গত আগস্টে তালেবানরা ক্ষমতা দখলের পর আফগানিস্তানের নারীরা শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে বঞ্চিত হতে পারেন বলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছে বিভিন্ন মানবাধিকার ও নারী সংগঠন। এরই মধ্যে তালেবানের নেয়া কয়েকটি সিদ্ধান্তের কারণে গণপরিবহনে চলাচলের ক্ষেত্রে, শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে সংকটে পড়ছে দেশটির নারীরা।
এবার টোলো নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসলামিক আমিরাত আফগানিস্তানের ধর্মীয় পণ্ডিতদের প্রধান শেখ ফকিরুল্লাহ ফাইক বলেছেন, ইসলামিক আমিরাতের সর্বোচ্চ নেতা মাওলাবী হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা ষষ্ঠ শ্রেণির ঊর্ধ্বে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুল পুনরায় খোলার বিপক্ষে নন।
এক বছর হয়ে গেল আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মধ্যে বাস করছি। আর কত দিন অপেক্ষা করতে হবে? কেন আমাদের শিক্ষা কেড়ে নেয়া হয়েছে?
ফকিরুল্লাহ ফাইক বলেছেন, মেয়েদের স্কুলগুলো পুনরায় খোলায় দেরি হওয়ার একমাত্র কারণ হলো তালেবান চাচ্ছে পুরুষ ও নারী শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুম আলাদা করতে।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘শিগগিরই মেয়েদের জন্য স্কুলগুলো আবার চালু হবে। আমাদের সব মন্ত্রী ও নেতারা এ বিষয়ে একমত।’
তালেবানের পক্ষ থেকে এর আগে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার ক্ষেত্রে মেয়েদের অংশগ্রহণ স্থগিত করে দেয়।
ইসলামিক আমিরাত আফগানিস্তানের ধর্মীয় পন্ডিতদের প্রধান শেখ ফকিরুল্লাহ ফাইক
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নারীদের নিরাপত্তা ও উপযুক্ত পরিবেশের অভাব থাকার কারণেই এমন পদক্ষেপ বলে জানায় তালেবান।
এদিকে আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই জাতিসংঘের বিশেষ দূত মার্কাস পটজেলের সঙ্গে এক বৈঠকে ষষ্ঠ শ্রেণির ওপর মেয়েদের স্কুলগুলো পুনরায় চালু করার ওপর জোর দিয়েছেন।
একই সঙ্গে আফগানিস্তানে শান্তি ও স্থিতিশীলতার পথ প্রশস্ত করতে একটি জাতীয় সংলাপ শুরুর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে দেশটির নারী অধিকার কর্মী শাহলা আরেফি বলেন, ‘মেয়েদের স্কুলে যাওয়া আটকানো আফগানিস্তানের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করবে।’
শিগগিরই মেয়েদের জন্য স্কুলগুলো আবার চালু হবে। আমাদের সব মন্ত্রী ও নেতারা এ বিষয়ে একমত।
নারী অধিকার কর্মী মনিসা মুবারিজ বলেন, ‘এক বছর হয়ে গেল আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মধ্যে বাস করছি। আর কত দিন অপেক্ষা করতে হবে? কেন আমাদের শিক্ষা কেড়ে নেয়া হয়েছে?’
এর আগেও শেখ ফকিরুল্লাহ ফাইক মেয়েদের স্কুল বন্ধ করার বিষয়ে তালেবান সরকারের সমালোচনা প্রকাশ করেছিলেন এবং ইসলামী কাঠামোর মধ্যে ষষ্ঠ শ্রেণির ঊর্ধ্বে মহিলা শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুল পুনরায় চালু করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন।