মেয়েরা চাইলে অনেক কিছু করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন সাফজয়ী নারী ফুটবল টিমের সদস্য মারিয়া মান্ডা।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে মেয়েরা ফুটবল খেলবে হাফ প্যান্ট পরে, এটা মানুষ মেনে নিতে পারেনি। কিন্তু আমরা সেগুলো অতিক্রম করে খেলা চালিয়ে গেছি। বাংলাদেশকে একটা ট্রফি এনে দিয়েছি। এজন্য আমরা গর্বিত। মেয়েরাও পারে সেটা কিন্তু আমরা দেখিয়ে দিয়েছি।’
আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবস উপলক্ষে ‘নো পাসপোর্ট ভয়েস’ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সাফজয়ী এই ফুটবলার নিজেদের অদম্য অভিযাত্রার গল্প শোনান। রাজধানীর ধানমন্ডির ইএমকে সেন্টারে এ অনুষ্ঠান হয়।
২০১১ সাল থেকে প্রতিবছর ১১ অক্টোবর পালন করা হচ্ছে আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবস।
অনুষ্ঠানে মারিয়া মান্ডা ছাড়াও জাতীয় ফুটবল দলের সদস্য আকলিমা খাতুন, সাহেদা আক্তার ও আফিদা খন্দকার উপস্থিত ছিলেন।
২০১১ সালে প্রাইমারি স্কুলে ফুটবল খেলা শুরু করেন জানিয়ে মারিয়া মান্ডা বলেন, ‘কলসিন্দুর প্রাইমারি স্কুল থেকে আমাদের খেলা শুরু। যখন বলে লাথি দেয়া শুরু করি তখন থেকেই দেখেছি এটা আমার ভালো লাগে। ওখানে ভালো করার পর ২০১৫ সালে জাতীয় দলে সুযোগ পাই। তারপরে অনুর্ধ্ব ১৪ চ্যাম্পিয়ন হই।
‘সেখান থেকেই আমাদের আগ্রহটা বাড়তে থাকে। তারপর আমাদের মনে হয়েছে দেশের কিছু একটা করতে চাই বা করব সেটা আমাদের মনের মধ্যে ছিল। আমাদের কিরণ ম্যাডাম ও সালাহউদ্দিন স্যার- ওনাদের অনেক অবদান ছিল সাফ জয়ের পেছনে।’
পরিবার সব সময় পাশে থেকেছে জানিয়ে মারিয়া বলেন, ‘আমি অনেক সময় অলসতা করতাম খেলাধুলায়। আমার মা সব সময় আমাকে উদ্বুদ্ধ করতেন।’
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) উইমেন্স উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আমরা অনেক প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েছি। এখন কিছুটা হলেও পরিবর্তন এসেছে। নারীর এই ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার জন্য আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই।’
অনুষ্ঠানে নারী নেত্রী ফৌজিয়া খন্দকার ইভা বলেন, ‘পথটি আসলে কঠিন। সহজ করে নিতে হবে। মেয়েরা অনেক সৃজনশীল। তার মেধা, তার অভিজ্ঞতা সৃজনশীল করে তুলছে। নারীরা যখন অর্জন করছে তখন পুরো পৃথিবী আমাদের দিকে তাকাচ্ছে।’
নারী ফুটবলাররা তৃণমূল থেকে উঠে এসেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মেয়েরা শুধু খেলাধুলা নয়, সব জায়গায় ভালো করছে। পথটা আমরা তৈরি করব। আমরা প্রমাণ করেছি পর্বতে উঠতে পারি। ট্রেন চালাতে পারি। ফুটবলার হতে পারি।’
সমতা নিশ্চিতে পরিবারের অনেক দায়িত্ব রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ছেলে সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে মেয়ে সন্তানের বৈষম্য দূর করতে হবে। এটি দূর করতে হলে একটু বেশি দিতে হবে। অসমতার জায়গা দূর করতে হবে।’