বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ইরানে চলমান বিক্ষোভে ‘সংহতি লর্ড অফ দ্য রিং’ তারকার

  •    
  • ৬ অক্টোবর, ২০২২ ০৯:৫৪

ইরানে পোশাকের স্বাধীনতার দাবিতে চলমান বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা দেড় শ ছাড়িয়েছে। বিশ্বের অনেক দেশেই এই বিক্ষোভকে সমর্থন জানিয়ে সমাবেশ হচ্ছে। লস অ্যাঞ্জেলসে প্রায় ২০ হাজার মানুষের তেমন এক সমাবেশে ইরানি বংশোদ্ভূত হলিউড তারকা নাজানিন বোনাইদি নেতৃত্ব দিয়েছেন। জানিয়েছেন, ইরানি বিক্ষোভকারী নারীদের প্রতি সংহতি। বিশ্বনেতাদের প্রতি দাবি জানিয়েছেন আরও বেশি কিছু করার।

নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইরানে পোশাকের স্বাধীনতার দাবিতে চলমান বিক্ষোভের প্রতি সংহতি জানালেন ইরানি বংশোদ্ভূত হলিউড তারকা ‘লর্ড অফ দ্য রিং: দ্য রিংস অফ পাওয়ার’-এর অভিনেত্রী ও অ্যাকটিভিস্ট নাজানিন বোনিয়াদি।

লস অ্যাঞ্জেলসে রয়টার্সের সঙ্গে আলাপকালে চলমান বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনী যখন কঠোরভাবে তা দমন করছে উল্লেখ করে বোনিয়াদি ইরানি নারীদের রক্ষা করার জন্য ও ইরানি কর্তৃপক্ষকে জবাবদিহি করাতে বিশ্বনেতাদের আরও বেশি কিছু করার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, আমাদের অধিকার আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নেয়া, আমাদের স্বাধীনতার নাজুক পরিস্থিতি, ইরানে হেফাজতে (নৈতিকতা পুলিশের) মাহসা আমিনির মৃত্যু বা হত্যা আমাদের অনুভূতির সব কিছুর কেন্দ্রে আঘাত করেছে।

‘সুতরাং এটি একটি ছন্দে আঘাত করেছে। বিশ্বব্যাপী মানুষ অনুধাবন করতে পারে যে যদি আপনার কাছ থেকে (অধিকার) কেড়ে নেয়া হয়, তবে কেমন লাগে? বিশেষ করে আমি মনে করি, নারী অধিকার।

ইরানি বিক্ষোভকারীদের সমর্থনে আয়োজিত এক র‍্যালিতে বক্তব্য রাখছেন নাজানিন বোনাইদি

তিনি একই সঙ্গে উল্লেখ করেন, নারীরাই এখন সামনের সারিতে রয়েছে। তাদের হত্যার শিকার ও কারারুদ্ধ হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এরপরও তারা তা (বিক্ষোভ) করছে।

শনিবার বোনিয়াদি ইরান সরকারের বিরুদ্ধে লস অ্যাঞ্জেলসে এক বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেন। আয়োজকরা জানান, সে বিক্ষোভে ২০ হাজার মানুষ সমর্থন জানাতে আসে।

তবে এ ধরনের বিক্ষোভ শুধু আমেরিকায় নয়, কানাডাসহ ইউরোপের অনেক দেশে হচ্ছে।

অ্যামাজনের সেটে সহশিল্পীর সঙ্গে নাজানিন বোনাইদি

নাজানিন বোনিয়াদির পরিবার ইরানেই থাকত। যখন তার বয়স মাত্র ২০ দিন, তখন তার পরিবার ইরান থেকে পালিয়ে যায়। আমিনির মৃত্যুর পর একজন অ্যাকটিভিস্ট হিসেবে তাকে বেশ সোচ্চার ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে।

এদিকে মঙ্গলবার চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে ইসলামি প্রজাতন্ত্রের দুর্বলতা ও সীমাবদ্ধতা তিনি স্বীকার করে নেন। যদিও চলমান বিক্ষোভ পশ্চিমা ইন্ধনে বলে আবারও দাবি করেছেন তিনি। জাতীয় ঐক্য গঠনের মাধ্যমে শত্রুদের নিরাশ করার আহ্বান জানান তিনি।

এর আগে কুর্দি নারী মাহসা আমিনিকে গত ১৩ সেপ্টেম্বর তেহরানের ‘নৈতিকতা পুলিশ’ গ্রেপ্তার করে। ইরানের দক্ষিণাঞ্চল থেকে তেহরানে ঘুরতে আসা মাহসাকে একটি মেট্রো স্টেশন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি সঠিকভাবে হিজাব করেননি।

পুলিশ হেফাজতে থাকার সময়েই মাহসা অসুস্থ হয়ে পড়েন, এরপর তিনি কোমায় চলে যান। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৬ সেপ্টেম্বর তার মৃত্যু হয়। পুলিশ মাহসাকে হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করলেও পরিবারের অভিযোগ গ্রেপ্তারের পর তাকে পেটানো হয়।

মাহসার মৃত্যুর পর রাস্তায় বিক্ষোভের পাশাপাশি ফেসবুক ও টুইটারে #mahsaamini এবং #Mahsa_Amini হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে চলছে প্রতিবাদ।

ইরানে ১৯৭৯ সালের ইসলামিক বিপ্লবের পরই নারীদের জন্য হিজাব বাধ্যতামূলক করা হয়। দেশটির ধর্মীয় শাসকদের কাছে নারীদের জন্য এটি ‘অতিক্রম-অযোগ্য সীমারেখা’। বাধ্যতামূলক এই পোশাকবিধি মুসলিম নারীসহ ইরানের সব জাতিগোষ্ঠী ও ধর্মের নারীদের জন্য প্রযোজ্য।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৬ সেপ্টেম্বর মারা যান মাহসা আমিনি

হিজাব আইন আরও কঠোরভাবে প্রয়োগের জন্য চলতি বছরের ৫ জুলাই ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি একটি আদেশ জারি করেন। এর মাধ্যমে ‘সঠিক নিয়মে’ পোশাকবিধি অনুসরণ না করা নারীদের সরকারি সব অফিস, ব্যাংক এবং গণপরিবহনে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় গত জুলাইয়েও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে #no2hijab হ্যাশট্যাগ দিয়ে শুরু হয় প্রতিবাদ। দেশটির নারী অধিকারকর্মীরা ১২ জুলাই সরকারঘোষিত জাতীয় হিজাব ও সতীত্ব দিবসে প্রকাশ্যে তাদের বোরকা ও হিজাব সরানোর ভিডিও পোস্ট করেন।

এ বিভাগের আরো খবর