জিম্বাবুয়ের এক গির্জায় সন্তান প্রসবের পর ১৪ বছরের কিশোরীর মৃত্যুতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জাতিসংঘ।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দেশটিতে চলমান বাল্যবিয়ে সংস্কৃতির কঠোর সমালোচনা করেছে সংস্থাটি।
দ্য গার্ডিয়ানের রোববারের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
কিশোরী মৃত্যুর ঘটনা জিম্বাবুয়ের জনগণ ও অধিকারকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দেয়।
জিম্বাবুয়ে সরকারকে বাল্যবিয়ের বিষয়ে খুব একটা মাথা ঘামাতে দেখা যায় না।
দেশটিতে দুই ধরনের বিয়ের চল রয়েছে। একটি ম্যারেজ অ্যাক্ট এবং অন্যটি কাস্টমারি ম্যারেজেস অ্যাক্ট।
ওই দুই আইনের কোনোটিতেই বিয়েতে সম্মতি জানানোর ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন বয়সের উল্লেখ নেই। তার ওপর কাস্টমারি ম্যারেজেস অ্যাক্ট একাধিক বিয়ের অনুমতি দেয়।
আইনগুলো সংশোধন করে ১৮ বছর বয়সের নিচে বিয়ে নিষিদ্ধ করার নতুন এক বিল নিয়ে সম্প্রতি জিম্বাবুয়ের পার্লামেন্টে তর্ক-বিতর্ক হচ্ছে।
অপ্রাপ্তবয়স্ক কাউকে বিয়ে দেয়া হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথাও ওই বিলে বলা হয়।
জাতিসংঘের জিম্বাবুয়ে কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দেশটির পূর্বাঞ্চলে মারাঙ্গ গ্রামের ১৪ বছরের কিশোরী মেমোরি মাচায়ার মৃত্যুর নিন্দা জানাচ্ছি। একই সঙ্গে এ ধরনের ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন।’
বিবৃতিতে জাতিসংঘ আরও বলে, ‘জোর করে বাল্যবিয়েসহ কিশোরীদের ওপর যৌন নির্যাতন এখনও জিম্বাবুয়েতে চলছে। এটি খুবই দুঃখজনক।’
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, জিম্বাবুয়েতে ১৮ বছরের কম বয়সী তিন কিশোরীর একজন বাল্যবিয়ের শিকার।
জিম্বাবুয়ের পুলিশ ও জেন্ডার কমিশন জানায়, মাচায়ার মৃত্যু ও কবর দেয়ার ঘটনা ঘিরে তদন্ত চলছে।
দেশটির স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত মাসে সন্তান প্রসবের পরপরই মাচায়ার মৃত্যু হয়।
গত সপ্তাহে মাচায়াকে কবর দেয়ার সময় তার স্বজনদের নিরাপত্তাকর্মীরা গির্জার ভেতরে ঢুকতে বাধা দেয়।
এতে তারা ক্ষুব্ধ হলে তখনই বিষয়টি প্রথম জানাজানি হয়।
এ বিষয়ে অ্যাপস্টলিক জোহান মারাঙ্গ গির্জা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
জিম্বাবুয়ের অ্যাপস্টলিক গির্জাও বহুবিবাহের স্বীকৃতি দেয়।
মাচায়ার মৃত্যুর ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায় জিম্বাবুয়ের নাগরিকরা।
দেশটির নারীবাদী ও অধিকারকর্মী এভারজয়েস উইন বলেন, ‘কিশোরী এক মেয়েকে জোর করে বিয়ে দেয়া হলো, গর্ভবর্তী করা হলো এবং অবশেষে তার মৃত্যু হলো।
‘এটি নৈতিক বিচ্যুতি নয়? দেশে নারীদের মানুষ হিসেবে গণ্য করা হয় না।’