বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘ইরানে ১০০ বিক্ষোভকারীর সামনে ফাঁসির দড়ি’

  •    
  • ২৮ ডিসেম্বর, ২০২২ ২৩:৩৯

ইরান হিউম্যান রাইটসের (আইএইচআর) মঙ্গলবার প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এমন ১০০ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যাদের বিক্ষোভে জড়িত থাকার দায়ে অভিযুক্ত করেছেন কর্মকর্তারা। এসব ব্যক্তির পরিবার এবং সাংবাদিকদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই তালিকা করেছে মানবাধিকার সংগঠনটি।

ইরানে নারীর পোশাকের স্বাধীনতার দাবিতে চলা বিক্ষোভে জড়িত থাকার অভিযোগে অন্তত ১০০ জনকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে নরওয়ে-ভিত্তিক ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর)। মানবাধিকার সংগঠনটি বলছে, এই ১০০ জনের মধ্যে পাঁচজন নারী।

আইএইচআর সতর্ক করে বলেছে, মৃত্যুদণ্ডের ঝুঁকিতে থাকা বিক্ষোভকারীর সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। কারণ তথ্য গোপন রাখতে অনেক বিক্ষোভকারীর পরিবারকে প্রশাসন চাপ দিচ্ছে।

জাতীয় নিরাপত্তায় আঘাত হানার অভিযোগে বিপ্লবী আদালতের মাধ্যমে মোহসেন শেখারি এবং মাজিদ্রেজা রাহনাভার্ড নামে দুজনকে ইতোমধ্যে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই বিচারকে ‘শেইম ট্রায়াল’ অভিহিত করেছে।

গ্রেপ্তারের ২৩ দিনের মাথায় মাজিদ্রেজা রাহনাভার্ডের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়

ইরানে চলমান বিক্ষোভের শুরু ১৬ সেপ্টেম্বর। সেদিন দেশটির নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে ২২ বছরের এক তরুণীর মৃত্যু হয়। কুর্দি এই তরুণীর নাম মাহসা আমিনি। হিজাব ঠিকমতো না করার অভিযোগে ১৩ সেপ্টেম্বর রাজধানী তেহরান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

মাহসার পরিবারের অভিযোগ, পুলিশি নির্যাতনে মাহসা মারা গেছেন। তবে সরকার বলছে, পুরনো শারীরিক অসুস্থতায় মৃত্যু হয়েছে তার। সেদিন সন্ধ্যা থেকে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে ইরানে।

ইরান সরকার বিক্ষোভকে বিদেশি-সমর্থিত ‘দাঙ্গা’ বলে চিত্রিত করছে। বিক্ষোভ দমাতে ইরানের পুলিশ সরাসরি গুলি ছুড়তেও দ্বিধা করছে না।

ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) বলছে, বিক্ষোভে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৪৭৬ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৬৪ শিশু এবং ৩৪ নারী।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৬ সেপ্টেম্বর মারা যান মাহসা আমিনি

ইরান হিউম্যান রাইটসের মঙ্গলবার প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এমন ১০০ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যাদের বিক্ষোভে জড়িত থাকার দায়ে অভিযুক্ত করেছেন কর্মকর্তারা। এসব ব্যক্তির পরিবার এবং সাংবাদিকদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই তালিকা করেছে মানবাধিকার সংগঠনটি।

আইএইচআর জানায়, ‘আসামিদের নিজস্ব আইনজীবী, যথাযথ প্রক্রিয়া এবং ন্যায্যবিচারের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল।

‘আর যারা তাদের পরিবার কিংবা মানবাধিকার সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পেরেছেন তাদের সবাই জানিয়েছেন, মিথ্যা আত্ম-অপরাধমূলক স্বীকারোক্তিতে বাধ্য করতে তাদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে।’

শিগগিরই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হবে ২২ বছরের মোহাম্মদ ঘোবাদলুর। ইরানের সুপ্রিম কোর্ট শনিবার তার মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছে। সেপ্টেম্বরে তেহরানে বিক্ষোভের সময় পুলিশের দলের ওপর গাড়ি তুলে দিয়ে একজনকে হত্যা করার অভিযোগে দোষী প্রমাণিত হয়েছেন মোহাম্মদ।

মোহাম্মদ ঘোবাদলুর মৃত্যুদণ্ডের আদেশ বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট

মোহাম্মদের মা বলেন, ‘আমার ছেলে বাইপোলার ডিস-অর্ডারে ভুগছে। তার নির্বাচিত আইনজীবীদের বিচারের সময় আসতে দেয়া হয়নি। প্রথম অধিবেশনেই তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছিল।’

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, হেফাজতে মোহাম্মদকে ব্যাপক নির্যাতন করা হয়েছে। ফরেনসিক রিপোর্টে তার বাহু, কনুই ও কাঁধে ব্লেডের ক্ষত পাওয়া গেছে।

মৃত্যুদণ্ড পাওয়া পাঁচ নারীর একজন কুর্দি ভাষার শিক্ষক এবং মানবাধিকার কর্মী মোজগান কাভৌসি। আইএইচআর জানায়, তার বিরুদ্ধে ‘পৃথিবীতে দুর্নীতির’ অভিযোগ আনা হয়েছে।

গত সপ্তাহে সারি শহরে কাভৌসির বিচার শুরু হয়। সেদিন এক প্রসিকিউটর কাভৌসিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টের মাধ্যমে মানুষকে বিভ্রান্ত করার দায়ে অভিযুক্ত করেন বলে জানা গেছে।

আইএইচআর পরিচালক মাহমুদ আমিরি মোগদ্দাম বলেন, ‘মৃত্যুদণ্ড দিয়ে এবং তাদের মধ্যে কয়েকজনের তা কার্যকর করে ইরান সরকার লোকজনকে বাড়ি পাঠাতে চাচ্ছে।

‘আমরা লক্ষ্য করেছি, এতে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ আরও বাড়ছে।’

বিক্ষোভে জড়িত থাকার অভিযোগে ইরানের বিপ্লবী গার্ড কয়েকজন ব্রিটিশ-ইরানিয়ান দ্বৈত নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্য। এসব নাগরিকের তথ্য দিতে এখন তেহরানকে চাপ দিচ্ছে লন্ডন।

ডাউনিং স্ট্রিটের এক মুখপাত্র বলেন, ‘কূটনৈতিক সুবিধার জন্য আমাদের নাগরিকদের ব্যবহার করা হবে- এটা আমরা কখনই মেনে নেব না।’

এদিকে ফ্রান্স সরকার বলছে, তারা সোমবার গভীর রাতে লিওনের রোন নদীতে পাওয়া এক ইরানি ব্যক্তির মৃত্যুকে আত্মহত্যা ধরে তদন্ত করছে।

মোহাম্মদ মোরাদি নামে ওই ব্যক্তির বয়স ৩৮। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি বলেছিলেন, ইরানে ক্র্যাকডাউনের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করাতে তিনি আত্মহত্যা করতে চলেছেন।

হিজাব ছাড়াই কাজাখস্তানে একটি টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছেন সারা খাদেম

এদিকে শীর্ষ ইরানি দাবা খেলোয়াড় সারা খাদেম দ্বিতীয় দিনের মতো হিজাব ছাড়াই কাজাখস্তানে একটি টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছেন। হিজাব খুলে ফেলা ইরানে নারী নেতৃত্বাধীন প্রতিবাদ আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশের ইঙ্গিত।

ইরানের আইনে সরকারিভাবে বিদেশে দেশের প্রতিনিধিত্ব করার সময় নারীদের পোশাক কোড মেনে চলা বাধ্যতামূলক।

এ বিভাগের আরো খবর