বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘আদিবাসী নারী ধর্ষণের মহোৎসব চলছে’

  •    
  • ১৭ আগস্ট, ২০২১ ২০:৩৪

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক খায়রুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আদিবাসীরা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ধরনের নিপীড়ন, ধর্ষণ ও জমি থেকে উচ্ছেদের শিকার হচ্ছে, কিন্তু এর কোনো বিচার হচ্ছে না। আমি মনে করি, আদিবাসীদের যথাযথ অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার লক্ষ্যে স্বতন্ত্র মানবাধিকার কমিশন করা প্রয়োজন।’

সারাদেশে আদিবাসী ধর্ষণের মহোৎসব চলছে বলে অভিযোগ করেছেন আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অলিক মৃ।

তিনি বলেছেন, ‘সারাদেশে এখন আদিবাসী নারী ধর্ষণ করার মহোৎসব চলছে। এসবের কোনো বিচারই হচ্ছে না। কেউ কেউ গ্রেপ্তার হলেও কিছুদিন পরই ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে আমাদের উচ্ছেদের এক গভীর ষড়যন্ত্র চলছে।’

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আদিবাসী নারী নিপীড়ন এবং ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে মঙ্গলবার রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

শেরপুরের শ্রীবরদীতে বন বিভাগ কর্তৃক আদিবাসীদের ফসল কেটে ফেলা এবং সুনামগঞ্জে হাজং নারীর ওপর যৌন নিপীড়নকারীদের শাস্তির দাবিতে এই সমাবেশ আয়োজন করা হয়েছিল।

সমাবেশে অলিক মৃ বলেন, ‘কীভাবে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করা জনগোষ্ঠীর ক্ষতি করা হচ্ছে, সেটি আমরা দেখতে পাচ্ছি। আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র চলছে। ধর্ষণ-নিপীড়নের ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।’

সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. খায়রুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আদিবাসীরা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ধরনের নিপীড়ন, ধর্ষণ ও জমি থেকে উচ্ছেদের শিকার হচ্ছে, কিন্তু এর কোনো বিচার হচ্ছে না। আমি মনে করি, আদিবাসীদের যথাযথ অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার লক্ষ্যে স্বতন্ত্র মানবাধিকার কমিশন করা প্রয়োজন।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আমরা ধর্ষক, নিপীড়ক ও উচ্ছেদকারীর বিরুদ্ধে কথা বলছি। কথা ও প্রতিবাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে এর স্থায়ী সমাধান জরুরি। টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ অঞ্চলে কোনো সরকারি গণভূমি ছিল না। এগুলো সব আদিবাসীদের শ্রমে গড়ে উঠা ভূমি। ৭০ বছরের বেশি সময় ধরে তারা সেখানে বসবাস করে আসছে। সেখান থেকে তাদের উচ্ছেদ করার যে ষড়যন্ত্র চলছে সেটি রুখে দিতে হবে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. জোবাইদা নাসরীন বলেন, ‘আদিবাসীদের ওপর নিপীড়ন, ধর্ষণের কোনো বিচার হয় না। ধর্ষককে গ্রেপ্তার করা হলেও দুদিন পর ছাড়া পেয়ে যায়। এই যে দেশের বিচারহীনতার সংস্কৃতি, খামখেয়ালীপনা আচরণ এবং এক ধরনের এড়িয়ে যাওয়ার মানসিকতার কারণে আজ তাদের প্রতি নিপীড়ন, অত্যাচার, ধর্ষণ এবং উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র চলছে।’

আদিবাসীদের ওপর নিপীড়ন ও ধর্ষণের জন্য দেশের প্রচলিত রাজনৈতিক সংস্কৃতি, আদিবাসী নারীদের প্রতি প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গি এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদী রাজনীতি সমানভাবে দায়ী বলেও মনে করেন এই শিক্ষক।

আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক বাদল হাজংয়ের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠন (বাগাছাস), হাজং ছাত্র সংগঠন, হাজং স্টুডেন্টস কাউন্সিল, খাসিয়া স্টুডেন্টস ইউনিয়ন, বাংলাদেশ ত্রিপুরা স্টুডেন্টস ফোরাম ও আদিবাসী ছাত্র সংগঠনের (নিসাব) নেতাকর্মীরা।

সমাবেশে থেকে সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা পাঁচ দফা দাবি পেশ করেন।

এগুলো হলো শেরপুরের শ্রীবরদি উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্থ গারো আদিবাসী পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়া, সংশ্লিষ্ঠ কাজে জড়িত রেঞ্জ কর্মকর্তা ও বিট অফিসারকে অপসারণ, আদিবাসীদের প্রথাগত ভূমির অধিকার দেয়া, হাজং আদিবাসী নারীর উপর যৌন নিপীড়নকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, মৌলভীবাজারের ডলুছড়া এবং সাহেবটিলার গারো ও খাসিয়া আদিবাসীদের উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র বন্ধ করা এবং সমতল আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠন করা।

এ বিভাগের আরো খবর