খুব বেশি দিন আগের কথা নয়, যখন ক্যারিয়ার বাছাইয়ের চিন্তা করলে উড়োজাহাজে কাজ করা সবার তলানিতে রাখতেন সৌদি আরবের নারীরা।
এমন নয় যে উড়োজাহাজে ঘুরে দেশ-বিদেশ দেখতে ইচ্ছা করত না তাদের।
ইচ্ছা থাকলেও স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে পারতেন না সৌদি তরুণীরা, কারণ উড়োজাহাজের কাজে পুরুষের ব্যাপক অংশগ্রহণ ও নারীর অংশগ্রহণে সমাজের প্রতিবন্ধকতা।
তবে দেশটির কার্যত নেতা যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস) গত কয়েক বছরে নারীর ক্ষমতায়নসহ বেশ কিছু ক্ষেত্রে সংস্কারকাজ করায় সৌদি নারীরা আকাশ জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন।
ফ্লাইট ক্রু থেকে শুরু করে বিমান চালানো- কোনো ক্ষেত্রেই আজ পিছিয়ে নেই সৌদি নারীরা। তারা এখন পাইলট হওয়ার স্বপ্নে বিভোর।
এরই মধ্যে দেশ-বিদেশে দক্ষতার সঙ্গে বিমান চালাচ্ছেন হানাদি জাকারিয়া আল-হিন্দি, রাউইয়া আল-রিফি, ইয়াসমিন আল-মাইমানির মতো সৌদি নারীরা।
এই নামগুলো সৌদি আরবের অনেক তরুণীর অনুপ্রেরণার উৎস। তাদেরই একজন ১৭ বছর বয়সী আরওয়া নিয়াজি।
সৌদি আরবের কিং আব্দুল আজিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নিয়াজি আরব নিউজকে বলেন, ‘ছেলেবেলায় উড়োজাহাজে ওঠার পর প্রতিবার পাইলটের কেবিনে উঁকি দেয়ার চেষ্টা করতাম।
‘একবার এক জাদুঘরে পাইলটের কেবিনে ঢুকেছিলাম। সেদিনই বুঝতে পারি, পাইলট হওয়াই আমার জীবনের লক্ষ্য।’
পুরুষ সহকর্মীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এখন ফ্লাইট ক্রু হিসেবেও কাজ করছেন সৌদি নারীরা। ওই কাজ তাদের আগে নিষেধ ছিল।
দুই বছর আগে সৌদিয়া এয়ারলাইনসে যোগ দেন ফ্লাইট ক্রু আনহার তাশকান্দি।
তিনি বলেন, ‘যাত্রীদের স্বস্তি দেয়া ও নিরাপত্তাসংক্রান্ত প্রশিক্ষণ আমরা শেষ করেছি। এই চাকরি আমাকে বিভিন্ন দেশ দেখার সুযোগ করে দিয়েছে। একই সঙ্গে অনেক সংস্কৃতিরও স্বাদ পাচ্ছি আমরা।’
ফ্লাইট ক্রু হিসেবে গর্ববোধ করা আশওয়াক নাসির বলেন, ‘আমার ফ্লাইট ক্রু হওয়ার স্বপ্নে বাবা-মা যেভাবে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, তার জন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই।
‘পাশাপাশি এখানে কাজ করার সুযোগ দেয়ার জন্য সৌদিয়া এয়ারলাইনসের কাছেও কৃতজ্ঞ।’
নাসিরের সহকর্মী রেহাম বাহমিশান বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে খুব অবাক হতাম উড়োজাহাজে কোনো নারী ফ্লাইট ক্রু না দেখে।
‘পরে যখন দেখলাম সৌদিয়া এয়ারলাইনস এ পদে নারীদের কাছ থেকে আবেদনপত্র নিচ্ছে, তখন প্রচণ্ড খুশি হই। দেরি না করে আবেদন করে ফেলি।’