নারীর ‘ছোট পোশাকের’ বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত মানববন্ধন নিয়ে প্রবল সমালোচনা চলছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। কর্মসূচির ব্যানার-ফেস্টুনে ব্যবহৃত স্লোগান নারীর প্রতি প্রচণ্ড অমর্যাদার হিসেবে মন্তব্য করে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন অনেকে।
নরসিংদীর রেলওয়ে স্টেশনে স্লিভলেস টপস পরার কারণে এক নারীকে হেনস্তার অভিযোগে আটক নারীর জামিন শুনানিতে হাইকোর্টের একজন বিচারক পোশাক নিয়ে যে মন্তব্য করেন, তাতে সমর্থন জানিয়ে বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য পাদদেশে ওই মানববন্ধন হয়। এতে ১০-১৫ জন উপস্থিত ছিলেন।
তারা ‘দেশীয় মূল্যবোধবিরোধী সংস্কৃতি গ্রহণযোগ্য নয়’, ‘পোশাকের স্বাধীনতার নামে পাবলিক নুইসেন্স বন্ধ হোক’, ‘ছোট পোশাক নারীকে বিজ্ঞানী বানায় না, পণ্য বানায়’ ইত্যাদি লেখাসংবলিত ফেস্টুন প্রদর্শন করেন।
কর্মসূচির আয়োজকেরা সেদিন দাবি করেছিলেন, মানববন্ধনে উপস্থিত সবাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তবে নিউজবাংলার অনুসন্ধানে দেখা গেছে, কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের লোকজনেরও উপস্থিতি ছিল। এমনকি কর্মসূচিতে ফেস্টুন হাতে এমন ব্যক্তিকে দাঁড় করানো হয়েছে, যিনি প্রতিবাদের বিষয়বস্তুও জানতেন না।
কর্মসূচির আয়োজকেরা এখন অবশ্য স্বীকার করছেন, মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের লোকও ছিলেন। মানববন্ধন শেষে তারা বিষয়টি তারা বুঝতে পারেন।
সেদিন মানববন্ধনের একেবারের শেষ প্রান্তে ফেস্টুন হাতে দাঁড়ানো কালো শার্ট পরা এক তরুণের ছবি ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ওই তরুণের হাতে থাকা ফেস্টুনে লেখা ছিল, ‘ছোট পোশাক পরে বিপরীত লিঙ্গকে সিডিউস করা বন্ধ করুন।’
তবে ওই তরুণের দাবি, তিনি সেদিনের কর্মসূচির বিষয়বস্তু এবং ফেস্টুনের লেখা সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। আয়োজকেরা সেদিন তাকে ডেকে নিয়ে হাতে ফেস্টুন ধরিয়ে দিয়ে ছবি তুলেছেন।
ওই তরুণের নাম মো. ফজলে রাব্বি, তিনি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের ক্যান্টিনে কাজ করেন। ছবি ভাইরাল হওয়ার পর তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ। দায়িত্ব থেকে তাকে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবারের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মো. ফজলে রাব্বি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সেদিন আমার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনে অফিস সহায়ক পদে ইন্টারভিউ ছিল। আমাকে সাক্ষাৎকারের জন্য ডেকেছিল সকাল ১০টায়। সাক্ষাৎকার দিয়ে বের হইছি সাড়ে ১২টায়।
‘ওখান থেকে বের হয়ে টিএসসির দিকে আসার পর দেখি আমাদের টেলিভিশনের বন্ধ হয়ে যাওয়া পত্রিকার একজন সাবেক রিপোর্টার ওখানে রিপোর্ট কাভার করছেন। তিনি আমার পরিচিত। আমি ওনার সঙ্গে কথা বলছিলাম। এ সময় নাঈম নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র দেখি বলছে, ভাইয়া আমাদের সবগুলো ব্যানার ধরার লোক নাই। আপনি যদি একটু হেল্প করতেন তাহলে ফটোগুলো (ছবি) নিতে পারত সবাই।’
এ সময় পরিচিত ওই সাংবাদিকও ফেস্টুন ধরতে ‘উৎসাহ’ দেন বলে দাবি করেন রাব্বি।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি অতটা খেয়াল করি নাই। আমার যিনি পরিচিত ছিলেন তিনিও বলছিলেন, ধরো সমস্যা নাই। আমি ফেস্টুনের দিকে তাকাইও নাই। কী নিয়ে আন্দোলন হচ্ছে, কী নিয়ে তারা দাঁড়াইছে কিছুই জানতাম না। সো আমি ফেস্টুনটা ধরছি। ধরার পর ওরা ফটোগুলো নিছে। এরপর আমার অফিসে রওনা দিছি। আমি ওইসব বিষয়ে আর কিছুই জানি না।’
ছবি তোলার পর রাব্বিকে ধন্যবাদ জানান কর্মসূচির আয়োজকেরা। ফজলে রাব্বি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘উনি (নাঈম) আমার সঙ্গে হ্যান্ডশেক করল। পরে আমার পরিচয় নিল। এর পরে আমার ফোন নম্বর নিল। পরে বলল, ভাই নেক্সট টাইমে কথা হবে। আপনার ফোনে যদি আমাদের কোনো পিক (ছবি) থাকে, হোয়াটসঅ্যাপে দিয়ে দিয়েন।’
রাব্বি দাবি করেন, ফেস্টুন হাতে দাঁড়ানোর পর তার ফোনটি নিয়ে ওই পরিচিত সাংবাদিকও কিছু ছবি তুলে দিয়েছিলেন।
ঘটনার পর রাব্বির কাছে লিখিত জবাব চেয়েছে তার কর্মস্থলের কর্তৃপক্ষ। তিনি বলেন, ‘আপাতত আমার থেকে লিখিত নিছে। আমি কেন গেছি। যে কাজের জন্য গেছি, ওই কাজ শেষ করে কেন অফিসে আসি নাই। অন্য জায়গায় কেন গেছি।’
রাব্বি যে ‘পরিচিত’ সাংবাদিকের কথা বলছেন তার নাম নির্মল কুমার বর্মণ। বর্তমানে তিনি একটি দৈনিকে কর্মরত, পাশাপাশি একটি ফেসবুক পেজও চালান।
নির্মল কুমারের দাবি, তিনি রাব্বিকে ফেস্টুন ধরতে বলেননি, কর্মসূচির আয়োজকেরাই বলে থাকতে পারেন।
সেদিন মানববন্ধন করা গ্রুপের কাউকে চেনেন না দাবি করে নির্মল কুমার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার একটা পেজ আছে। আমি ভিডিও করার জন্য বিভিন্ন জায়গায় যাই। ওই দিক দিয়ে যাওয়ার সময় দেখি ওরা আন্দোলন করছে। এর পরে ওদের ভিডিও নিলাম।
‘রাব্বিকে আমি প্রথমে চিনতে পারি নাই। পরে ও পরিচয় দিলে চিনতে পারি। পরে বলতেছে, একটা ছবি তুলে দেন। আমি তাকে বলি নাই, সে নিজেই ব্যানারসহ দাঁড়াল। আমি ভাবছিলাম হয়তোবা ওদের সঙ্গে রাব্বিও আছে।
‘সে আমায় বলল ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে চাকরির পরীক্ষা দিয়েছে। তাই আমি ভাবলাম ওদের সঙ্গে রাব্বির মনে হয় লিংক আছে। ব্যানার ধরে বলল দাদা একটা ছবি করে দেন। ওখানের যিনি সমন্বয়ক, নামটা এখন ভুলে গেছি তিনি লোক পাচ্ছিলেন না ব্যানার ধরার জন্য। সেই সময় হয়তো তাকে বলেছেন।’
রাব্বি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে শিক্ষার্থীর অনুরোধে ফেস্টুন ধরার কথা বলছেন সেই নাঈমের পুরো নাম নাঈমুল ইসলাম। ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
কবি জসিমউদদীন হলের ছাত্র নাঈম স্বীকার করেছেন, রাব্বিকে তিনি ফেস্টুন ধরার অনুরোধ করেন।
নিউজবাংলাকে নাঈম বলেন, ‘আমি দেখলাম সে (রাব্বি) সেখানে হাঁটাহাঁটি করছে। একপর্যায়ে সে সামনে আসে। পরে আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম আপনি কি দাঁড়াবেন? সে বলে দাঁড়াব।
‘পরে তাকে বলেছি, আমাদের একটা ফেস্টুন খালি পড়ে আছে, আপনি চাইলে দাঁড়াতে পারেন। পরে সে দাঁড়িয়েছে। সে যে ক্যাম্পাসের বা ঢাবিতে পড়ে না সেটা আমার জানা ছিল না। ছবি ভাইরাল হওয়ার পর বুঝতে পেরেছি, এটি আসলে মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং ছিল।’
এই কর্মসূচির সংগঠক মহিউদ্দিন রাহাতও স্বীকার করছেন, কোথাও একটি ভুল হয়েছে।
কর্মসূচিতে বহিরাগতের উপস্থিতি স্বীকার করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাহাত বলেন, ‘এই লোকের (রাব্বি) ব্যাপারে আমি শিউর না। তিনি আমাদের প্রোগ্রামের শুরু থেকে ছিলেন না। মাঝখানে এসেছেন। প্রথমে এসে আমাদের ছবি তুলছিলেন, আর হাঁটাহাঁটি করছিলেন। পরে দেখি প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়েছেন। তখন ভেবেছিলাম হয়তো বিশ্ববিদ্যালয়েরই কেউ।
‘আর যেহেতু দাঁড়িয়ে গেছেন মাঝখানে কিছু বললে যেহেতু দৃষ্টিকটু দেখায় সে জন্য আর কিছু বলিনি।’
রাহাত বলেন, ‘মানববন্ধন শেষে আমি ওনার সঙ্গে কথা বলেছি। উনি নিজেকে একটা মিডিয়ার কর্মী পরিচয় দিয়েছেন। তখন তাকে দাঁড়ানোর কারণ জিজ্ঞেস করেছিলাম। উনি কিছু একটা বলেছেন, সেটা এখন আমার মনে নেই।’
এমন কর্মসূচির পরিকল্পনা কীভাবে হলো
নারীর ‘ছোট’ পোশাকের বিরুদ্ধে মানববন্ধনের পরিকল্পনা হঠাৎ করেই হয়েছে বলে দাবি করছেন আয়োজকেরা।
ঢাবি শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রাহাত নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দেখলাম আদালতের মন্তব্য নিয়ে নিউজ হচ্ছে। এটি নিয়ে কেউ কিছু বলছে না দেখে আমি বন্ধুবান্ধবদের বললাম যে, চল এটা নিয়ে আমরা একটা কাজ করি। গত শুক্রবার (১৯ আগস্ট) আমার মাথায় প্রথম পরিকল্পনাটা আসে। এরপর মঙ্গলবার আমার বন্ধু আরবি বিভাগের মাহমুদুল হাসান জাবিরকে জানাই। সে সাপোর্ট দিলে কাজ শুরু হয়।
‘মানববন্ধনে উপস্থিত সবাই আমার বন্ধু ছিল না। কেউ ছিল আমার জেলার, কেউ আমার বাসের রুটের। আর কেউ আমার বন্ধুদের বন্ধু।’
রাহাত দাবি করেন, ‘এক সাংবাদিকের সহযোগিতায়’ তারা ব্যানার, ফেস্টুনগুলো বাইরে থেকে প্রিন্ট করিয়ে আনেন।
কর্মসূচির আগে প্রচার কৌশল জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রিচ করা কঠিন কিছু না। আমরা কোনো গোঁড়ামির কথা বলিনি। মধ্যপন্থায় থেকে কথাগুলো বলেছি। আমরা মূল্যবোধবিরোধী কিছু চাই না। এটা আমি বন্ধুদের বলেছি। বন্ধুরা তাদের বন্ধুদের বলেছে। তখন সবাই এটা পজিটিভভাবে নিয়েছে।
‘এভাবে সবার সঙ্গে পারসোনালি কথা বলে আমরা প্রোগ্রামের ব্যাপারে জানিয়েছি। যারা আগ্রহ দেখিয়েছে তাদের একটা মেসেঞ্জার গ্রুপে নিয়ে আসি। সেখানে আমরা প্রোগ্রামের তারিখ এবং সময় আর স্থান জানিয়ে দিয়েছি।’
মানববন্ধনকারীদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় আছে কি না- এমন প্রশ্নে রাহাত বলেন, ‘আমাদের এখানে হল থেকেও কয়েকজন এসেছে। তাদের তো ছাত্রলীগ করতে হয়। আর এর বাইরে কারও রাজনৈতিক কোনো পরিচয় ছিল না।’
কর্মসূচিতে ব্যবহৃত স্লোগান নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র সমালোচনা চলছে। এসব স্লোগান কীভাবে ঠিক করা হলো জানতে চাইলে রাহাত বলেন, ‘প্রোগ্রামের আগের দিন অর্থাৎ বুধবারে আমরা এগুলো ঠিক করেছিলাম। চিন্তা করলাম কোন বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলা যায় বা লেখা যায়। পরে যে বিষয়গুলো নিয়ে বললে ভালো হয় বলে মনে হয়েছে, সেগুলোই ঠিক করেছি।
‘স্লোগান ঠিক করার সময় মোটামুটি সবাই উপস্থিত ছিল। এরপর সেগুলো মেসেঞ্জার গ্রুপে দিয়েছি। মেসেঞ্জার গ্রুপে প্রায় সবাই ফেস্টুনের লেখাগুলোর ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছে।’
রাহাতের আক্ষেপ, তাদের কথাগুলো ভুল খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, ‘যেমন বাঙালি সংস্কৃতির কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু আমরা তো সংস্কৃতির কথা বলিনি, আমরা বলেছি দেশীয় মূল্যবোধের কথা। আমাদের মূল্যবোধের সঙ্গে যে জিনিসটি যায় সেই পোশাকের কথা বলেছি।
‘আমরা আমাদের প্রেস রিলিজেও বলেছি, সংস্কৃতি পরিবর্তনশীল। নতুন সংস্কৃতি আসতেই পারে। কিন্তু দেশের মূল্যবোধের ওপর ভিত্তি করে যেকোনো ধরনের শালীন পোশাক চলতে পারে- এটাই ছিল আমাদের মূল বক্তব্য।’
তিনি বলেন, ‘অনেকে বিষয়টি বোরকার দিকে নিয়ে যেতে চাইছে। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে বোরকাটা আরও আপার লেভেলের জিনিস। এটা পোশাক না, পোশাকের আবরণ। এটা আসলে স্বাভাবিক ড্রেসের পর্যায়ে পড়ে না, এটা প্রাইভেসির পর্যায়ে পড়ে। এটা নিয়ে আমরা কিছু বলিনি।’
কর্মসূচির আর্থিক জোগান সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রোগ্রামটা বাস্তবায়ন করতে এক-দেড় হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। এই টাকাটার একটি অংশ আমি দিয়েছি। আরেকটি অংশ আমাদের প্রোগ্রামে উপস্থিত রবিউল করিম ভাই (বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী) দিয়েছে। বাকি টাকার ব্যাপারে বন্ধুদের কিছু সহযোগিতা করতে বলেছি।’
মানববন্ধনে অংশ নেয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহমুদুর রহমান জাবির নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মানববন্ধনের বিষয়ে প্রথম পরিকল্পনা মাথায় আসে রাহাতের মাথায়। সে আমাকে বলেছে, ছোটখাটো মানববন্ধন করা যায় কি না। আমিও সম্মতি দিই। পরে আমাদের বন্ধুবান্ধব এবং কয়েকজন বড় ভাই নিয়ে এর আয়োজন করা হয়। হাইকোর্টকে অভিবাদন জানানোর জন্য আমরা মানববন্ধনটা করেছি।’
যে ঘটনায় এই মানববন্ধন
স্লিভলেস টপ পরা এক তরুণীকে নরসিংদী রেলস্টেশনে হেনস্তার অভিযোগে গ্রেপ্তার মার্জিয়া আক্তার শিলাকে জামিন দেয়ার সময় হাইকোর্টে এক বিচারকের মন্তব্য নিয়ে আলোচনা শুরু হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ১৬ আগস্ট মার্জিয়াকে ছয় মাসের জামিন দেয়।
মার্জিয়ার আইনজীবী মো. কামাল হোসেনের বরাতে কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, শুনানির সময় আদালত দেশের কৃষ্টি, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে তরুণীর পোশাক সংগতিপূর্ণ কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছে। ওই তরুণী যে পোশাক পরেছিলেন, সেটি দেশের সবচেয়ে ‘ফাস্ট এরিয়া’ গুলশান-বনানীতেও কোনো মেয়ে পরে রাস্তায় বের হন না।
সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর তুমুল সমালোচনা হয়। মার্জিয়ার আইনজীবী কামাল হোসেন ১৭ আগস্ট এ বিষয়টি হাইকোর্টের একই বেঞ্চের নজরে এনে সমালোচনাকারীদের শাস্তি দাবি করেন।
এ সময় আদালত ফেসবুকে মন্তব্যকারীদের বিষয়ে আরও সুনির্দিষ্ট তথ্য দিয়ে স্ক্রিনশট জমা দিতে বলে।
পাশাপাশি হাইকোর্ট বেঞ্চটির জ্যেষ্ঠ বিচারক বলেন, ‘আমরা তো আদেশে পোশাক নিয়ে কিছুই লিখেনি, আমরা ভিডিও দেখে আইনজীবীদের কাছে শুধু জানতে চেয়েছি।
‘ভিডিও দেখে রাষ্ট্রের কাছে জানতে চেয়েছি- এমন ড্রেস পরে এমন গ্রাম এলাকায় যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ কি না।’
মার্জিয়াকে হাইকোর্ট জামিন দিলেও পরে তা স্থগিত করে চেম্বার আদালত।