ইন্দোনেশিয়ার সেনাবাহিনীতে নারীদের নিয়োগের আগে প্রচলিত ‘কুমারিত্ব পরীক্ষা’ বন্ধের ইঙ্গিত দিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল আন্দিকা পেরকাসা।
তার এ পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়েছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা।
দ্য গার্ডিয়ানের শুক্রবারের প্রতিবেদনে জানানো হয়, নারীদের ‘কুমারিত্ব’ পরীক্ষার এ প্রক্রিয়া ইন্দোনেশিয়ায় ‘টু-ফিঙ্গার টেস্ট’ নামে পরিচিত। নারীর যোনিপর্দার মাধ্যমে ‘কুমারিত্ব’ নিশ্চিতে তার যোনিপথে দুই আঙুল প্রবেশ করান চিকিৎসকরা।
পরীক্ষায় কোনো নারী ‘কুমারী নন’ বলে সিদ্ধান্ত এলে সেনাবাহিনীতে তার নিয়োগ বাতিল হয়।
ইন্দোনেশিয়ার সব প্রান্তে দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনা কমান্ডারদের সঙ্গে এক টেলিকনফারেন্সে দেশটির চিফ অফ স্টাফ জেনারেল পেরকাসা ইঙ্গিত দেন, কয়েক দশকের পুরোনো এ চর্চা বন্ধ হবে এবং সেনাবাহিনীতে পুরুষদের মতোই নিয়োগ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে নারীদের।
তিনি বলেন, ‘কাজ সংশ্লিষ্ট ছাড়া অন্য কোনো পরীক্ষা নেয়া হবে না, যেমনটা এখন ঘটছে। পুরুষদের নিয়োগে যেমন পরীক্ষা হয়, নারীদের ক্ষেত্রেও তেমনই হয়। এর অন্যথা মানেই অপ্রাসঙ্গিকতা, যা আমরা করতে পারি না।’
ইন্দোনেশিয়ায় পুরুষ সেনা কর্মকর্তাদের হবু স্ত্রীদেরও অনেক সময় ‘টু-ফিঙ্গার টেস্ট’-এর মাধ্যমে ‘কুমারিত্বের পরীক্ষা’ দিতে হয়।
বিষয়টিকে ‘অপমানজনক, অবৈজ্ঞানিক ও বৈষম্যমূলক’ বলে দীর্ঘদিন ধরেই সমালোচনা করে আসছিলেন মানবাধিকারকর্মীরা।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ইন্দোনেশিয়া গবেষক আন্দ্রিয়াজ হারসোনো মনে করেন, সেনাবাহিনী সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘এ চর্চা ব্যক্তির অধিকার লঙ্ঘনের শামিল। এভাবে কুমারিত্ব পরীক্ষার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তিও নেই।’
ধারণা করা হচ্ছে, সেনাবাহিনীর এ পদক্ষেপ ইন্দোনেশিয়ার নৌ ও বিমানবাহিনীর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।
কবে নাগাদ আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে কিংবা এর বাস্তবায়ন হতে পারে, সে বিষয়টি এখনও অনিশ্চিত। এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি সেনাবাহিনী।
‘কুমারিত্ব পরীক্ষা’র এ চর্চা বন্ধের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন ইন্দোনেশিয়ার সাধারণ নারীরা।