হিজাব ইস্যুতে গ্রেপ্তার তরুণীর পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় উত্তাল ইরান। প্রতিবাদে দেশটির বিভিন্ন স্থানে চলছে বিক্ষোভ। আর তা দমতে পুলিশ হয়ে ওঠছে সহিংস, ঘটছে প্রাণহানি।
টালমাটাল এমন অবস্থার মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরপাক খাচ্ছে কিছু ভিডিও; যার একটিতে দেখা যায়, পুলিশের একটি গাড়িতে হামলা চালাচ্ছে বিক্ষুব্ধরা।
ইরানের চলমান বিক্ষোভের খবর প্রচার করা টুইটার হ্যান্ডেল @1500tasvir -এ শেয়ার করা ভিডিওটিতে দেখা যায়, তেহরানে পুলিশের একটি গাড়ির জানালার কাঁচ ভেঙে দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। তারপর গাড়িটিকে উল্টে দেয়ার চেষ্টা করছে তারা।
Watch: Protesters in #Iran’s capital, Tehran, attempt to flip over a police car as anti-government demonstrations sparked by the death of #Mahsa_Amini intensify.#MahsaAmini https://t.co/2YKfk92x9e pic.twitter.com/v6e1BvN8Vr
— Al Arabiya English (@AlArabiya_Eng) September 20, 2022টুইটারে শেয়ার হওয়া আরেকটি ভিডিও-তে দেখা যায়, বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ব্যবহার করছে পুলিশ। পরে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংগর্ষে জড়িয়ে পরে তারা। এ সময় বিক্ষোভকারীরা ‘আমরা লড়ব, আমরা মরব, আমরা আগের ইরানকে ফিরিয়ে আনব- শ্লোগানে দিতে থাকে।
Watch: Protesters in #Iran’s capital, Tehran, throw objects at a water cannon deployed by riot police as anti-government demonstrations sparked by the death of #Mahsa_Amini intensify.#MahsaAmini https://t.co/W6eQRLXOJ8 pic.twitter.com/bKDfRmW6eK
— Al Arabiya English (@AlArabiya_Eng) September 20, 2022আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, ইরানের উত্তরাঞ্চলীয় শহর রাশত এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর মাশহাদসহ বিভিন্ন অংশে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে।
যদিও দুবাইভিত্তিক সৌদি সংবাদ সংস্থা আল আরাবিয়া ভিডিওগুলোর সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি।
এর আগে সোমবার ইরানের কুর্দিস্তান প্রদেশের দিভান্ডারেহে বিক্ষোভকারী ও নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। অসমর্থিত রিপোর্ট অনুযায়ী, নিরাপত্তা বাহিনী দিভান্ডারেহে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালিয়েছে।
২২ বছর বয়সী কুর্দি ইরানি নারী মাহসা আমিনিকে শুক্রবার মৃত ঘোষণা করার পর পর বিক্ষোভ শুরু হয়। ১৩ সেপ্টেম্বর তেহরানে হিজাবের কারণে ‘নৈতিকতা পুলিশ’ তাকে আটকের পর কোমায় চলে গিয়েছিলেন আমিনি।
তেহরান পুলিশ বলছে, বন্দী অবস্থায় আমিনির ‘হঠাৎ হৃদযন্ত্রের সমস্যা’ হয়েছিল। রাষ্ট্র-চালিত আউটলেটগুলি দাবি করছে, গ্রেপ্তারের আগে একাধিক স্বাস্থ্যগত সমস্যায় ভুগছিলেন আমিনি।
তবে আমিনির বাবা-মা বলছেন, আটক হওয়ার আগে তাদের মেয়ের কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা ছিল না। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, আমিনিকে আটক করার সময় মারধর করা হয়েছিল, এতে তার মৃত্যু হয়।
ইরানে ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পরই নারীদের জন্য হিজাব বাধ্যতামূলক করা হয়। ইরানের ধর্মীয় শাসকদের কাছে নারীদের জন্য এটি ‘অতিক্রম-অযোগ্য সীমারেখা’। বাধ্যতামূলক এই পোশাকবিধি মুসলিম নারীসহ ইরানের সব জাতিগোষ্ঠী ও ধর্মের নারীদের জন্য প্রযোজ্য।
এই পোশাকবিধি অনুযায়ী নারীদের জনসমক্ষে চুল সম্পূর্ণভাবে ঢেকে রাখতে হয় এবং লম্বা, ঢিলেঢালা পোশাক পরা বাধ্যতামূলক। আর বিষয়টি নিশ্চিতের দায়িত্ব রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ শাখা- নৈতিকতা পুলিশের ওপর।