শান্তিতে নোবেলজয়ী পাকিস্তানি নারীশিক্ষা কর্মী মালালা ইউসুফজাই বলেন, মেয়ে হিসেবে তিনি ক্রিকেট খেলতে পছন্দ করেন, কিন্তু ছেলেরা তার দিকে দ্রুত বেগে বল করে না, যেমনিভাবে তারা অন্য ছেলে ব্যাটসম্যানের দিকে ফাস্ট বল করে।
মালালা ইনস্টাগ্রামে লেখেন, ‘মেয়ে হিসেবে আমি আমার বন্ধুবান্ধব এবং ভাইদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলতে পছন্দ করি। তবে আমি লক্ষ করেছি, ছেলে বোলাররা আমার দিকে স্লো বল করে। তারা ধরে নেয়, মেয়েরা ফাস্ট বল খেলতে ভয় পায়।’
তিনি বলেন, ‘এমন ছেলেদের প্রতি আমার সরাসরি জবাব হচ্ছে, আমি ছেলে হলে তারা যেমনভাবে ফাস্ট বল করত, তারা যেন আমাকে লক্ষ্য করে তেমনভাবে দ্রুত গতিতে বল করে।’
এ সময় নোবেলজয়ী মালালা খেলাধুলার গুরুত্বের বিষয়ে কথা বলেন। তার মতে, খেলাধুলা তাকে বলিষ্ঠতা ও দৃঢ়তা অর্জনে সহায়তা করে। এমন উদ্যমকে কাজে লাগিয়ে তিনি নারীশিক্ষা ও সমতা প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে আরও বেশি প্রতিযোগী ও সহিষ্ণু হয়ে ওঠেন।
সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের এই তরুণী গত সপ্তাহে ২৪ বছর বয়সী হয়েছেন।
১৯৯৭ সালে পাকিস্তানের মিনগোরায় জন্ম নেয়া মালালা ২০০৮ সাল থেকে নারীশিক্ষার পক্ষে সরব রয়েছেন। সে সময় তালেবানরা সোয়াত জেলায় মেয়েদের স্কুলে যাওয়াকে নিষিদ্ধ করেছিল।
নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও তার গ্রামে মেয়েদের শিক্ষা ও তাদের স্কুলে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে সচেতনতামূলক প্রচার চালানোর অভিযোগে ২০১২ সালে তালেবানরা মালালার ওপর হামলা চালায়। কিশোরী মালালার মুখে গুলি করেছিল তালেবানরা।
মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে পাকিস্তান সরকার মালালার উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে তাকে যুক্তরাজ্যে পাঠায়।
এরপরই অধিকারকর্মী মালালার খ্যাতি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে।
হামলার পর থেকে মালালা যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। তিনি গত বছর অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।
কিশোরী মালালা তখন থেকেই বিশ্ববাসীর নজর কেড়েছিল। তার ওপর চালানো ভয়াবহ সেই হামলা ও মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসার ভয়ানক অভিজ্ঞতার বিষয়ে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমকে অসংখ্য সাক্ষাৎকার দিয়েছেন মালালা। তিনি তার অলাভজনক সংস্থা মালালা ফান্ডের সহ-প্রতিষ্ঠাতাও।