বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ইরানে নৈতিকতা পুলিশের বিলুপ্তি নিয়ে ধূম্রজাল

  •    
  • ৫ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৮:০২

ইরানের রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং অধিকারকর্মীরা সোমবারের প্রকাশিত খবর নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ এটিকে ইরানের জাতীয় ছাত্র দিবস ঘিরে ঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচি বানচালে শাসকদের চক্রান্ত বলে বর্ণনা করেছেন। আগামী বুধবার ইরানের জাতীয় ছাত্র দিবস।

ইরানের নৈতিকতা পুলিশের বিলুপ্তি নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশের এই বিভাগের হেফাজতে এক তরুণীর মৃত্যুর পর ইরানজুড়ে যে তীব্র প্রতিবাদ শুরু হয়েছে তা সামলাতে সোমবার নৈতিকতা পুলিশকে বিলুপ্তির কথা জানান দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল।

ইরানে পুলিশের এই বিভাগটি ‘গশত-ই-এরশাদ’ নামে পরিচিত। ইসলামিক শাসনের দেশটিতে বিদ্যমান কঠোর পোশাকবিধি অমান্যকারীদের আটক করে ব্যবস্থা নেয়ার দায়িত্ব এই নৈতিকতা পুলিশের ওপর। ইরানের সাবেক কট্টরপন্থি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদের শাসনামলে বাহিনীটি গঠন করা হয়েছিল।

অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মাদ জাফর মোনতাজেরি বলেছিলেন, গশত-ই-এরশাদ নামে পরিচিত নৈতিকতা পুলিশের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। পোশাকবিধির বিষয়টি পর্যালোচনা করা হবে।

নৈতিকতা পুলিশ ব্যবস্থা কার্যকর আছে কি না, তা স্পষ্ট হওয়ার জন্য রোববার জানতে চাইলে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমিরাবদুল্লাহিয়ান সরাসরি উত্তর দেননি।

সার্বিয়ার বেলগ্রেডে সফরে থাকা আমিরাবদুল্লাহিয়ান বলেছিলেন, ‘ইরানে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা নিয়ে কোনো আপস হয় না। এটা নিয়ে সন্দেহের কোনো সুযোগ নেই। সবকিছু খুব ভালোভাবে চলছে।’

সেপ্টেম্বরে ইরানের রাজধানী তেহরানে ২২ বছরের এক তরুণীকে গ্রেপ্তার করে নৈতিকতা পুলিশ। মাহসা আমিনি নামের ওই তরুণীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি সঠিকভাবে হিজাব করেননি। ১৬ সেপ্টেম্বর হেফাজতে থাকা অবস্থায় মাহসার মৃত্যু হয়। সেদিন সন্ধ্যা থেকে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে ইরানের জনগণ। নারীর পোশাকের স্বাধীনতার দাবিতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে গোটা ইরানে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৬ সেপ্টেম্বর মারা যান মাহসা আমিনি

সোমবার সকাল পর্যন্ত নৈতিকতা পুলিশের দায়িত্বে থাকা ইরানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কার্যক্রম স্থগিত করার কোনো নিশ্চিতকরণ পাওয়া যায়নি।

ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, নৈতিকতা পুলিশ বাহিনীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মনতাজেরি বা সরকারের বিচার বিভাগীয় শাখার নেই।

ইরানের রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং অধিকারকর্মীরা সোমবারের প্রকাশিত খবর নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ এটিকে ইরানের জাতীয় ছাত্র দিবস ঘিরে ঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচি বানচালে শাসকদের চক্রান্ত বলে বর্ণনা করেছেন। আগামী বুধবার ইরানের জাতীয় ছাত্র দিবস।

তেহরানে একটি ম্যুরালের পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন এক নারী

টনি ব্লেয়ার ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল চেঞ্জের ইরানের প্রোগ্রামের প্রধান কাসরা আরাবি টুইটারে বলেছেন, “ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনির শাসন ‘নৈতিকতা পুলিশ’ বিলুপ্ত করেছে এমন প্রতিবেদনগুলো ভুয়া খবর।

“ইরানে আগামীকাল থেকে শুরু হওয়া তিন দিনের বড় বিক্ষোভ থেকে মিডিয়ার মনোযোগকে বিভ্রান্ত করার জন্য এই বিভ্রান্তিমূলক প্রচার চালানো হয়েছে। কেন মূলধারার মিডিয়া এই প্রসঙ্গ উপেক্ষা করল?”

Reports that Khamenei’s regime has abolished the “morality police” are fake news (even regime now denies it). This disinfo was propagated today to distract media attention from the 3 days of major protests in #Iran which begin tomo. Why did mainstream media ignore this context?

— Kasra Aarabi (کسری اعرابی) (@KasraAarabi) December 4, 2022

আরব উপদ্বীপের সঙ্গে সম্পর্কের জন্য ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধিদলের চেয়ারওম্যান হান্না নিউম্যান রোববার প্রতিবেদনগুলোকেকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

নিউম্যান টুইটে লেখেন, “ইরান সরকারের ‘নৈতিকতা পুলিশ’-এর বিল্পপতি ঘোষণা করা ছিল একটি জনসংযোগ স্টান্ট। মৃত্যুদণ্ড, নির্বিচারে আটক এবং ধর্ষণ আজও দুঃখজনক বাস্তবতা।"

#ServiceTweet: #Iran|ian Regime announcing the end of “morality police” is a PR Stunt.#Executions, arbitrary #detention and #rape are the sad reality, also today. So, I hope the latter will make it into our main news channels every day.

— Hannah Neumann (@HNeumannMEP) December 4, 2022

তেহরান নৈতিকতা পুলিশের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে…এ খবর যেদিন অ্যাটর্নি জেনারেল মনতাজেরি জানিয়েছিলেন, সেদিন পার্লামেন্টে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। কঠোর পোশাকবিধি শিথিল করতে সংবিধান পরিবর্তনে সংস্কারবাদী এবং বিক্ষোভকারীদের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেন স্পিকার মোহাম্মদ গালিবাফ।

গালিবাফ শনিবার বলেছিলেন, ‘দেশে সংবিধান ছাড়া আমাদের আর কোনো বৈধ দলিল নেই। একটি নতুন শাসনের জন্য আলোচনায় আমাদের ফোকাস সংবিধান বাস্তবায়নের দিকে থাকা উচিত, বিধান পরিবর্তনের দিকে নয়।’

ইরানের সংবিধান সংস্কারের দাবিকে দুই-তৃতীয়াংশ আইনপ্রণেতা সমর্থন করলে অথবা সর্বোচ্চ নেতা খামেনি অনুরোধ করলে, গণভোটের আয়োজন করতে হবে।

রাষ্ট্রীয় ধর্মের মতো ইরানের ‘অ-সংশোধনযোগ্য নীতি’ ছাড়া যেকোনো বিষয়ে গণভোটের সুযোগ হয়েছে ইরানের সংবিধানে।

এ বিভাগের আরো খবর