বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ছোট্ট শিশুর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে বাঁচল ৫ প্রাণ

  •    
  • ১৭ ডিসেম্বর, ২০২০ ১৮:৫২

বাবু যখন ‘ক্লিনিকালি ডেড’, সেই কঠিন সময়ে অন্যের জীবন বাঁচাতে সন্তানের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দান করার নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত দেন বাবা-মা। তাদের স্বপ্ন, জীবন্ত শরীরের মাঝেই প্রাণ হয়ে বেঁচে থাকবে তাদের আদরের সন্তান।

আড়াই বছরের ফুটফুটে শিশু জোশ ওঝা। বাবা-মার আদর করে দেয়া ডাকনাম ‘বাবু’।

সারা বাড়ি আনন্দে ভরিয়ে রাখা সেই বাবু ৯ ডিসেম্বর খেলতে যায় পাশের বাসায়। আর সেখানেই ঘটে মর্মান্তিক ঘটনা। দোতলার বারান্দা থেকে নিচে পড়ে যায় ছোট্ট শিশুটি। মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পেয়ে হারিয়ে ফেলে চেতনা।

ভারতের গুজরাটের সুরাট শহরের ভাতার এলাকায় বাবুর বাড়ি। দুর্ঘটনার পর স্বজনেরা তাকে ভর্তি করে পাশের অম্রুতা হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে ১৪ ডিসেম্বর মারা যায় বাবু।

বাবুর মৃত্যু হয়তো ছোট এক খবর হিসেবেই সংবাদমাধ্যমে জায়গা পেত, তবে বিশেষ এক কারণে শিশুটির জন্য এখন কাঁদছে গোটা দেশ। তাকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিভিন্ন জাতীয় সংবাদমাধ্যম।

প্রাণহীন বাবুর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে প্রাণ ফিরে পেয়েছে মৃত্যুর দোরগোড়ায় পৌঁছে যাওয়া পাঁচ শিশু-কিশোর। এর মধ্যে দুইজনের বাড়ি ভারতের বাইরে। এ ছাড়া, দৃষ্টি ফিরে পেয়েছে দুজন।

বাবু যখন ‘ক্লিনিক্যালি ডেড’, সেই সময়ে অন্যের জীবন বাঁচাতে সন্তানের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দান করার নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত দেন বাবা-মা। তাদের স্বপ্ন, জীবন্ত শরীরের মাঝেই প্রাণ হয়ে বেঁচে থাকবে তাদের আদরের সন্তান।

বাবুর হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন করা হয়েছে রাশিয়ার চার বছরের এক শিশুর দেহে। আর ফুসফুস পেয়েছে ইউক্রেনের চার বছরের আরেক শিশু। দুজনেই সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসার জন্য ভর্তি ছিল চেন্নাইয়ের এমজিএম হাসপাতালে।

বাবুর হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুস বিশেষ ব্যবস্থায় চেন্নাইয়ের এমজিএম হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে

মঙ্গলবার সফল অস্ত্রোপচারের পর সুস্থ আছে দুই শিশু। করোনা সংকট শুরুর পর সুরাট শহরে এটি দ্বিতীয়বার অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ঘটনা।

বাবুর দুটি কিডনি দান করা হয় আহমেদাবাদ ইন্সটিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারে। এর একটি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে সুরেন্দ্রনগরের ১৩ বছরের এক শিশুর দেহে। অন্যটি পেয়েছে সুরাট শহরের ১৭ বছরের এক কিশোরী।

আহমেদাবাদে দুই বছরের এক শিশুর জীবন রক্ষা পেয়েছে বাবুর যকৃতে। আর সুরাটের লোকদৃষ্টি চক্ষু কেন্দ্রে দান করা হয়েছে কর্নিয়া।

বাবুর বাবা সঞ্জিব ওঝা যখন সন্তানকে হারানোর বেদনায় কাতর তখন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গদানের কঠিন প্রস্তাবটি দেয় সুরাটভিত্তিক বেসরকারি সংস্থা ডোনেট লাইফ। তীব্র শোকের মধ্যেই এই প্রস্তাবে সায় দেন পেশায় সাংবাদিক সঞ্জিব। মা অর্চনা ওঝাও অন্যের মাঝে নিজের সন্তানকে খুঁজে পাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।

এর পরপরপরই ঠিক হয় গ্রহীতাদের নাম। বাবুর হৃদপিণ্ড ও ফুসফুস সুরাট থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে পাঠানো হয় ১ হাজার ৬১৫ কিলোমিটার দূরের এমজিএম হাসপাতালে। বাকিগুলোও প্রতিস্থাপন করা হয় খুব অল্প সময়ের মধ্যে।

এ বিভাগের আরো খবর