ভারতের এক-তৃতীয়াংশ নারী শারীরিক বা যৌন সহিংসতার শিকার বলে এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
এমন তথ্য উঠে এসেছে দেশটির ‘ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভে রিপোর্ট-৫’-এর প্রতিবেদনে।
ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. মনসুখ মান্ডাভিয়া প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেন।
সেখানে বলা হয়, ভারতের ১৮ থেকে ৪৯ বছর বয়সী ৩০ শতাংশ নারী ১৫ বছর বয়স থেকে শারীরিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন। যদিও ৬ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক নারী তাদের জীবদ্দশায় যৌন সহিংসতার সম্মুখীন হয়েছেন বলে দাবি করেছেন।
সহিংসতার শিকার হলেও মাত্র ১৪ শতাংশ নারী শারীরিক বা যৌন সহিংসতার সম্মুখীন হয়েছেন বলে অন্যদের কাছে তাদের কথা জানান।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গার্হস্থ্যে বা বাসাবাড়িতে সবচেয়ে বেশি সহিংসতার শিকার হয়েছেন কর্ণাটকের নারীরা। তাদের মধ্যে ৮৪ শতাংশ এই গার্হস্থ্য সহিংসতার শিকার হয়েছেন বলে বলেছেন।
এর পরেই রয়েছে বিহার, তেলেঙ্গানা, মণিপুর এবং তামিলনাড়ু।
লাক্ষাদ্বীপে নারীদের বিরুদ্ধে সর্বনিম্ন পরিমাণ গার্হস্থ্য সহিংসতা রয়েছে ২ দশমিক ১ শতাংশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে ৪ শতাংশ পুরুষ পারিবারিক সহিংসতার শিকার হন।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ বিবাহিত নারী যাদের বয়স ১৮-৪৯ বছর, তারা শারীরিক, যৌন বা মানসিক বৈবাহিক সহিংসতার সম্মুখীন হয়েছেন। বৈবাহিক সহিংসতার সবচেয়ে সাধারণ ধরন হলো শারীরিক সহিংসতা, যার পরিমাণ ২৮ শতাংশ, এর পরে মানসিক সহিংসতা এবং নারীদের বিরুদ্ধে যৌন সহিংসতা।
শহরাঞ্চলের নারীদের তুলনায় গ্রামীণ নারীরা বেশি শারীরিক সহিংসতার সম্মুখীন হয়েছে। শহরে এই সহিংসতা ২৪ শতাংশ, গ্রামে ৩২ শতাংশ।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৪০ শতাংশ নারী যারা স্কুলে পড়া শেষ করেন না এবং ১৮ শতাংশ নারী যারা স্কুলে পড়া শেষ করেন তারা শারীরিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন।
নিম্ন আয়ের ৩৯ শতাংশ মহিলা শারীরিক সহিংসতার সম্মুখীন হয়েছেন, যেখানে ১৭ শতাংশ উচ্চ আয়ের নারীরা শারীরিক সহিংসতার সম্মুখীন হয়েছেন।
নারীর প্রতি শারীরিক সহিংসতার ৮০ শতাংশের বেশি ক্ষেত্রে অপরাধী তাদের স্বামীরা।
যে স্বামীরা ১২ বা তার বেশি বছর স্কুলে পড়াশোনা করেছেন তাদের শারীরিক, যৌন বা মানসিক বৈবাহিক সহিংসতার সম্ভাবনা অর্ধেক বা ২১ শতাংশ বলে জরিপে উল্লেখ করা হয়েছে। আর যারা পড়াশোনা করেননি তাদের ক্ষেত্রে এই পরিমাণ ৪৩ শতাংশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, স্বামী-স্ত্রীর শারীরিক বা যৌন সহিংসতার অভিজ্ঞতা স্বামীর অ্যালকোহল সেবনের মাত্রার সঙ্গে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়। ৭০ শতাংশ নারী যাদের স্বামীরা ঘন ঘন অ্যালকোহল পান করেন তারা শারীরিক বা যৌন সহিংসতার সম্মুখীন হয়েছেন। বিপরীতে অ্যালকোহল পান না করা ২৩ শতাংশ নারী স্বামীর দ্বারা সহিংসতার শিকার হন।