যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমবারের মতো শ্বেতাঙ্গ জনগোষ্ঠীর হার কমেছে; নেমে এসেছে ৬০ শতাংশের নিচে। একই সঙ্গে গত এক দশকে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে অশ্বেতাঙ্গদের সংখ্যা।
২০২০ সালের আদমশুমারিতে উঠে এসেছে বিস্ফোরক এ তথ্য।
ইউএস সেনসাস ব্যুরোর বৃহস্পতিবার প্রকাশিত তথ্য বিশ্লেষণ করে জানা যায়, ২০১০ সাল থেকে দেশজুড়ে শ্বেতাঙ্গ জনগোষ্ঠীর হার কমেছে আট দশমিক ছয় শতাংশ।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার ৫৮ শতাংশ নন-হিস্পানিক শ্বেতাঙ্গ। ২০১০ সালে এ হার ছিল প্রায় ৬৪ শতাংশ।
দেশটিতে আদমশুমারির প্রচলন শুরুর পর নন-হিস্পানিক শ্বেতাঙ্গের হার মোট জনসংখ্যার ৬০ শতাংশের নিচে নেমে আসার ঘটনা ইতিহাসে এটাই প্রথম।
অন্যদিকে গত ১০ বছরে হিস্পানিক বা লাতিন বংশোদ্ভূতদের হার বেড়েছে ২৩ শতাংশ, এশীয় বংশোদ্ভূতদের হার বেড়েছে ৩৫ শতাংশ এবং কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানদের হার বেড়েছে পাঁচ দশমিক ছয় শতাংশ।
সেনসাস ব্যুরোর কর্মকর্তা কর্মকর্তা নিকোলাস জোন্স বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যা অতীতের চেয়ে এখন অনেক বেশি জাতিগোষ্ঠীর ও বৈচিত্র্যপূর্ণ।’
যুক্তরাষ্ট্রের আগামী ১০ বছরের রাজনৈতিক মানচিত্র তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করেছেন আইনপ্রণেতারা। সদ্য প্রকাশিত এসব তথ্যের ওপর ভিত্তি করে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদ ও অঙ্গরাজ্যভিত্তিক সব পার্লামেন্ট ও আইনসভায় দেশের ৪৩৫ জেলার একটি মানচিত্র উপস্থাপন করবেন তারা।
২০১০ সালের মতো এ বছরও এ প্রক্রিয়ায় রিপাবলিকান নেতাদের প্রভাব থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। এ মানচিত্রের ভিত্তিতে ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী নির্ধারণ করতে পারে দলটি।
ধারণা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রে জনসংখ্যা বৃদ্ধির পেছনে যেসব সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর ভূমিকা রয়েছে, নতুন মানচিত্রের ফলে সেসব সম্প্রদায়ের রাজনৈতিক অবস্থান আরও দুর্বল হয়ে যেতে পারে।
সেনসাস ব্যুরোর অন্যতম সূচক ডাইভার্সিটি বা বৈচিত্র্যপূর্ণ জাতিগোষ্ঠী। এ সূচকে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বহু সংস্কৃতিভিত্তিক অঙ্গরাজ্যগুলো হলো হাওয়াই, ক্যালিফোর্নিয়া, নেভাদা, টেক্সাস, ম্যারিল্যান্ড, কলাম্বিয়া, নিউজার্সি ও নিউইয়র্ক।
এর মধ্যে টেক্সাসে শ্বেতাঙ্গ ও লাতিন জনগোষ্ঠীর হার প্রায় কাছাকাছি চলে এসেছে। রিপাবলিকান অধ্যুষিত অঙ্গরাজ্যটিতে শ্বেতাঙ্গ জনগোষ্ঠীর হার ৩৯ দশমিক সাত শতাংশ, লাতিন জনগোষ্ঠীর হার ৩৯ দশমিক তিন শতাংশ। উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে মিশ্র বংশোদ্ভূতদের সংখ্যাও।
সামগ্রিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রে গত এক দশকে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার সাত দশমিক চার শতাংশ, দেশটির ইতিহাসে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে ২০০০ থেকে ২০১০ সালে দেশটিতে এ হার ছিল নয় দশমিক সাত শতাংশ।
বর্ধিত জনসংখ্যার অর্ধেকই প্রধান শহরগুলোর বাসিন্দা। বৃহত্তম শহরগুলোর মধ্যে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার সবচেয়ে বেশি ফিনিক্স শহরে। সেখানে এ হার ১১ দশমিক দুই শতাংশ। সবচেয়ে জনবহুল শহর নিউইয়র্কে জনসংখ্যা সাত দশমিক সাত শতাংশ বেড়ে ৮৮ লাখে পৌঁছেছে।