কানাডায় মুসলিম পরিবারের ওপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত ট্রাকচালকের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।
ওন্টারিও প্রদেশের লন্ডন শহরে গত ৬ জুনের ওই হামলায় নিহত হন একই পরিবারের চার সদস্য। বেঁচে যাওয়া একমাত্র সদস্য নয় বছরের ছেলে শিশু গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, ধর্মবিশ্বাসের কারণে বিদ্বেষপ্রসূত হামলা বলে আগেই নিশ্চিত করলেও সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ গঠনে এক সপ্তাহের বেশি সময় নিয়েছে পুলিশ। চারটি হত্যা মামলা ও একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করা হয়েছে আগেই।
লন্ডন পুলিশ সার্ভিস সোমবার বিবৃতিতে জানায়, অভিযুক্ত নাথানিয়েল ভেল্টম্যানের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত ও পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের চারটি ও হত্যাচেষ্টার একটিসহ মোট পাঁচটি মামলা সন্ত্রাসবাদী আইনের অধীনে নেয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক কৌঁসুলিরা তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদবিষয়ক আইনি প্রক্রিয়া শুরুর বিষয়ে সম্মত হয়েছে।
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সোমবার দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে অংশ নেন ২০ বছর বয়সী ভেল্টম্যান। তার আত্মপক্ষ সমর্থন এখনও বাকি আছে।
তার শুনানির পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়েছে আগামী ২১ জুন।
পুলিশ জানিয়েছে, মুসলিম বুঝতে পেরেই রাস্তা পার হওয়ার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা পরিবারটির ওপর নিজের ট্রাক তুলে দেন ভেল্টম্যান। হতাহতদের আগে থেকে চিনতেন না তিনি।
ভেল্টম্যানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে অভিযোগ গঠনের সিদ্ধান্তে সন্তোষ জানিয়েছে কানাডার মুসলিম সম্প্রদায়।
কানাডার উপ-প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড বলেন, ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হিসেবে অভিহিত করতে পারা গুরুত্বপূর্ণ… উগ্র শ্বেতাঙ্গবাদীরা যে কানাডা ও কানাডার সাধারণ মানুষের জীবনে ভয়াবহ হুমকি হয়ে উঠেছেন, সেটা স্বীকার করার বিকল্প নেই।’
অভিবাসীবান্ধব কানাডার সরকারি পরিসংখ্যান সংস্থা চলতি বছরের মার্চে জানায়, ২০১৯ সালে মুসলমানদের ওপর ১৮১টি হামলার ঘটনা নথিবদ্ধ হয়েছে। ২০১৮ সালে এ সংখ্যা ছিল ১৬৬। কেবল ধর্মপরিচয়ের কারণে হামলার শিকার হয়েছেন তারা।
তবে কানাডার ইতিহাসে মুসলমান সম্প্রদায়ের ওপর সবচেয়ে ভয়াবহ হামলাটি হয় ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে। কিউবেকের একটি মসজিদে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ছয়জনকে হত্যা করে ঘাতক।