হিজাব নিয়ে ভারতের কর্ণাটকের পর এবার পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া জেলার একটি স্কুলের ছাত্রদের মধ্যে গন্ডগোল হয়েছে। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এ ঘটনার জেরে দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর টেস্ট পরীক্ষা বাতিল করে দেয়া হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত সোমবার। হাওড়ার ধুলাগড়ি আদর্শ বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির কিছু ছাত্র আচমকা দশম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রীদের হিজাব পরে স্কুলে আসা নিয়ে আপত্তি তোলে। তাদের ভাষ্য, ‘ছাত্রীরা যদি হিজাব পরে স্কুলে আসে, তবে আমরাও নামাবলী গায়ে দিয়ে স্কুলে আসব।’
স্কুল কর্তৃপক্ষের নিষেধ সত্ত্বেও মঙ্গলবার ওই ছাত্ররা নামাবলী পরে স্কুলে যায়। এতে হিজাব পরা কয়েকজন ছাত্রী প্রতিবাদ জানায়। এরপর দুপক্ষের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়। পরে সাঁকরাইল থানার পুলিশ এসে পরিস্থিতির সামাল দেয়।
স্কুলের টিচার ইনচার্জ অরিন্দম মান্না অবশ্য স্কুলে ভাঙচুর বা মারপিটের ঘটনা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘সোমবার কয়েকজন নামাবলী গায়ে দিয়ে স্কুলে আসে। তাদেরকে নিষেধ করলে তারা তা খুলে ফেলে।
‘স্কুলের পরীক্ষা শেষ হয়ার পর জরুরি বৈঠক হয়। এতে ধর্মীয় পোশাক পরে স্কুলে আসতে নিষেধ করা হয়। সেই সিদ্ধান্ত ছাত্র-ছাত্রীকে জানিয়ে দেয়া হয়। তবে মঙ্গলবার ফের ৫ জন ছাত্র নামাবলী গায়ে দিয়ে স্কুলে আসে। এতে অন্য সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীরা আপত্তি জানায়।
‘এরপর দুপক্ষের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়। পুলিশে খবর দেয়া হলে তারা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এদিন দশম, একাদশ, দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস পরীক্ষা বাতিল করা হয়।’
অরিন্দম মান্না আরও বলেন, ‘শনিবার এ বিষয়ে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে একটি সভা ডাকা হয়েছে। সেখানে স্কুল কর্তৃপক্ষ, অভিভাবক, পুলিশ প্রশাসন, ব্লক আধিকারিক এবং স্কুলের জেলা পরিদর্শক মিলে আলোচনা পর স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
কয়েক মাস আগে কর্নাটকের স্কুলে হিজাব পরা নিয়ে মামলা হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্টে যায়। দেশের উচ্চ আদালতে মামলার রায়ে বলা হয়, শিক্ষাঙ্গনে হিজাব পরা নিয়ে কোঙও নিষেধাজ্ঞা নেই। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব পরা মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে না।