গত আগস্টে তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর দেশটির মেয়েরা মাধ্যমিক ও উচ্চস্তরের শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে যেখানে মেয়েরা স্কুলগুলোতে ফিরতে পারছে না, সেখানে কান্দাহারের একটি মেডিক্যাল ইনস্টিটিউটের ভর্তি পরীক্ষায় ৩০০ মেয়ে অংশগ্রহণ করেছেন।
টোলো নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার কান্দাহারের একটি বেসরকারি মেডিক্যাল ইনস্টিটিউটে স্নাতক শ্রেণিতে পড়ার জন্য ৩০০ মেয়েসহ ৮০০ শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন।
প্রতিষ্ঠানটিতে ফার্মেসি, ল্যাবরেটরি, নার্সিং, ধাত্রীবিদ্যা, ডেন্টাল প্রস্থেটিক বিষয়ে কোর্স রয়েছে।
পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা কান্দাহারের একজন ছাত্রী সাকিনা বলেন, ‘আমি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পেরে উচ্ছ্বসিত এবং আমি জনগণের সেবা করতে চাই।’
শামসিয়া নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি এখানে আসতে পেরে আনন্দিত এবং আমি ভবিষ্যতে আমার গ্রামের লোকদের সেবা করতে চাই।’
এদিকে ইনস্টিটিউটের শিক্ষকরা ভবিষ্যতে মেয়েদের জন্য মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্তরের শিক্ষাব্যবস্থা পুনরায় চালু করতে বলেছেন।
যদিও তালেবান বারবার বলে আসছে যে তারা মাধ্যমিক স্তরে মেয়েদের শিক্ষার সুযোগ দিতে চায়, কিন্তু ক্ষমতা দখলের ১ বছর পেরোলেও মাধ্যমিকে এখনও মেয়ে শিক্ষার্থীরা ফিরতে পারেনি।
কান্দাহারের শিক্ষিকা হানিফা বলেছেন, ‘আমরা ইসলামিক আমিরাতের কাছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার অনুমতি চাই।’
অন্য একজন শিক্ষক নার্গিস বলেন, ‘মেয়েদের শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আফগানিস্তানে নারী ডাক্তার ও প্রকৌশলী প্রয়োজন।’
পরীক্ষা সংগঠক সেদিকুল্লাহ মাসুমি বলেন, ‘আমরা আশা করি যে গ্রামে স্বাস্থ্য খাতের শূন্যতা এই নারীরাই পূরণ করবে।’
আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষামন্ত্রী নুরুল্লাহ মুনির
এদিকে চলতি মাসেই উরুজগান প্রদেশ সফরকালে আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষামন্ত্রী নুরুল্লাহ মুনির দাবি করেছেন, আফগানিস্তানের সাধারণ মানুষই তাদের মেয়েদের স্কুলে পাঠাতে চায় না।
তবে উরুজগানের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, তারা তাদের মেয়েদের স্কুলে পাঠাতে অভ্যস্ত। সরকার অনুমতি দিলেই মেয়েরা স্কুলে যাবে।
গত জুলাইয়ে ইসলামিক আমিরাত আফগানিস্তানের ধর্মীয় পণ্ডিতদের প্রধান শেখ ফকিরুল্লাহ ফাইক বলেছিলেন, ইসলামিক আমিরাতের সর্বোচ্চ নেতা মাওলাবী হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা ষষ্ঠ শ্রেণির ঊর্ধ্বে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুল পুনরায় খোলার বিপক্ষে নন।
ফকিরুল্লাহ ফাইক দাবি করেছিলেন, মেয়েদের স্কুলগুলো পুনরায় খোলায় দেরি হওয়ার একমাত্র কারণ হলো, তালেবান চাচ্ছে পুরুষ ও নারী শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুম আলাদা করতে।