না হয় সেজন্য চার-পাঁচটি দেশের সঙ্গে চুক্তি করার মত দিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুমানা হক।

‘অন্য দেশের মতো আমাদেরও চার থেকে পাঁচটি দেশের সঙ্গে চুক্তি করতে হবে ভ্যাকসিন পেতে। সরকারের সঙ্গে বেসরকারি কোম্পানিও ভ্যাকসিন কিনতে পাবে এ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে অনেক ধনী লোক বিদেশ থেকে টিকা কিনবে অবৈধভাবে।’

টিকা বিষয়ে তথ্য সহজলভ্য করার পরামর্শ দিলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক রওনক জাহান। এক্ষেত্রে একটি ওয়েবসাইট করা যেতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

রওনক জাহান আরও বলেন, ‘দুইবার যেহেতু ভ্যাকসিন দিতে হবে সে কারণে অবশ্যই ডাটাবেজ তৈরি করতে হবে। গত ৯ মাসে আমার দেখেছি অনেক পরিকল্পনা করা হয়েছে তবে তার একটিও বাস্তাবায়ন করা হয়নি।’

এ বিভাগের আরো খবর