নারীর পোশাকের স্বাধীনতার দাবিতে ইরানে চলা বিক্ষোভের মুখে দেশটির নৈতিকতা পুলিশ বিভাগকে বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে সরকার। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে রোববার এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
সঠিকভাবে হিজাব না করার অভিযোগে ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যু হয় গত ১৬ সেপ্টেম্বর। এ ঘটনায় ক্রমান্বয়ে গোটা ইরানে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।ইরানের অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মাদ জাফর মোনতাজেরি বলেন, ‘বিচার বিভাগের সঙ্গে নৈতিকতা পুলিশের কোনো সম্পর্ক নেই। এই বিভাগকে বিলুপ্ত করা হয়েছে।’
একটি ধর্মীয় সম্মেলনে যোগ দিয়ে মোনতাজেরি এমনটি জানান বলে জানিয়েছে ইরানের বার্তা সংস্থা আইএসএনএ। সেখানে একজন অংশগ্রহণকারী ‘কেন নৈতিকতা পুলিশ বাতিল করা হচ্ছে’ জানতে চাইলে ইরানের অ্যাটর্নি জেনারেল ওই মন্তব্য করেন। ইরানে নৈতিকতা পুলিশ গাশত-এ এরশাদ নামে পরিচিত। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদের সময়ে সঠিকভাবে হিজাব করা এবং ইরানের সংস্কৃতি ছড়িয়ে দেয়ার জন্য দেশটিতে ২০০৬ সালে নৈতিকতাবিষয়ক পুলিশ তাদের কার্যক্রম শুরু করে।
ইরানে বিদ্যমান কঠোর পোশাকবিধি অমান্যকারী ব্যক্তিদের আটক করে ব্যবস্থা নেয়ার দায়িত্বে ছিল নৈতিকতা পুলিশ
এর আগে শনিবার ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ভাষণে বলেন, ‘ইরানের প্রজাতন্ত্র ও ইসলামিক ভিত্তি সাংবিধানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত। তবে সংবিধান বাস্তবায়নের পদ্ধতি নমনীয় করা হতে পারে।’
- আরও পড়ুন: ইরানি শাসকরা কি পতনের মুখে?
যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত রাজতন্ত্রকে উৎখাত করার মাধ্যমে ১৯৭৯ সালের ইরানে ইসলামি বিপ্লব ঘটে। এ বিপ্লবের চার বছর পর ইরানে হিজাব বাধ্যতামূলক করা হয়।
১৬ সেপ্টেম্বর নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনীর মৃত্যুর প্রতিবাদে শুরু হওয়া আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীসহ তরুণ-তরুণীরা। ২০০৯ সালের প্রতিবাদ আন্দোলনের পর ইরানের শাসনের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে চলমান বিক্ষোভ।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৬ সেপ্টেম্বর মারা যান মাহসা আমিনি
মাহসার মৃত্যুর পর থেকেই উত্তাল ইরান। ফেসবুক ও টুইটারে #mahsaamini এবং #Mahsa_Amini হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে চলছে প্রতিবাদ। দেশটির বিভিন্ন জায়গায় নারীর পোশাকের স্বাধীনতার পক্ষে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ চলছে নিরাপত্তা বাহিনীর।