সংজ্ঞার পরিধি বিস্তৃত করে সম্মতিহীন সব ধরনের যৌন সম্পর্ককে ধর্ষণ হিসেবে গণ্য করতে প্রস্তাবিত একটি আইনের পক্ষে ভোট দিয়েছেন সুইজারল্যান্ডের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল কাউন্সিলের আইনপ্রণেতারা।
বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়, স্থানীয় সময় সোমবার আইনটির পক্ষে ভোট দেন ৯৯ জন আইনপ্রণেতা; বিপক্ষে ভোট দেন ৮৮ জন। ভোট দেননি তিন আইনপ্রণেতা।
ইউরোপের দেশটির বিদ্যমান আইন অনুযায়ী, কোনো নারীর সঙ্গে জোরপূর্বক যৌন সঙ্গমকে ধর্ষণ হিসেবে গণ্য করা হয়।
দেশটির নাগরিকদের অনেকেই মনে করেন, ধর্ষণের এ সংজ্ঞায় পরিবর্তন আনা দরকার। তাদের মতে, ভুক্তভোগীর জেন্ডার যাই হোক না, সম্মতিহীন যেকোনো শারীরিক সম্পর্ককে ধর্ষণের সংজ্ঞাভুক্ত করতে হবে।
সুইজারল্যান্ডে সম্মতির মাত্রা নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক রয়েছে। এমন বাস্তবতায় না বলার পর শারীরিক সম্পর্ককে ধর্ষণ হিসেবে গণ্য করতে আইন উত্থাপন করা হয় পার্লামেন্টে।
আইনটি পাস হতে পার্লামেন্টের দুই কক্ষেরই ঐকমত্যে পৌঁছাতে হবে। দুই কক্ষ একমত হওয়ার পরও আইনটি নিয়ে জনগণের ভোট নিতে পারে সরকার।
প্রস্তাবিত আইনের বিষয়ে পার্লামেন্টের সোশ্যালিস্ট দলের সদস্য তামারা ফুনিসিলো এটিএস নিউজকে বলেন, ‘প্রতিবেশীর অনুমতি ছাড়া তার ওয়ালেট থেকে আপনি টাকা নেন না। কলিংবেল না বাজিয়ে কারও ঘরে প্রবেশ করেন না। তাহলে আমার ওয়ালেট ও ঘর কেন আমার দেহ থেকে বেশি সুরক্ষিত থাকবে?’
গ্রিনস এমপি রাফায়েল মাহিম এ বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেন, ‘অন্যের শরীর কোনো খোলা বার নয়।’
পার্লামেন্টের অনেক সদস্য এ মতের বিরোধিতা করে বলেন, ‘এ চিন্তা মানুষের মধ্যে দ্বিধা সৃষ্টি করবে এবং এর চর্চা কঠিন হবে।’
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এ ভোটকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, পাস হলে আইনটি নারীকে যৌন সহিংসতা থেকে বাঁচাতে ভূমিকা রাখবে।
সংস্থাটি আরও জানায়, স্পেন, সুইডেন, ডেনমার্ক, বেলজিয়ামসহ ইউরোপের অনেক দেশ সম্মতিহীন যৌন সম্পর্ককে ধর্ষণ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করে আসছে।